ধর্মপাশায় ফসলরক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে তলিয়ে গেছে বোরো জমি; কৃষকদের কান্নার হাহাকার
মোবারক হোসাইন,ধর্মপাশা,সুনামগঞ্জ মঙ্গলবার রাত ১১:০৩, ৫ এপ্রিল, ২০২২
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানির প্রবল চাপে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের চন্দ্র সোনার থাল হাওরের ডোবাইল ফসলরক্ষা বাঁধটি ভেঙ্গে গিয়ে ডোবাইল হাওরের ১৮৫ হেক্টর বোরো জমির আধাপাকা ধান পানিতে তলিয়ে গেছে।
আজ মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) বিকেল চারটার দিকে এই ফসল ডুবির ঘটনা ঘটে।
উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে থাকা উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের চন্দ্র সোনার থাল হাওরের ডোবাইল ফসলরক্ষা বাঁধটির দৈর্ঘ্য ৫০০ মিটার, পিআইসি নং ৭৫। বাঁধের এই কাজের জন্য বরাদ্দ নির্ধারণ করা হয় প্রায় ২৩ লাখ টাকা। পিআইসির সভাপতি হলেন নূরুল হুদা ও সদস্য সচিব হলেন সাগর মিয়া। পিআইসিকে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় কিস্তি বাবদ বরাদ্দের শতকরা ৫৭ ভাগ টাকা দেয়া হয়েছে।
গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর এই বাঁধের কাজ শুরু করে তা চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ করা হয়। ডেবাইল ফসলরক্ষা বাঁধের আওতায় ২০০ হেক্টর বোরো জমি রয়েছে। এর মধ্যে ১৫ হেক্টর বোরো জমির আধাপাকা ধান ইতিমধ্যে কাটা হয়েছে।
ওই বাঁধ সংলগ্ন কংস নদীর পানির চাপ আজ মঙ্গলবার বিকাল তিনটার দিকে আশংকাজনক ভাবে বেড়ে যাওয়ায় ওইদিন বিকাল চারটার দিকে বাঁধটি ভেঙে গিয়ে ডোবাইল হাওরে পানি প্রবেশ করতে শুরু করে।
ফলে সেখানে থাকা ১৮৫ হেক্টর বোরো জমির আধাপাকা ধান পানিতে তলিয়ে যায়। কয়েকজন কৃষক অভিযোগ করেন, বাঁধের কাজ যেনতেন ভাবে করা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা নিয়মিত বাঁধের কাজের মনিটরিং করেননি। পিআইসির সভাপতি ,সদস্য সচিব ও পাউবোর কর্মকর্তাদের গাফিলতির কারণেই এই ফসলডুবির ঘটনা ঘটেছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী ও উপজেলা কাবিটা প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং পর্যবেক্ষণ কমিটির সদস্য সচিব মো.ইমরান হোসেন বলেন, যে ভাবে বাঁধের কাজ বাস্তবায়ন করার কথা সেভাবেই কাজ করা হয়েছে। বাঁধের কাজ না পাওয়ায় অনেকেই নানা অপপ্রচার চালাতে পারেন এটা অসম্ভব কিছু নয়। বাঁধটি কংস নদের তীরে অবস্থিত। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানির প্রবল চাপের কারণে এই বাঁধটি ভেঙে গিয়ে ফসলডুবির ঘটনা ঘটেছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএওন) মো.মুনতাসির হাসান বলেন, পাহাড়ি ঢলের পানির চাপ বেড়ে যাওয়ায় এই ফসলডুবির ঘটনা ঘটেছে। এ উপজেলার হাওরের ফসলরক্ষায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবরকম প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।