১৫টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে বিআইবিএম’র পুরস্কার প্রদান
নিজস্ব প্রতিনিধি মঙ্গলবার রাত ০৩:৪১, ৩০ আগস্ট, ২০২২
সাস্টেইনেবল রেটিংয়ে সবচেয়ে ভালো করা ১০টি ব্যাংক এবং ৫টি নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে (এনবিএফআই) পুরস্কার দিয়েছে বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম)।
পুরস্কার পাওয়া ব্যাংকগুলো হলো- ব্যাংক এশিয়া, ব্র্যাক ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, এনআরবি ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক ও সিটি ব্যাংক। নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে- অগ্রণী এসএমই ফাইন্যান্স, বাংলাদেশ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, বিআইএফএফএল, আইডিএলসি ফাইন্যান্স ও আইপিডিসি ফাইন্যান্স।
রোববার নবম বার্ষিক ব্যাংকিং সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনে; বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলনে ৩০টি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন গবেষকরা।
‘মবিলাইজিং ক্লাইমেট স্মার্ট ইনভেস্টমেন্ট ফর সাস্টেইনেবিলিটি ইন দ্য ব্যাংকিং সেক্টর’ শীষর্ক বিশেষ সেশনের প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইসিসিসিএডি)-এর পরিচালক ড. সলিমুল হক, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাস্টেইনেবল ফিনান্স ডিপার্টমেন্টের পরিচালক খন্দকার মোর্শেদ মিল্লাত, জিআইজেড বাংলাদেশের আইসিআইসিএফ প্রকল্পের প্রিন্সিপাল অ্যাডভাইজর ড. ফেরদৌস আরা হোসেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) উপসচিব এস এম মাহবুব আলম এবং বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লেন্ডিং ডেভেলপমেন্ট (ইইউআইএলডি)-এর সিইও ফেরদৌস আরা বেগম।
খন্দকার মোর্শেদ মিল্লাত বলেন, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে টেকসই ও সবুজ অর্থনীতির অধীনে ঋণ দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট লক্ষ্য দেওয়া থাকে। ৬৮ গ্রিন প্রোডাক্টের অধীনে এসব ঋণ দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি সরাসরি টেকসই বিষয়ের সঙ্গে যুক্ত না হলেও তারা এখন টেকসই জলবায়ু পরিবর্তন নীতি নিয়ে ভাবছেন।
আমরা যদি বাংলাদেশ সরকারের জলবায়ু সম্পর্কিত তহবিলে বরাদ্দের দিকে তাকাই, তবে দেখবো ২৫টি মন্ত্রণালয় মিলে ২০১৯-২০ অর্থবছরে মোট বাজেটের ৬.৮১ শতাংশ বরাদ্দ করেছিল; বলেন ড. ফেরদৌস আরা হোসেন।
তিনি আরও বলেন, পরে ২০২০-২১ অর্থবছরে ৭ শতাংশ এবং সর্বশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে বরাদ্দ ৮ শতাংশ পার করেছে। এই ধারাই প্রমাণ করে বাংলাদেশ সরকার জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বাজেটে বরাদ্দ বাড়িয়েছে।
তিনি মনে করেন, বাংলাদেশের বেসরকারি খাত টেকসই অর্থায়নে ব্যাপক অবদান রাখতে পারে।
নবম ব্যাংকিং সম্মেলনের আয়োজক কমিটির চেয়ারম্যান শাহ মোঃ আহসান হাবিব বলেন, ব্যাংকিং খাতের একার পক্ষে সীমিত সম্পদ দিয়ে অর্থায়ন করা কঠিন। তাই, আমাদের অর্থের বড় একটি অংশ আসতে হবে তাদের কাছ থেকে, যারা সারা পৃথিবীতে জলবায়ু অর্থায়ন নিয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. মোঃ আখতারুজ্জামান বলেন, পরিবেশগত ঝুঁকির দিক থেকে আমাদের অবস্থান সপ্তম, তার মানে আমরা অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছি। সেজন্য আমাদের ক্লাইমেট স্মার্ট ইনভেস্টমেন্ট নিয়ে কাজ করতে হবে।
পরে সন্ধ্যায় বিআইবিএম নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামালের সমাপনী বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শেষ হয় দুই দিনব্যাপী বার্ষিক ব্যাংকিং সম্মেলন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদন, এনার্জি এফিশিয়েন্ট প্রযুক্তির প্রয়োগ, বর্জ্য শোধনাগার স্থাপন ইত্যাদির মতো পরিবেশবান্ধব প্রকল্প প্রতিষ্ঠার প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে, বলেন ডেপুটি গভর্নর।
বাংলাদেশ ব্যাংকও ব্যাংকিং কার্যক্রমের ক্ষেত্রে পূর্ণাঙ্গ ডিজিটালাইজেশনের দিকে নজর দিচ্ছে জনিয়ে তিনি আরও বলেন, এসবের লক্ষ্য হলো একটি কার্যকর, গতিশীল এবং দক্ষ আর্থিক অবকাঠামো তৈরি করা, যা আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে এবং জাতিকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য এবং অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জনে সহায়তা করবে।