ভোলায় গরিবের ঘরভিটা জবর দখল করে ইউএনও, ওসিকে নিয়ে ত্রান বিতরন!
নিজস্ব প্রতিনিধি বৃহস্পতিবার রাত ১০:৩১, ৯ এপ্রিল, ২০২০
ভোলা প্রতিনিধি: ভোলার চরফ্যাসন উপজেলার শশীভূষণ থানা সদর বাজারের মৃত ছেলামত উল্লাহ মাষ্টারের মালিকাধীন ঘরভিটা জবর দখল করে নুরুল ইসলাম বাচ্চু ইউএনও ও ওসিকে নিয়ে লোক দেখানো ত্রান বিতরণ করেন। বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) সকাল ১১টার দিকে শশীভূষণ সদর খাদ্য গুদাম রোড মাছ বাজারে জবর দখলকৃত ঘরভিটায় এই ত্রান বিতরণ করা হয়।
স্থানীয় ঘরভিটা মালিক সূত্রে জানাযায়, শশীভূষণ মৌজায় এস এ ৪৯০/১ ও ৪৯১/১ দাগের ৮০ শতাংশ জমি ক্রয় করে মালিক হন ছিদ্দিক উল্যাহ, আতফাফ হোসেন, বেলায়েত হোসেন ও আজিজ হাজারী। প্রত্যেকে ২০ শতাংশ করে ক্রয়মূত্রে মালিক। কিন্ত বিপত্তিঘটে ১৯৭৪-১৯৭৫ সনের দিয়ারা জরিপে। এই জরিপে ছিদ্দিক উল্যাহ ও আলতাফ হোসেনের নামে জাল জালিয়াতী করে ২০ শতাংশের স্থলে ৩০ শতাংশ করে দিয়ারা রেকর্ড করা হয়।
দু’জনের নামে অতিরিক্ত ২০ শতাংশ জমি রেকর্ড করা হয় এসএ ৫৫৮ দাগে। দিয়ারা রেকর্ড উম্মুক্ত করা হলে বিষয়টি জানাজানি হয় এবং নব্বইর দশকের শেষ দিনে ৫৫৮ দাগের মালিকরা দিয়ারা রেকর্ড সংশোধনের জন্য নিম্ন আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলাটির রায়ের পর ক্ষতিগ্রস্তরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আপীল করেন। জেলা ও দায়রা জজ আদালত নিম্ন আদালতের আদেশ স্থগিত করে মামলাটি পুনঃ বিচারের জন্য নিম্ন আদালতে পাঠান। তারপর ছিদ্দিক উল্যাহ ও আলতাফ হোসেন মামলাটি হাইকোর্টে নিয়ে যান। হাইকোর্ট স্থিতিতাবস্থার আদেশসহ মামলাটি বিচারাধীন আছে।
জানাযায়, কিছুদিন আগে রাতে মৃত ছিদ্দিক উল্যাহর ছেলে নুরুল ইসলাম বাচ্চু নেতৃত্বে একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ছেলামত উল্যাহ মাষ্টার এবং দিল মোহাম্মদ সওদাগরের মালিকানাধীন একটি ট্যানারী আড়ৎ এবং ১টি ক্রোকারিজ সামগ্রীর দোকানে হামলা ভাংচুর ও লুট করে। অস্ত্রের মুখে
হুমকী ধামকী ও মারধর করে দোকানের ব্যবসায়ী ও মালিকপক্ষকে তাড়িয়ে মালামাল লুটের পর দোকানটি ভেঙ্গে সেখানে নতুন করে পাকা ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করেছে। থানা সদর বাজারে এমন তান্ডব কারো কাম্য ছিল না।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঐ দিন থানা সদর বাজারে চরম উত্তেজনা বিরাজ করেছে। যদিও দখল ও উচ্ছেদের এই উতপ্ত পরিস্থিতিতে শশীভূষণ থানা পুলিশ নিরব দর্শকের ভূমিকা নিয়েছে বলে আক্রান্ত পরিবারগুলোর তরফ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা ভাংচুর ও জবর দখলের প্রতিবাদে শশীভূষণ বাজারের ব্যবসায়ীরা বিক্ষোভও করেছেন। যা বিভিন্ন অনলাইন ও পত্রিকায় নিউজ হয়েছে।
বিষয়টি শশীভূষণ থানার ওসি মো. মনিরুল ইসলামকে ঘরভিটা মালিকরা মুখিক ও লিখিত ভাবে একাধিকবার অবহিত করেন বলে জানাযায়। অদৃশ্য কারনে ওসি বিষয়টি পাশ কাটিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।
স্থানীয় ঘরভিটা মালিকরা প্রশ্ন তোলেন সবকিছু জানার পরও ওসি কি করে জবর দখলকৃত ঘরভিটায় ত্রান দিতে আসেন। শশীভূষণ থানার ওসি মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, উপজেলা নিবার্হী অফিসার এসেছেন তাই আমি গিয়েছি।
ঘরভিটা নিয়ে বিরোধ তা আমার জানা নাই। এবিষয়ে চরফ্যাসন উপজেলা নিবার্হী অফিসার মোহাম্মদ রুহুল আমিন বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না, জানা থাকলে ভালো হত। তিনি আরো বলেন, সেখানে গেলেও আমাকে দিয়ে অবৈধ কিছু করানো যাবে না। ঘরভিটার মালিকরা অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।