বেপরোয়া লঞ্চ কর্তৃপক্ষ : সতীত্ব বাচাঁতে “কর্ণফুলি ১৩” লঞ্চ থেকে কিশোরীর নদীতে ঝাপ
কামরুজ্জামান শাহীন, ভোলা সোমবার সকাল ১১:৫৪, ৬ জুলাই, ২০২০
ভোলার চরফ্যাশনের বেতুয়া-ঢাকা নৌরুটে চলাচলকারী কর্ণফুলি-১৩ লঞ্চের ষ্টাফদের যৌন হয়রানি থেকে সতীত্ব বাঁচতে মেঘনা নদীতে ঝাঁপ দেন এক কিশোরী (১৫)।
বরিবার(৫ জুলাই) সন্ধা ৬ টার দিকে তজুমুদ্দিনের মেঘনা নদী এলাকার শশীগঞ্জ স্লুইজঘাট এই ঘটনা ঘটে। সে উপজেলার বিচ্ছিন্ন তেলিয়ার চরের মো. কবিরের মেয়ে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কিশোরী জানান, কাজের সন্ধানে ঢাকায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে তজুমদ্দিন স্লুইজঘাট থেকে কর্ণফুলি-১৩ লঞ্চে ওঠেন। লঞ্চে উঠার পর লঞ্চের ষ্টাফরা ওই কিশোরীকে বিভিন্ন কু-প্রস্তাবের মাধ্যমে যৌন হয়রানি করতে থাকেন। এক পর্যায়ে কিশোরীকে স্টাফরা তাদের সাথে কেবিনে রাত্রি যাপন করতে টানা হেচরা করলে সতীত্ব বাচাঁতে সে নদীতে ঝাঁপ দেন।
কিশোরী আরও জানান, লঞ্চ কর্তৃপক্ষ তাকে উদ্ধার করতে একটি বয়া ফেললেও পানির স্রোতে বয়া ধরতে পরেনি সে। পরবর্তীতে তাকে উদ্ধারে অন্য কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করেই ঢাকার উদ্দেশ্যে চলে যান লঞ্চটি। পরে প্রায় ৩ ঘন্টা পর জেলেরা তাকে উদ্ধার করে তজুমদ্দিন হাসপাতালে ভর্তি করেন। বর্তমানে কিশোরী তজুমদ্দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
কিশোরীকে উদ্ধার করা নৌকার জেলে রায়হান বলেন, সন্ধার সময় আমরা নদীতে মাছ ধরার জন্য নৌকা প্রস্তুত করছিলাম হঠাৎ নদীর মাঝে বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার শুনে আমরা তাকে উদ্ধার করে দেখি মেয়ে। পরে তাকে মিজান তালুকদারসহ অন্যরা হাসপাতালে ভর্তি করেন।
কর্ণফুলি-১৩ লঞ্চের সুপারভাইজার মো. রুবেল বলেন, আমি লঞ্চের উপরে ছিলাম পরে শুনছি লঞ্চ থেকে একজন মহিলা নদীতে লাফ দিয়েছে। তাকে উদ্ধারের জন্য একটি বয়া ফেলছি সে বয়া ধরতে পারেনি। আমরা ঢাকায় চলে যাই পরে কি হয়েছে জানি না।
তজুমদ্দিন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ শামীম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই কিশোরীর সাথে কথা হয়েছে। ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত চলছে, দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কবির সোহেল বলেন, রোগীর ভাষ্যমতে তাকে লঞ্চের স্টাফরা অনৈতিক প্রস্তাব দিলে সে নদীতে ঝাপ দেয়ার সময় ডান হাতে আঘাত পায়। জেলেরা নদী থেকে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে আনলে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হয়। বর্তমানে তার অবস্থা ভালো রয়েছে।