পদ্মার ভাঙনের মুখে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
এস এম সাখাওয়াত জামিল দোলন শুক্রবার রাত ১১:৪২, ১৪ জুলাই, ২০২৩
চলতি মৌসুমে উজানের ঢল আর আষাঢ়ের বর্ষণে চাঁপাইনবাবগঞ্জের পদ্মা নদীতে বাড়ছে পানি। এতে দিন দিন আগ্রাসী হয়ে উঠছে পদ্মা। চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার মধ্য দিয়ে ভারতের গঙ্গা নদী বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে পদ্মা নাম নিয়ে। ইতোমধ্যে এই পদ্মা নদীর চাঁপাইনবাবগঞ্জ অংশ রয়েছে ভাঙনের ঝুঁকিতে। যার মধ্যে রয়েছে একটি কলেজ ও একটি মাদ্রাসা। কলেজটি নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নেয়ার জন্য পুরোদমে কাজ চলছে। আর কয়েক দিনের মধ্যেই শুরু হবে মাদ্রাসার ভবন ভাঙ্গার কাজ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সদর উপজেলার নারায়ণপুর এলাকায় পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি শুরু হয়েছে। এতে করে জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের চরপাঁকা ঈদগাহ থেকে সদর উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের ছাব্বিশ রশিয়া পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে নদী ভাঙ্গন শুরু হওয়ায় পদ্মা পারের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ নদী ভাঙ্গন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। ইতোমধ্যে চারপাঁকার তেরো রশিয়া গ্রামের শতাধিক বাসিন্দা নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে ভিটামাটি হারিয়ে বিশ রশিয়ার নামোচর এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন।
এদিকে সদর উপজেলার নারায়ণপুর এলাকায় পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধির কারণে ওই এলাকায় অবস্থিত নারায়নপুর আদর্শ মহাবিদ্যালয় সরিয়ে নেয়ার কাজ শুরু হয়েছে। অন্যদিকে নারায়ণপুর দারুল হুদা আলিম মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ কয়েক দিনের মধ্যেই ভবন ভাঙ্গার কাজ শুরু করবে বলে জানিয়েছে।
এ বিষয়ে আদর্শ মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ জানান, নদী ভাঙ্গনের ঝুঁকি থেকে বাঁচাতে কলেজটি ধুলাউড়ি এলাকা থেকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নেয়ার কাজ শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে দরপত্র আহ্বান করে কলেজের কিছু কিছু সরঞ্জামাদি বিক্রির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রায় ৫০০ মিটার দূরে বাগান পাড়া এলাকায় কলেজটি অস্থায়ীভাবে স্থাপন করে কার্যক্রম শুরু করা হবে।
এদিকে নারায়ণপুর দারুল হুদা আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ জানান, নদী ভাঙ্গনের তীব্রতা বাড়ছে। আর এই নদী ভাঙ্গনের ঝুঁকিতে রয়েছে আমাদের মাদ্রাসা। যা সরিয়ে নেয়ার কার্যক্রম শুরু করা হবে খুব শীঘ্রই। এ নিয়ে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে কয়েক দফা আলোচনা করা হয়েছে। ৪৫০ জন শিক্ষার্থীসহ প্রতিষ্ঠানটি ধুলাউড়ি ঘাট এলাকা থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে ঈদগাহ পাড়ায় স্থানান্তর করার খসড়া সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে নারায়ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের তথ্যসেবা কর্মকর্তা স্বপন আলী জানান, কৃষকের আবাদি জমি, বসতবাড়ি সবই নদীতে বিলীন হওয়ার পথে। ওই এলাকার নদীপারের বাসিন্দারা ভাঙ্গন আতঙ্কে দিন পার করছেন। অতি দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে একটি জনপদ ধ্বংস হয়ে যেতে পারে।
তবে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. ময়েজ উদ্দিন জানান, পাঁকা ও নারায়ণপুর ইউনিয়নের ভাঙ্গন প্রতিরোধে প্রায় ৩ মাস আগে ৯ কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছিল। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা অর্থ মন্ত্রণালয়ে এই প্রকল্পের কাগজপত্র দাখিল করেছেন। প্রকল্পটি এখনও অনুমোদন পায়নি। অনুমোদন পেলে পদ্মা নদীর তীরে জিও ব্যাগ ও জিও টিউব দিয়ে ভাঙ্গন রোধে প্রস্তাবিত প্রকল্পের ৯ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে বলে জানান পাউবোর এই কর্মকর্তা।