মুসলিম গণহত্যা-নির্যাতন ও মসজিদ-মিনারে অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে সিলেটের রাজপথে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল
নিজস্ব প্রতিনিধি শুক্রবার রাত ০৯:০৪, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
মোঃইবাদুর রহমান জাকির,সিলেট প্রতিনিধি: ভারতে মুসলিম বিরোধী নাগরিকত্ব আইন সিএএর’র প্রতিবাদ করায় দেশটির রাজধানীতে হিন্দুত্ববাদীদের সহিংসতা, মুসলিম গণহত্যা-নির্যাতন ও মসজিদ-মিনারে অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল করেছে জমিয়তে উলামায়ে বাংলাদেশ সিলেট মহানগর শাখা।শুক্রবার বাদ জুমআ বন্দরবাজার দলীয় অফিসের সামনে থেকে মিছিল শুরু হয়ে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে সিটি পয়েন্টে গিয়ে পথসভা অনুষ্ঠিত হয়।এসময় বিক্ষুব্ধ ছাত্র জমিয়তের নেতাকর্মী ও মুসলিরা আবু জাহেলের উত্তরসূরী সন্ত্রাসী নরেন্দ্র মোদির কুশপুত্তলিকা দাহ করে তার দুগালে জুতা নিক্ষেপ করেন।বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী হয়ে সন্ত্রাসী মোদী নিরীহ মুসলমানদের উপর হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। নির্বিচারে গুলি করে মারছে। মসজিদ-মাদ্রাসা জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিচ্ছে, মিনারে হনুমানের পতাকা লাগিয়েছে। এসব কাজ বিশ্বের ৪০০ কোটি মুসলমানদের কলিজায় আঘাত দিয়েছে। মুজিববর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে ইসলাম ও মুসলিমবিদ্বেষী নরেন্দ্র মোদিকে বাংলাদেশের জনগণ দেখতে চায় না।মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে মোদি যোগ দিলে এদেশে বদরের যুদ্ধের পূণরাবৃত্তি হবে বলে হুশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, শাপলা চত্তরে রক্ত দিয়েছি, এ রক্তের দাগ এখনও শোকায়নি। প্রয়োজনে মোদি দেশে আসলে আবারও রক্ত দিতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি। তবুও মুসলমানদের উপর কোন ধরণের নির্যাতন সহ্য করবো না।
ভারতের শত শত বছরের ইতিহাস, ঐতিহাসিক স্থাপনা ও ঐতিহ্য-অবদানে মুসলমানদের নাম মিশে আছে এমনটা দাবী করে বক্তারা আরও বলেন, ভারতের ঐতিহাসিক বহু স্থাপত্য মুসলমানদের তৈরি। চাইলেই এসব মুছে দেয়া যায় না। ভারতীয় মুসলমানদের অবদানের কাছে আজ পুরো বিশ্ব ঋণী। বিজেপিসহ কট্টরপন্থী হিন্দু সংগঠনগুলো ভারতকে মুসলিমশূন্য করার জন্য মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর ধারাবাহিক যে নির্যাতন নিপীড়ন চালাচ্ছে তা মোদি ও হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোর পতন ডেকে আনবে।বক্তারা বলেন, ইসলাম সবসময় মানবাধিকার, শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার কথা বলে অমুসলিম সম্প্রদায়কে নিরাপত্তাদানের কথা বলে। আমাদের দেশের মুসলমানগণ বারবার তা প্রমাণ করে দেখিয়েছে। এ দেশে মানবপ্রাচীর তৈরি করে মন্দির পাহারা দেয়ার নজীর আমরা দেখিয়েছি। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা সবচেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে বসবাস করছে। অথচ ভারতে এর উল্টো চিত্র আমরা দেখতে পাচ্ছি। ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায় সবসময় সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু সম্প্রদায় কর্তৃক নির্যাতিত নিপীড়িত হচ্ছে। ভারতের উচিৎ হবে নিজেদের দেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার নিয়ে কাজ করা।জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম সিলেট মহানগর সভাপতি মাওলানা খলিলুর রহমানের সভাপতিত্বে ও ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক মুহাম্মদ লুৎফুর রহমানের পরিচালনায় মিছিল পরবর্তী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সাবেক এমপি এডভোকেট মাওলানা শাহীনুর পাশা চৌধুরী, মহানগর জমিয়তের সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ হাফিজ আব্দুর রহমান সিদ্দিকী, জেলার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আতাউর রহমান, মহানগর সহ-সভাপতি মাওলানা খয়রুল হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাওলানা সৈয়দ শামীম আহমদ, মহানগর সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ সালিম ক্বাসেমী, মহানগর জাতীয় ইমাম সমিতির সভাপতি মাওলানা হাবিব আহমদ শিহাব, যুব জমিয়তের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা আখতারুজ্জামান তালুকদার, মাওলানা সালেহ আহমদ শাহবাগী, হাফিজ কবির আহমদ, মহানগর যুব জমিয়তের সভাপতি মাওলানা কবির আহমদ, মাওলানা মতিউর রহমান, মাওলানা আসাদ উদ্দিন, সৈয়দ ওবায়দুর রহমান প্রমুখ।বিক্ষোভ মিছিলে মোদি বিরোধী স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত ছিল সিলেটের রাজপথ।