ঢাকা (রাত ৮:০৬) মঙ্গলবার, ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

Join Bangladesh Navy


মিলের বর্জ্য ও দূষিত পানিতে মরে যাচ্ছে বিলের মাছ, হুমকির মুখে জনস্বাস্থ্য

ছবিঃ মিরু হাসান বাপ্পী

নিজস্ব প্রতিনিধি নিজস্ব প্রতিনিধি Clock শুক্রবার রাত ০৯:১৮, ২৬ জুন, ২০২০

মিরু হাসান বাপ্পী, আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ বগুড়ার সান্তাহার শহরের বিভিন্ন স্থানে অপরিকল্পিত ভাবে গড়ে তোলা হয়েছে একাধিক অটোরাইস মিলসহ ভারীস্থাপনা। এলাকাবাসীর দাবি, ওইসব মিলের বর্জ্য ও দূষিত পানিতে মরে যাচ্ছে স্থানীয় খাল বিলের দেশী প্রজাতির মাছ। এছারাও ওইসব অটোমেটিক রাইস মিলের দূষিত পানির দুর্গন্ধে হুমকির মুখে পরেছে জনস্বাস্থ্য।

এলাকাবাসীরা জানান, স্থানীয় খারিরপুল এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে বৈশাখী অটোরাইস মিল, কলাবাগান এলাকায় বুশরা মিল, ছাতিয়ানগ্রাম রোডের মৌ, ইছামতি মিল মাছের খাদ্য তৈরীর কারখানাসহ ভারী স্থাপনা নির্মান করা হয়। এতে ওইসব মিলগুলোর বর্জ্যে ও দুশিত পানি স্থানীয় তিয়রপাড়া খালেও রক্তদহ বিলে পরে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ও জলপ্রাণী মরে যাচ্ছে। এছারাও ওইসব অটোমেটিক রাইস মিলের বর্জ্যে ও দূষিত পানির দুর্গন্ধে হুমকির মূখে পরেছে জনস্বাস্থ্য ।

এক সময় আত্রাই, রানীনগর উপজেলার বিলকৃঞ্চনপুর, বদলা,পালশা রাজাপুর গ্রাম, সান্তাহার পার্শ্ববর্তী প্রত্যন্ত কদমা, করজবাড়ী, আমপুরা, মূর্য়রকাশিমালা গ্রামের মানুষের সান্তাহার জংশন শহরে যাতায়াতের একমাত্র পথ ছিল তিয়রপাড়া খাল ও রক্তদহ বিল। সেসময় এই খাল বিলে পাওয়া যেত প্রচুর পরিমান দেশী প্রজাতির সুস্বাদু মাছ।

বিলপারের আশপাশ গ্রামের প্রায় শতাধিক জেলে পরিবার এই খাল বিলে রুই, কাতল, মেগ্রল, বোয়াল, চিতল, মাগুর কানুছ, টেংড়া নুনা, পবদাসহ বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় মাছ শিকার করে এলাকার চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি শত শত মন মাছ দেশের বিভিন্ন জেলা শহর এমনকি রাজধানীতে বিক্রির জন্য নিয়ে যেত। আগে এই ঐতিহ্যবাহী খাল, বিলে মাছ শিকার করে খেতে কানি-জেঠেবগ,পানকৈর, বালিহাঁস, মাছরাঙ্গা, আচ্চোরাসহ বিভিন্ন জাতের অতিথি পাখি উড়ে এসে পড়ত এই বিলে। ওইসব পাখির কলকাকলিতে মূখরিত হয়ে ওঠতো বিল সমূহ এলাকা।

শহরের বিভিন্ন স্থানে অপরিকল্পিত ভাবে অটোরাইস মিলসহ একাধিক ভারি মিলকলকাখানা গড়ে তোলায় এসব মিলের বর্জ্য ও পচা-দূষিত পানি সান্তাহার শহরের একমাত্র তিয়রপাড়া খাল ও এলাকার ঐতিহ্যবাহী রক্তদহ বিলে গিয়ে পরায় এই খাল ও বিলের মাছ মরে যাচ্ছে। ফলে এখন ভরা মৌসুমেও এই বিশাল রক্তদহ বিল ও খালে স্বসাধু দেশী মাছের দেখা না মেলায় বেকার হয়ে পরেছে বিল পারের বোদলা,পালশা, সান্দিড়া, কদমা করোজবাড়ী, কাশিমালা গ্রামের প্রায় ৫শতাধিক জেলে পরিবার।

অন্যদিকে মাছ সংকটের মুখে পড়েছে সান্তাহর জংশন শহর, আদমীঘি উপজেলা সদরসহ ব্যস্ততম ও ব্যবসার প্রাণকেন্দ্র বগুড়া জেলা এবং উত্তরাঞ্চলের বেশকিছু এলাকা। আবার একই কারনে এই বিশাল বিলটিতে আর কোন অতিথি পাখির দেখাও মিলেনা।

এছারাও ওইসব অটোমেটিক রাইস মিলের বর্জ্যে ও দূষিত পানির দুর্গন্ধে হুমকির মূখে পরেছে এলাকার জনস্বাস্থ্য।

এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ কে এম আব্দুল্লাহ বিন রশিদ তীয়রপাড়া খাল ও রক্তদহ বিল পরিদর্শনকালে তিনি বলেন, যেসব মিলের বর্জ্য ও দূষিত পানিতে খাল-বিলের মাছ এবং এলাকার জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়ছে সেইসব মিলকে আইনে আওতায় আনা হবে।

এবিষয়ে সান্তাহার ইউপির চেয়ারম্যান এরশাদুল হক টুলু বলেন, রক্তদহ বিল প্রাচিনতম ঐতিহ্য। এই ঐতিহাসিক বিল এলাকার ইতিহাসের অংশ। কতিপয় স্বার্থন্বেষী ব্যাক্তির কারনে এবং তাদের নির্মিত মিলকরকারখার দূষিত বর্জ্য পানির কারনে হারিয়ে যাচ্ছে এই বিলের মাছ, সৌন্দর্য ও ইতিহাস।




শেয়ার করুন


পাঠকের মতামত

মেঘনা নিউজ-এ যোগ দিন

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর



© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT