এবারের ঈদে সড়কে যাত্রীদের ভোগান্তি বাড়বে
নিজস্ব প্রতিনিধি সোমবার ১২:৫০, ১৮ এপ্রিল, ২০২২
এবারের পবিত্র ঈদুল ফিতরে ঈদ করতে প্রায় দ্বিগুণ মানুষ গ্রামের বাড়ি যাবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। ফলে ২৫ রমজান থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত দুপুরের পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত রাজধানী অচল হয়ে থাকতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে সংগঠনটি।
গতকাল রবিবার (১৭ এপ্রিল) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানায় সংগঠনটি।
“ঈদযাত্রায় অসহনীয় যানজট, পথে পথে যাত্রী হয়রানি, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য ও সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধের দাবি” শিরোনামে এই সংবাদ সম্মেলন করে সংগঠনটি। এতে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী লিখিত বক্তব্যে নানা আশঙ্কার কথা তুলে ধরেন।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির বক্তব্যের সঙ্গে একমত প্রকাশ করেছেন বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণাকেন্দ্রের পরিচালক মো. হাদিউজ্জামান। তিনি বলেন,“বর্তমানে দেশে বাসে ৮ লাখ, ব্যক্তিগত গাড়িতে প্রায় ৪ লাখ, মোটরসাইকেলে প্রায় ৪ লাখ, লঞ্চে দেড় লাখ, ট্রেনে ১ লাখ মানুষ ঢাকা ছাড়তে পারবেন। চাহিদা যখন সক্ষমতার বাইরে চলে যাবে তখন সড়ক ব্যবস্থাপনা কোমায় চলে যাবে, ধ্বংস হয়ে যাবে।”
তিনি আরও বলেন,“২০ রমজানের পর থেকে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যাবে। তখন পরিবারের সদস্যরা, যাদের কাজ নেই, তাদেরকে বাড়িতে পাঠিয়ে দিতে হবে। আর যারা কর্মজীবী তারা ছুটি পেলে যাবেন। তাহলে কিছুটা স্বস্তি মিলতে পারে।”
যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী লিখিত বক্তব্যে বলেন,“এবারের ঈদযাত্রায় সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়বে রাজধানীবাসী। তাই এই মুহূর্ত থেকে রাজধানীর সব ফুটপাত, রাস্তা হকার ও অবৈধ পার্কিংমুক্ত করার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে জোর দাবি জানাই।”
মোজাম্মেল হক চৌধুরী আরও বলেন,“রাজধানী থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াতের প্রবেশদ্বারগুলোতে মানুষকে অসহনীয় যানজটে পড়তে হবে। এসব যানজট নিয়ন্ত্রণে রাস্তার মোড় পরিষ্কার রাখা ও ছোট যানবাহন বিশেষ করে রিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক প্রধান সড়কে চলাচল বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান। তা না হলে আগামী ২৫ রমজান থেকে ঈদের দিন পর্যন্ত দুপুরের পর থেকে গভীর রাত অবধি রাজধানী অচল হয়ে যাবে।”
জাতীয় মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে কিছু অসাধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও পরিবহন নেতার চাঁদাবাজি এবং বিভিন্ন টোল পয়েন্টের কারণে যানজট হয় বলে দাবি করেন মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
তিনি বলেন,“প্রতিবছর সড়ক ও নৌপথে ফিটনেসবিহীন যানবাহনে যাত্রী বহন, পণ্যবাহী যানবাহনে যাত্রীবহন, নৌপথে পর্যাপ্ত বয়া-বাতি ও জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম না থাকা, একজন চালককে বিশ্রামহীনভাবে ১০ থেকে ১৫ ঘণ্টা যানবাহন চালাতে বাধ্য করা এবং অদক্ষ চালক দিয়ে আনফিট যানবাহন চালানোর কারণে সড়ক ও নৌদুর্ঘটনা প্রতিবছর ঈদে কয়েকশ যাত্রীর প্রাণহানি ঘটে।”