করোনা যুদ্ধের আরেক সৈনিক গ্রাম পুলিশ
নিজস্ব প্রতিনিধি বুধবার বিকেল ০৫:৫৪, ৬ মে, ২০২০
মোঃ মনিরুজ্জামান, ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ করোনা যুদ্ধের অস্বীকৃত আরেক সৈনিকের নাম গ্রাম পুলিশ। কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে করোনা প্রতিরোধে বিরামহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছেন উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারী। তাদেরকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করছেন উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে নিয়োজিত গ্রামপুলিশ সদস্যরা। কিন্তু ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রী ছাড়াই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছে গ্রামপুলিশ। তারা গ্রামের হাট-বাজার ও পথেঘাটে জনসমাগম এড়াতে মানুষকে সচেতন করছে।
লোকজনের সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকরণ, পাড়া-মহল্লায় রাতজেগে হোম কোয়ারেন্টাইন ও প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন পাহারা দেওয়া ও ইউনিয়ন পর্যায়ে ত্রাণ বিতরণে সহায়তা ছাড়াও বিভিন্নভাবে প্রশাসনকে সহযোগিতা করছে। অথচ তাদের নিজেদেরই করোনা থেকে সুরক্ষার কোনো সামগ্রী নেই। সুরক্ষাসামগ্রী দেওয়া হয়নি গ্রাম পর্যায়ে দায়িত্বপালন করা এসব নিম্ন আয়ের গ্রামপুলিশদের।
গ্রামপুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি সাবান ও একটি সাধারণ মাস্ক পেয়েছে কেউ কেউ। কিন্তু পিপিই পায়নি। সুরক্ষাসামগ্রীর পাশাপাশি স্বাস্থ্য বীমা ও প্রণোদনার দাবি জানিয়েছে তারা। উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে ১০ জন করে গ্রামপুলিশ দায়িত্ব পালন করে। এর মধ্যে দফাদার হচ্ছে তাদের দলনেতা। বাকি ৯ জন মহল্লাদার। গ্রামপুলিশের বেতনের অর্ধেক দেয় সরকার, বাকি অর্ধেক দেওয়া হয় সংশ্নিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ থেকে। তাদের মাঝে মধ্যেই ইউনিয়ন পরিষদ অংশের বেতন বকেয়া থাকে। বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
বাংলাদেশ গ্রাম পুলিশ কর্মচারী ইউনিয়নের উপজেলা সভাপতি ও তিলাই ইউপির গ্রামপুলিশ আনোয়ারুল হক বলেন, করোনা ঝুঁকি নিয়ে আমরা গ্রামে গ্রামে কাজ করছি। কিন্তু আমাদের সুরক্ষাসামগ্রী পিপিই নেই। আমাদেরকে স্বাস্থ্য বীমা ও প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় আনার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছি।
ভূরুঙ্গামারী থানার ওসি আতিয়ার রহমান বলেন, গ্রাম পুলিশদের সুরক্ষা পোশাক হিসেবে বাৎসরিক পোশাকের সাথে রেইনকোট প্রদান করা হয়েছে। আপাতত বরাদ্দকৃত রেইন কোটটি তাদের সুরক্ষা পোশাক হিসাবে বিবেচিত হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফিরুজুল ইসলাম বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদেরকে সুরক্ষা হিসাবে মাস্ক, সাবান, হ্যান্ড গ্লাবস দেওয়া হয়েছে। প্রণোদনার বিষয়টি সরকারি সিদ্ধান্তের ব্যাপার। কোনো নির্দেশনা পেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।