কুড়িগ্রামে উলিপুরের গুদামে কৃষকের ধান না ঢুকে,ঢুকছে ব্যবসায়ীমহলের ধান
নিজস্ব প্রতিনিধি মঙ্গলবার রাত ০৯:৫৪, ২১ জানুয়ারী, ২০২০
সাজাদুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের উলিপুরে কৃষকদের কাছ থেকে ধান না কিনে ট্রলিতে করে গুদামে ঢোকানো হচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগী ফড়িয়াদের ধান। ফলে সরকারের মহৎ পরিকল্পনা ভেস্তে যেতে বসেছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অবহেলা ও অনিয়মের কারণে। রোববার (১৯ জানুয়ারি) উলিপুর গুদামে ট্রলি-ট্রলি বোঝাই ধান গুদামে ঢোকানোর দৃশ্য সাংবাদিকদের নজরে আসে।
জানা গেছে, সরকার নির্ধারিত মূল্যে কৃষক যেন ভালো মুনাফায় ধান দিতে পারেন সে লক্ষে সারাদেশের মত উলিপুরেও খাদ্য অধিদপ্তর ইউনিয়ন পর্যায়ে গিয়ে লটারীর ব্যবস্থা করলেও এতে কৃষকের ভাগ্যের চাকা ঘুরছে না। লটারীতে বিজয়ী কৃষকদের কাছ থেকে এক টন করে ধান ক্রয় করা হবে। কিন্তু কৃষকের লটারীর টিকিট এক থেকে দেড় হাজার টাকায় কিনে নিচ্ছেন প্রভাবশালী মহলের আর্শিবাদপুষ্ট ফড়িয়া ব্যবসায়ীরা। এতে সহযোগিতা করছেন খাদ্য বিভাগের দুর্নীতি পরায়ণ কর্মকর্তারা। ফলে সরকারের মহৎ উদ্দেশ্য ব্যহত হচ্ছে।
উপজেলা খাদ্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, সারাদেশে ২০ নভেম্বর থেকে আমন ধান সংগ্রহ শুরু হলেও এ উপজেলায় তা শুরু হয় ১৯ ডিসেম্বর থেকে। উপজেলায় সরকারি ভাবে আমন ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ৫শ ৬৪ মেঃ টন। এর বিপরীতে এখন পর্যন্ত ৩৯৯টন ধান সংগ্রহ করা হয়েছে। খাদ্য গুদামের একটি সূত্রে জানা গেছে, প্রভাবশালী মহলের আর্শিবাদপুষ্ট ও গুদাম কর্মকর্তাদের যোগসাজশে মধ্যস্বত্বভোগী ব্যবসায়ীরা পাশ্ববর্তী উপজেলা থেকে ট্রলি বোঝাই ধান এনে গুদামে ঢুকাচ্ছেন। রোববার (১৯ জানুয়ারি) বিকালে উলিপুর খাদ্য গুদামে গিয়ে দেখা যায়, ৮-১০টি ট্রলিতে করে ধান গুদামে ঢুকানো হচ্ছে। এ সময় সেখানে কোন কৃষককে দেখতে পাওয়া যায়নি। ওই সময় সাংবাদিক দেখে মধ্যস্বত্বভোগী ব্যবসায়ীরা বিভিন্নভাবে অনুরোধ করে বুঝানোর চেষ্টা করে, এ ধরনের কাজ আর করবেন না। সেখানে উপস্থিত কয়েকজন ব্যবসায়ী এ ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করেন। খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা আমজাদ হোসেনের কাছে গুদামে ৮-১০টি ট্রলি বোঝাই ধানের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রথমে তিনি বলেন, বিষয়টি আমি জানি না। খোঁজ নিয়ে জানাবো। পরবর্তীতে তিনি মোবাইল ফোনে জানান, ঘটনার সত্যতা পেয়ে ধান বোঝাই ট্রলিগুলো গুদাম থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। ব্যাপারে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা হেমন্ত কুমার বর্মনের মুঠোফোনে বার বার ফোন দেয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।জেলা খাদ্য সংগ্রহ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল কাদের বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।