ঢাকা (বিকাল ৪:২৫) শনিবার, ১৬ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
শিরোনাম
Meghna News জাতীয় সংসদে কোনো সংরক্ষিত নারী আসন থাকবে না! Meghna News বিস্ফোরক আইনে প্রধান শিক্ষক শফিক গ্রেফতার Meghna News নাগরপুরে বিডি ক্লিনের উদ্যোগে পরিচ্ছন্নতা অভিযান Meghna News চাঁপাইনবাবগঞ্জে আবারো মারা গেছে মাদ্রাসা ছাত্র Meghna News নেপালে আন্তর্জাতিক অ্যাওয়ার্ডে মনোনীত হলেন নড়াইলের কৃতি সন্তান সোহাগ Meghna News নড়াইল জেলা ব্লাড ব্যাংকের স্বেচ্ছাসেবী মিলনমেলা অনুষ্ঠিত Meghna News বিএনপির সাবেক এমপির’র বিরুদ্ধে হামলা-দখলের অভিযোগে চাঁপাইনবাবগঞ্জে মানববন্ধন Meghna News বিআরডিবি’র নির্বাচনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেন মহিউদ্দিন তালুকদার Meghna News চাঁপাইনবাবগঞ্জে শাশুড়ী হত্যায় অভিযুক্ত টুটুল পলাতক Meghna News গৌরীপুরে কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ৭৬তম জন্মোৎসব পালিত

ইফতার পার্টির আয়োজন না করে গরিব-অসহায়দের দান-খয়রাত করা সমীচীন

ইসলাম ধর্ম ২৩৫৬ বার পঠিত
Donate

মেঘনা নিউজ ডেস্ক মেঘনা নিউজ ডেস্ক Clock রবিবার দুপুর ০১:০১, ২ এপ্রিল, ২০২৩

সহমর্মিতা ও সমবেদনার মাস রমজান। তাই ব্যয়বহুল ইফতারের আয়োজন না করে পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজন, নিকটজন, গরিব–মিসকিন, অসহায়দের ইফতারের বিষয়ে যত্নবান ও সচেতন হওয়া বাঞ্ছনীয়।
রমজানের অতিগুরুত্বপূর্ণ একটি সুন্নাত হলো ইফতার। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘হাদিসে কুদসিতে মহান আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘আমার বান্দাদের মধ্যে তারা আমার বেশি প্রিয়, যারা দ্রুত ইফতার করে (তিরমিজি, আলফিয়্যাতুল হাদিস: ৫৬০, পৃষ্ঠা: ১৩১)।’ নবীজি (সা.) বলেন, ‘যখন রাত সেদিক থেকে ঘনিয়ে আসে ও দিন এদিক থেকে চলে যায় এবং সূর্য ডুবে যায়, তখন রোজাদার ইফতার করবে (বুখারি, সাওম অধ্যায়, হাদিস: ১৮৩০)।’ ইফতারের সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করা উত্তম। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘সে পর্যন্ত দ্বীন ইসলাম বিজয়ী থাকবে, যে পর্যন্ত মানুষ শিগগির ইফতার করবে। কেননা, ইহুদি ও খ্রিষ্টানরা বিলম্বে ইফতার করত (মুসনাদে আহমাদ)।’ হজরত সাহল ইবনে সাআদ (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যত দিন লোকেরা ওয়াক্ত হওয়ামাত্র ইফতার করবে, তত দিন তারা কল্যাণের ওপর থাকবে (বুখারি, সাওম অধ্যায়, হাদিস: ১৮৩৩)।’
মুমিনের জীবনের লক্ষ্য আল্লাহর সন্তুষ্টি। আনুগত্যে আল্লাহ সন্তুষ্ট হন, তাই মুমিনরা ইবাদতে আনন্দ লাভ করেন। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘রোজাদারের জন্য দুটি খুশি—একটি ইফতারের সময়, অপরটি আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাতের সময় (মুসলিম)।’ আল্লাহ তাআলার নির্দেশ, ‘তোমরা সন্ধ্যা (সূর্যাস্ত) পর্যন্ত সিয়াম পূর্ণ করো (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৮৭)।’
ইফতার অর্থ উপবাস ভঞ্জন করা। ভোর থেকে সারা দিন ‘সাওম’ পালন শেষে রোজাদার সূর্যাস্তের পর প্রথম যে পানাহারের মাধ্যমে উপবাস ভঞ্জন করেন, তাকে ‘ইফতার’ বলা হয়। যে খাদ্য বা পানীয় দিয়ে ইফতার করা হয়, তাকে ‘ইফতারি’ বলা হয়। ইফতারের আগেই ইফতারি সামনে নিয়ে অপেক্ষা করা এবং যথাসময়ে ইফতার করা সুন্নাত। ইফতারি সামনে নিয়ে দোয়া করলে সেই দোয়া আল্লাহ কবুল করেন। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রোজাদারের দোয়া আল্লাহর কাছে এতই প্রিয় যে আল্লাহ তাআলা রমজানের সময় ফেরেশতাদের উদ্দেশে ঘোষণা করেন, ‘রমজানে তোমাদের পূর্বের দায়িত্ব মওকুফ করা হলো এবং নতুন দায়িত্বের আদেশ করা হলো, তা হলো আমার রোজাদার বান্দারা যখন কোনো দোয়া মোনাজাত করবে, তখন তোমরা আমিন! আমিন!! বলতে থাকবে (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক)।’
সহমর্মিতা ও সমবেদনার মাস রমজান। তাই ব্যয়বহুল বাহারি ইফতারের আয়োজন না করে পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজন, নিকটজন, গরিব–মিসকিন, অসহায়দের ইফতারের বিষয়ে যত্নবান ও সচেতন হওয়া বাঞ্ছনীয়।
খেজুর দিয়ে ইফতার করা সুন্নাত
যেকোনো ফল দিয়ে ইফতার করলেও সুন্নাত আদায় হবে। মিষ্টান্ন দিয়ে ইফতার করলেও সুন্নাত পালন হবে। যদি তা–ও সম্ভবপর না হয়, তাহলে যেকোনো হালাল খাদ্যবস্তু, এমনকি শুধু পানি দিয়েও ইফতার করা যায়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ রোজা রাখলে খেজুর দিয়ে যেন ইফতার করে, খেজুর না হলে পানি দিয়ে; নিশ্চয় পানি পবিত্র (তিরমিজি ও আবু দাউদ, আলফিয়্যাতুল হাদিস: ৫৬২, পৃষ্ঠা: ১৩১-১৩২)।’ পানিমিশ্রিত দুধ দিয়ে ইফতার করার কথাও বর্ণিত আছে। মাগরিবের নামাজের আগে ইফতার করা মুস্তাহাব বা উত্তম।
ইফতারের সময় দোয়া কবুল হয়।
কোরআন–হাদিসে উল্লেখ রয়েছে, এমন দোয়া উত্তম। এ ছাড়া নিজের ভাষায় নিজের মতো দোয়া করা যায়। ইফতারের আগে এ দোয়া পড়া সুন্নাত, ‘আল্লাহুম্মা লাকা ছুমতু ওয়া আলা রিজকিকা আফতারতু’। অর্থ: হে আল্লাহ! আপনার জন্য আমি রোজা রেখেছি, আপনার রিজিক দিয়ে ইফতার করছি (আবু দাউদ, সাওম অধ্যায়)। বিভিন্ন কিতাবে আরও বিভিন্ন দোয়াও রয়েছে, সেসব দোয়াও পড়া যায়। ইফতারের আগে এ দোয়া পড়তে হয়, ‘ইয়া ওয়াছিআল ফাদলি, ইগফির লি।’ অর্থ: হে ক্ষমা প্রদানকারী! আমাকে মার্জনা করুন (ইবনে মাজাহ)।
ইফতার মাহফিল ও ইফতার পার্টির বর্তমান অবস্থা।
এখন ইফতার মাহফিল ও ইফতার পাটি যে বা যারা করে বেশির ভাগই দেখা যায় তাদের মুলত সওয়াবের লক্ষ্য উদ্দেশ্য নেই, কারণ দেখা যায় তাদের দুনিয়ার ফায়দা হাসিলের জন্য ও চাঁদা কালেকশনের জন্য বেশির ভাগই এ-ই অবস্থা, ইফতারের সময় নিয়ম হলো একজন আলিম ছাহেবকে দাওয়াত দিয়ে প্রোগ্রামে এনে ইফতারের আগ মুহূর্ত ইফতারের ফজিলত ও মাহে রামাদ্বানের ফজিলত সম্পর্কে আলোচনা ও দোয়া করানো, কিন্তু বর্তমানে দেখা যায় দোয়া করার সময়ই থাকেনা আজান হয়ে যায়, অতিথিদের বক্তব্য শেষ হয় না দোয়া কবুলের সময় তারা তাদের সম্মানিত অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ করেন যাদেরকে ওরা বক্তব্য প্রধান কালে নিজের ব্যক্তি ইমেজের কথা ও রাজনীতি কথা বার্তা বেশির ভাগই বলে থাকেন, আল্লাহ পাক যেন আমাদের সকলকে এধরণের কাজ থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন।
সহমর্মিতা ও সমবেদনার মাস রমজান। তাই ব্যয়বহুল বাহারি ইফতারের আয়োজন না করে পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজন, নিকটজন, গরিব–মিসকিন, অসহায়দের ইফতারের বিষয়ে যত্নবান ও সচেতন হওয়া বাঞ্ছনীয়।
ইফতার করা যেমন ফজিলতের, ইফতার করানোও তেমনি বরকতের। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে, তার গুনাহ মাফ হয়ে যাবে, সে জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভ করবে এবং রোজাদারের সওয়াবের সমপরিমাণ সওয়াব সে লাভ করবে। তবে ওই রোজাদারের সওয়াব কম করা হবে না।’
সাহাবায়ে কিরাম বললেন, ‘ইয়া রাসুলুল্লাহ (সা.)! আমাদের অনেকেরই রোজাদারকে ইফতার করানোর সামর্থ্য নেই।’ রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘পানিমিশ্রিত এক পেয়ালা দুধ বা একটি খেজুর অথবা এক ঢোঁক পানি দিয়েও যদি কেউ কোনো রোজাদারকে ইফতার করায়, তাতেও সেই পরিমাণ সওয়াব পাবে। আর যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে তৃপ্তিসহকারে আহার করাবে, আল্লাহ তাআলা তাকে হাউজে কাউসার থেকে এমন পানীয় পান করাবেন, যাতে সে জান্নাতে প্রবেশ করার আগপর্যন্ত তৃষ্ণার্ত হবে না (মুসনাদে আহমাদ)।’
সহমর্মিতা ও সমবেদনার মাস রমজান। তাই ব্যয়বহুল বাহারি ইফতারের আয়োজন না করে পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজন, নিকটজন, গরিব–মিসকিন, অসহায়দের ইফতারের বিষয়ে যত্নবান ও সচেতন হওয়া বাঞ্ছনীয়। পথশিশু, ছিন্নমূল ও পথিকদের ইফতারের ব্যবস্থা করাও কর্তব্য। বর্তমান পরিস্থিতিতে ইফতার মাহফিল ও ইফতার পার্টির আয়োজন না করে গরিব–অসহায়দের দান–খয়রাত করা সমীচীন।
ইফতার ও সাহ্‌রিতে প্রয়োজন স্বাস্থ্যসম্মত হালাল খাবার। কারণ, হালাল খাদ্য ও হালাল উপার্জন রোজা, নামাজ ও যাবতীয় ইবাদত কবুলের পূর্বশর্ত। তাই ইফতার ও সাহ্‌রিতে বৈধ উপার্জনের হালাল খাবার জরুরি। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা যেন উপরোক্ত আলোচনার প্রতি বিশ্বের মুসলিম উম্মাহকে গুরুত্ব সহকারে আমল করার তাওফিক দান করেন আমীন।
লেখক: বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ লেখক ও কলামিস্ট হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী।



শেয়ার করুন

GloboTroop Icon
পাঠকের মতামত

মেঘনা নিউজ-এ যোগ দিন

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর



© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT