চিকিৎসক জামিলা খাতুনের বাসা থেকে কিশোরীর লাশ উদ্ধার
ইবাদুর রহমান জাকের,সিলেট শনিবার রাত ০৯:০০, ৩১ অক্টোবর, ২০২০
সিলেট নগরীর আখালিয়া এলাকায় গাইনি চিকিৎসক জামিলা খাতুনের বাসা থেকে কিশোরী গৃহপরিচারিকার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শনিবার (৩১ অক্টোবর) দুপুর ১টার দিকে আখালিয়া সুরমা আবাসিক এলাকার ৪ নং গলির ৪৩ নং বাসা থেকে ওই কিশোরীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত কিশোরী জান্নাত আক্তার লিনা (১৪) সিলেট কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বতুমারা গ্রামের আবদুল মালিকের কন্যা।
এদিকে লিনাকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করছে তার পরিবার। তবে গাইনী চিকিৎসক জামিলা বলছেন, এটি আত্মহত্যা।
জানা গেছে, জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগের প্রধান ডাক্তার জামিলা খাতুনের বাসায় কাজ করছিল জান্নাত আক্তার লিনা। প্রায় ৮ বছর ধরে তার বাসায় পড়ালেখার পাশাপাশি গৃহপরিচারিকা হিসেবে কাজ করতো।
আজ শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ডাক্তার জামিলা খাতুন বাসা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর সকাল সাড়ে ১০টায় তাঁর মেডিকেল পড়ুয়া কন্যা তাঁকে ফোন করে বলেন, লিনা ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়েছে। পরে ঘরের আরও কাজের লোক ও ডা. জামিলার মেয়ে মিলে লিনার দেহ নিচে নামান। বিষয়টি জেনে সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তার জামিলা খাতুন পুলিশকে খবর দেন এবং তিনিও বাসায় চলে আসেন।
পরে সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানার একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দুপুর ১টার দিকে লাশ উদ্ধার করে।
এদিকে জান্নাত আক্তার লিনার পরিবারের অভিযোগ- লিনাকে মারধর করা হয়েছে। পরে সে মারা গেলে আত্মহত্যা বলে দাবি করছেন ডাক্তার জামিলা ও তার পরিবারের সদস্যরা। লিনার ভাই আল-আমীন বলেন, আমার বোনের গলায় চিহ্ন আছে আঘাতের। ঘরের কাজে একটু ভুল হলেই তারা মারধর করতো আমার বোনকে, এমন অভিযোগ আগে অনেকবার দিয়েছে আমার বোন। তাছাড়া ডাক্তার জামিলার ছোট ছেলে খুব বেশি অত্যাচার করতো আমার বোনকে।
আল-আমিন বলেন, আজ সকাল ১১টার দিকে তারা আমাদেরকে ফোন করে বলে আত্মহত্যা করেছে লিনা। সে কখনই এমন কাজ করবে না। তাকে হত্যাই করা হয়েছে। এ হত্যার বিচার চাই আমরা। আমরা দায়ের করবো মামলা।
এ ব্যাপারে ডাক্তার জামিলা খাতুনকে বলেন, আমার সন্তানের মতোই স্নেহ করতাম লিনাকে। তার খালাও আমার বাসায় কাজ করে। সে বলতে পারবে আমার পরিবারের সবাই কত স্নেহ করতো লিনাকে।
তিনি বলেন, আজ ফজরের নামাজ পরে ওষুধ খেয়ে ঘুমাবার পর ঘুম ভাঙতে একটু দেরি হয়ে যায়। লিনাই আমাকে ডেকে তুলে দেয়। অফিসের টিফিন রেডি করে যাবার সময় বাসার গেইট খুলে দিয়ে বিদায় দেয় লিনা। অফিসের আসার পর হঠাৎ সাড়ে ১০টার দিকে আমার মেয়ে ফোন করে জানায় লিনা গলায় ফাঁস দিয়েছে। তৎক্ষণাৎ পুলিশে খবর দেই আমি। তবে পুলিশ যাওয়ার আগে আমার মেয়ে ও বাসার অন্যান্যরা নামিয়ে নেয় লিনার দেহ। তবে কী কারণে সে আত্মহত্যা করতে পারে সেটি বুঝতে পারছি না।
সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সেলিম মিয়া মিঞা বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ দুপুর একটার দিকে উদ্ধার করে লাশ। ওর গলার নিচ আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে এটি আত্মহত্যাই। তবে ময়নাতদন্তের পর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।