ঢাকা (দুপুর ১২:৫৯) বৃহস্পতিবার, ১৪ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
শিরোনাম
Meghna News সিলেট টিটিসি থেকে ২২ বছর পর বদলী : মালিক হলেন লাল লাখ টাকার! Meghna News গৌরীপুরে হুমায়ূন আহমেদের নামে ক্যান্সার হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার দাবী ভক্তদের Meghna News সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সম্পদের অনুসন্ধানে নেমেছে দুদক Meghna News চাঁপাইনবাবগঞ্জে বালু বোঝাই ট্রাক্টরের ধাক্কায় শিশু নিহত, চালক আটক Meghna News ভোলার চরফ্যাশনে মোটরসাইকেল-নসিমন সংঘর্ষে দুই বন্ধু নিহত Meghna News যুবলীগ নেতার নেতৃত্বে ভাই-ভাতিজাকে কুপিয়ে যখম Meghna News চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে ৮ কোটি টাকার ভারতীয় অলংকারসহ আটক-১ Meghna News দক্ষিণ সুরমা আলমপুর ফায়ার সার্ভিসের বাসায় বাসায় অগ্নি-নির্বাপনী-মহড়া Meghna News সিলেটের গোলাপগঞ্জ লক্ষণাবন্দ ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার Meghna News দাউদকান্দিতে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু

পিতা মাতাকে অসন্তুষ্ট করার পরিণাম!

নিজস্ব প্রতিনিধি নিজস্ব প্রতিনিধি Clock সোমবার বিকেল ০৪:২১, ১৪ জুন, ২০২১

ইমাম তাবরানী ও ইমাম আহমাদ একটি ঘটনা বর্ণনা করেছেন। রাসুল (সাঃ) এর যুগে হযরত আলকামা নামে মদীনায় এক সাহাবী  বাস করতেন। উনি নামায, রোযা ও সদকার মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার ইবাদাত বন্দেগীতে অতিশয় অধ্যবসায় সহকারে লিপ্ত থাকতেন। একবার উনি কঠিন রোগে আক্রান্ত হলেন। তার স্ত্রী রাসুল (সাঃ) এর কাছে খবর পাঠালেন যে, “আমার সামী আলকামা মুমূর্ষ অবস্থায় আছে । হে রাসুল, আমি আপনাকে তার অবস্থা জানানো জরুরী মনে করেছি।” রাসুল (সাঃ) তৎক্ষণাত হযরত আম্মার, সুহাইব ও বিলাল (রাঃ) কে তার কাছে পাঠালেন। তাদেরকে বলে দিলেন যে, “তোমরা তার কাছে গিয়ে তাকে কলেমায়ে শাহাদাৎ পড়াও।” তারা গিয়ে দেখলেন, আলকামা মুমূর্ষ অবস্থায় রয়েছে।

তাই তারা তাকে “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু” পড়াতে চেষ্টা করতে লাগলেন । কিন্তু সে কোন মতেই কলেমা উচ্চারণ করতে পারছিল না। অগত্যা তারা রাসুল (সাঃ) কে খবর পাঠালেন যে, আলকামার মুখে কলেমা উচ্চারিত হচ্ছে না । যে ব্যক্তি এই সংবাদ নিয়ে গিয়েছিলেন, তার কাছে রাসুল (সাঃ) জিজ্ঞাসা করলেনঃ “আলকামার পিতামাতার মধ্যে কেউ কি জীবিত আছে?” সে বললোঃ “হে রাসুল, তার কেবল বৃদ্ধা মা বেচে আছে।” রাসুল (সাঃ) তৎক্ষনাত তাকে আলকামার মায়ের কাছে পাঠালেন এবং বললেনঃ “তাকে গিয়ে বল যে, তুমি যদি রাসুল (সাঃ) এর কাছে যেতে পার তবে চল, নচেত অপেক্ষা কর, তিনি তোমার সাথে সাক্ষাত করতে আসছেন।” দূত আলকামার মায়ের কাছে উপস্থিত হয়ে রাসুল (সাঃ) যা বলেছিলেন যা বলেছিলেন তা জানালে আলকামার মা বললেনঃ “রাসুল (সাঃ) এর জন্য আমার প্রাণ উৎসর্গ হোক। তার কাছে বরং আমিই যাবো।” বৃদ্ধা লাঠি ভর দিয়ে রাসুল (সাঃ) এর কাছে এসে সালাম করলেন । রাসুল (সাঃ) সালামের জবাব দিয়ে বললেনঃ “ওহে আলকামার মা, আমাকে আপনি সত্য কথা বলবেন।

আর যদি মিথ্যা বলেন, তবে আল্লাহর কাছ থেকে আমার কাছে ওহি আসবে । বলুন তো, আপনার ছেলে আলকামার স্বভাব চরিত্র কেমন ছিল?” বৃদ্ধা বললেনঃ “হে আল্লাহর রাসুল, সে প্রচুর পরিমাণে নামায, রোযা ও সদকা আদায় করতো ।” রাসুল (সাঃ) বললেনঃ তার প্রতি আপনার মনোভাব কী? বৃদ্ধা বললেনঃ “হে আল্লাহর রাসুল, আমি তার প্রতি অসন্তুষ্ট ।” রাসুল (সাঃ) বললেন, “কেন?” বৃদ্ধা বললেনঃ “সে তার স্ত্রীকে আমার ওপর অগ্রাধিকার দিত এবং আমার আদেশ অমান্য করতো ।” রাসুল (সাঃ) বললেনঃ “আলকামার মায়ের অসন্তোষ হেতু কলেমা উচ্চারণে আলকামার জিহবা আড়ষ্ট হয়ে গেছে ।” তারপর রাসুল (সাঃ) বললেনঃ “হে বিলাল, যাও, আমার জন্য প্রচুর পরিমাণে কাষ্ঠ যোগাড় করে নিয়ে এসো।

বৃদ্ধা বললেনঃ “হে আল্লাহর রসুল, কাষ্ঠ দিয়ে কি করবেন?” রাসুল (সাঃ) বললেনঃ “আমি ওকে আপনার সামনেই আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেব।” বৃদ্ধা বললেনঃ “হে আল্লাহর রাসুল । আমার সামনেই আমার ছেলেকে আগুন দিয়ে পোড়াবেন । তা আমি সহ্য করতে পারবো না ।” রাসুল (সাঃ) বললেনঃ “ওহে আলকামার মা, আল্লাহর আযাব এর চেয়েও কঠোর এবং দীর্ঘস্থায়ী। এখন আপনি যদি চান যে, আল্লাহ আপনার ছেলেকে মাফ করে দিক, তাহলে তাকে আপনি মাফ করে দিন এবং তার ওপর সন্তুষ্ট হয়ে যান। নচেত যে আল্লাহর হাতে আমার প্রাণ তার কসম, যতক্ষণ আপনি তার ওপর অসন্তুষ্ট থাকবেন, ততক্ষণ নামায-রোযা ও সদকা দিয়ে আলকামার কোন লাভ হবে না।

একথা শুনে আলকামার মা বললেনঃ “হে আল্লাহর রাসুল, আমি আল্লাহকে, আল্লাহর ফেরেশতাদেরকে এবং এখানে যে সকল মুসলমান উপস্থিত, তাদের সকলকে সাক্ষী রেখে বলছি যে, আমি আমার ছেলে আলকামার ওপর সন্তুষ্ট হয়ে গিয়েছি ।” রাসুল (সাঃ) বললেনঃ “ওহে বিলাল, এবার আলকামার কাছে যাও। দেখ, সে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলতে পারে কি না । কেননা আমার মনে হয়, আলকামার মা আমার কাছে কোন লাজলজ্জা না রেখে যথারথ কথাই বলেছে।” হযরত বিলাল (রাঃ) তৎক্ষনাত গেলেন। শুনতে পেলেন, ঘরের ভেতর থেকে আলকামা উচ্চসরে উচ্চারণ করছে “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ”। অতঃপর বিলাল গৃহে প্রবেশ করে উপস্থিত জনতাকে বললেনঃ শুনে রাখ, আলকামার মা অসন্তুষ্ট থাকার কারণে সে প্রথমে কালেমা উচ্চারণ করতে পারে নি।

পরে তিনি সন্তুষ্ট হয়ে যাওয়ায় তার জিহবা কালেমা উচ্চারণে সক্ষম হয়েছে । অতঃপর আলকামা সেই দিনই মারা যান এবং রাসুল (সাঃ) নিজে উপস্থিত হয়ে তার গোসল ও কাফনের নির্দেশ দেন, জানাজার নামায পড়ান এবং দাফনে শরীক হন। অতঃপর তার কবরে দাঁড়িয়ে রাসুল (সাঃ) বলেনঃ “হে আনসার ও মুহাজেরগণ! যে ব্যক্তি মায়ের ওপর স্ত্রীকে অগ্রাধিকার দেয় তার ওপর আল্লাহ, ফেরেশতাগণ ও সকল মানুষের অভিসম্পাত! আল্লাহ তার পক্ষে কোন সুপারিশ কবুল করবেন না। কেবল তওবা করে ও মায়ের প্রতি সদব্যবহার করে তাকে সন্তুষ্ট করলেই নিস্তার পাওয়া যাবে। মনে রাখবে, মায়ের সন্তুষ্টিতেই আল্লাহর সন্তোষ এবং মায়ের অসন্তোষেই আল্লাহর অসন্তোষ।

মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে পিতা মাতাকে সন্তুষ্ট করার তৌফিক দান করুন আল্লাহুম্মা আমিন।

লেখকঃ- বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ লেখক ও কলামিস্ট হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী ছাহেব।




শেয়ার করুন

GloboTroop Icon
পাঠকের মতামত

মেঘনা নিউজ-এ যোগ দিন

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর



© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT