ঢাকা (রাত ১:৩৯) শনিবার, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং
শিরোনাম

ধর্মপাশায় সাংসদ রতনের বড় ভাই ও ভাতিজার মারধরে শিকার এক ব্যাংক কর্মকর্তা,এক ঘন্টা অবরুদ্ধ



সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়নের পাইকুরাটি নতুন বাজার এলাকায় সোমবার দুপুরে স্থানীয় সাংসদ মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের বড় ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মোশাররফ হোসেন হাজী মাসুদ (৫৮) ও তার ছেলে তানভীর হোসেনে সাগরের (২৪) মারধরে শিকার হয়েছেন বিকাশ রঞ্জন সরকার (৫৫) নামের এক ব্যাংক কর্মকর্তা। এমনকি তাকে একটি ঘরের মধ্যে এক ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। তিনি বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ে পরিদর্শক পদে কর্মরত রয়েছেন।তার বাড়ি ধর্মপাশা উপজেলার সদর ইউনিয়নের ধর্মপাশা গ্রামে।

ধর্মপাশা থানা পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে,উপজেলার সদর ইউনিয়নের ধর্মপাশা গ্রামের বাসিন্দা ব্যাংক কর্মকর্তা বিকাশ রঞ্জন সরকারের উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়নের নতুন বাজারে ১৯শতক জায়গা রয়েছে। এই জায়গার মধ্যে পাঁচশতক তিনি অন্যত্র বিক্রি করেছেন। সোমবার সকাল ১১টার দিকে তিনি পাইকুরাটি নতুন বাজার এলাকায় যান। ওই ব্যাংক কর্মকর্তা লোকজন নিয়োজিত করে তার জায়গার মধ্যে থাকা একটি টিনের ঘর ভাঙতে শুরু করেন। বেলা সোয়া একটার দিকে স্থানীয় সাংসদ মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের বড় ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মোশাররফ হোসেন হাজী মাসুদ (৫৮) পাইকুরাটি নতুন বাজারে যান। এ সময় সেখানে বিকাশ রঞ্জন সরকারকে দেখতে তিনি পাঁচশতক জায়গা বিক্রি করার আগে তাকে না কেন জানানো হয়নি এ নিয়ে বিকাশ রঞ্জন সরকারের কাছে কারণ জানতে চান। দুজনার মধ্যে এ নিয়ে  কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে মোশাররফ হোসেন হাজী মাসুদ ও তার ছেলে সাগর এই  দুজন মিলে বিকাশ রঞ্জন সরকারকে কিলঘুষি মারেন। নিজেকে প্রাণে বাঁচাতে ওই ব্যাংক কর্মকর্তা দৌড়ে গিয়ে পাইকুরাটি নুতন বাজার এলাকার একটি বসত ঘরে আশ্রয় নেন। এ অবস্থায় হাজী মাসুদ ও তার লোকজন ওই বসতঘরের বাইরে অবস্থান নেয় এবং ব্যাংক কর্মর্তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। পরে মারধরে শিকার ব্যাংক কর্মকর্তা মোবাইল ফোনে ধর্মপাশা সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার সুজন চন্দ্র সরকার,ধর্মপাশা থানার ওসি খালেদ চৌধুরী ও ৯৯৯নম্বরে কল করে ঘটনাটি জানান। এক ঘন্টা অবরুদ্ধ থাকার পর পুলিশ বেলা আড়াইটার দিকে থানার ওসি খালেদ চৌধুরী ঘটনাস্থলে গিয়ে বিকাশকে ওই বসত ঘর থেকে ডেকে বাইরে বের করে তাকে মোটরসাইকেল যোগে ধর্মপাশা উপজেলা সদরে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করেন।

ব্যাংক পরিদর্শক বিকাশ রঞ্জন সরকার বলেন,সাংসদ মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে তার আপন বড় ভাই মোশাররফ হোসেন হাজী মাসুদ ও তার ছেলে সাগর মিলে আমাকে কিলঘুষি মেরেছেন।আমাকে একঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে।থানা পুলিশ আমাকে অবরুদ্ধ থেকে উদ্ধার করেছে।আমি এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেব।

সাংসদের বড় ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মোশাররফ হোসেন হাজী মাসুদ বলেন, আমি ও আমার ছেলে মিলে কাউকে মারধর করিনি। আমাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগটি ভিত্তিহীন।

বাদশাগঞ্জ পাবলিক বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মাদ নজরুল ইসলাম বলেন বিকাশ রঞ্জন সরকার আমার পরিচিত ও বন্ধু, স্থানীয় সংসদ মোয়াজ্জেম হোসেন রতন এমপির বড় ভাই হাজী মোশাররফ হোসেন মাসুদ ও তার লোকজন তাকে মারধর করে অবরুদ্ধ করে রেখেছে বলে সে আমাকে ফোন করে জানায় সাথে সাথে আমি মোটরসাইকেল নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই ও বিকাশ রঞ্জন সরকারকে একটি ঘরে অবরুদ্ধ অবস্থায় দেখতে পাই পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করে।

ধর্মপাশা থানার ওসি খালেদ চৌধুরী বলেন, অবরুদ্ধ অবস্থায় কাউকে পাওয়া যায়নি। অবরুদ্ধ থাকা ও মারধর ঘটনা নিয়ে কোনো অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শেয়ার করুন

GloboTroop Icon
পাঠকের মতামত

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর




© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT