নাগরপুরে নিখোঁজের ১২ দিন পর কলেজ ছাত্রের কঙ্কাল উদ্ধার
মো: শাকিল হোসেন শওকত,নাগরপুর,টাঙ্গাইল রবিবার রাত ০১:৪১, ২১ আগস্ট, ২০২২
১২ দিন পর কলেজ ছাত্রের কঙ্কাল উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। টাঙ্গাইলের নাগরপুরে উপজেলার নঙ্গীনাবাড়ির প্রবাসী মো. হোসেন মিয়ার ছেলে মো. আরিফ (২১) এর ব্যবহৃত জামাকাপড় ও হাড়গোড় উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ৮ আগষ্ট বাড়িতে না ফেরায় পরিবার ১০ আগষ্ট, আরিফ নিখোঁজ এ মর্মে নাগরপুর থানায় সাধারণ ডাইরি (জিডি) করে তারপর পরিবার। খোঁজাখুজির পরও তার কোন সন্ধান না পাওয়ায়, প্রবাসী পিতা ছুটে আসেন দেশে। পিতার বিভিন্ন প্রচেষ্টায় র্যাব ও পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার করে, জানতে পারে নিখোঁজের আগ পর্যন্ত সর্ব শেষ নিহতের চাচা আলহা উদ্দিন ওরফে দারোগ আলীর ছেলে চাচাতো ভাই জাহাঙ্গীর (৩৩) এর সঙ্গে ছিল। এর সূত্র ধরে জাহাঙ্গীরকে জিজ্ঞেসাবাদের এক পর্যায়ে বেরিয়ে আসে আরিফের নিখোঁজের আসল রহস্য।
জাহাঙ্গীরের কথায় পুলিশ জানায়, দুই চাচাতো বেড়ানোর জন্য বাড়ি থেকে আরিফের মোটরসাইকেল নিয়ে বের হয়ে টাঙ্গাইল গিয়ে মোটরসাইকেলের কাগজ তুলে, যায় মানিকগঞ্জ জেলায়। সেখানে জাহাঙ্গীর জুসের সাথে ৪টি ঘুমের ঔষধ মাইলাম ৭.৫ মিলি খাওয়ায় আরিফকে।
অতিমাত্রায় ঘুমের ঔষধের খাওয়াতে সাটুরিয়ার ধামশর ব্রিজের কাছে এসে আরিফের মুখে লালা বের হতে শুরু করে। পরে তাকে ওখানে ফেলে রেখে জাহাঙ্গীর টাঙ্গাইল গিয়ে মোটরসাইকেল বিক্রি করে। আরিফের সাথে থাকা মূল্যবান জিনিসপত্র হাতিয়ে নেয়। বাইক বিক্রি করে ধামশর ব্রিজের কাছে গিয়ে আরিফকে মৃত পায় জাহাঙ্গীর।
তখন থেকেই আরিফের নিখোঁজের বিষয়ে পরিবারকে মনগড়া নানা কথা বলতে থাকে জাহাঙ্গীর। এইসবের এক পর্যায়ে বেরিয়ে আসে আসল রহস্য, থানায় মামলা হয় তার বিরুদ্ধে, গ্রেফতার হয় হত্যাকারী। পরে তাকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরন করে থানা পুলিশ।
উল্লেখ্য, নাগরপুর থানা পুলিশের সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল ১৯ আগষ্ট সন্ধ্যার আগে সাটুরিয়া থানা পুলিশ, আরিফের দেহাবশেষ উদ্ধার করে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারে মাধ্যমে, দেহাবশেষের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টারত।
এ ঘটনায় নাগরপুর থানায় ১৯ আগষ্ট শুক্রবার ৮ নং ক্রমিকে একটি মামলা রুজু হয়েছে এবং একই দিন আসামি জাহাঙ্গীরকে গ্রেফতার করে ২০ আগষ্ট শনিবার বিজ্ঞ আদালতে প্রেরন করেছে থানা পুলিশ।
তবে বিভিন্ন মহলের ধারনা এমন নির্মম হত্যাকান্ডের পেছনে অনলাইনে জুয়ার খেলার বিষয়টি থাকতে পরে।
এ বিষয় নাগরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, তদন্ত ও আইনগত পদক্ষেপ চলমান রয়েছে। আসামিকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরন করা হয়েছে। আসামির কথা অনুযায়ী কঙ্কাল উদ্ধার করেছে সাটুরিয়া থানা পুলিশ। দেহাবশেষের প্রকৃত পরিচয় নিশ্চিত হতে, ডিএনএ পরিক্ষা সহ বিভিন্ন প্রযুক্তির ব্যবহার অব্যহত রয়েছে। আশা করছি সাধারণ ডাইরির তদন্তের ভিত্তিতে আমরা আজ এ পর্যন্ত এসেছি। আমরা দ্রুতই এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সম্পন্ন করতে পারবো।