পাকিস্তান এখনো পূর্বের ন্যায় বর্বরই রয়ে গেছে-বিএসএএফ
মোবারক হোসাইন,ধর্মপাশা(সুনামগঞ্জ) শুক্রবার রাত ১১:০৫, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১ (শুক্রবার) সকালে বাংলাদেশ সোস্যাল অ্যাক্টিভিস্ট ফোরাম(বিএসএএফ) এর উদ্যোগে সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক মুফতী মাসুম বিল্লাহ নাফিয়ী’র সভাপতিত্বে পাকিস্তানের বেলুচ, গিলগিস্তান ও সিন্ধুসহ বিভিন্ন প্রদেশে পাকিস্তান সেনাবাহিনী কর্তৃক ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর নৃশংস নির্যাতন-নিপীড়নসহ গণহত্যা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদে পথ সভা ও র্যালী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
পথ সভা ও র্যালীতে উপস্থিত ছিলেন ক্যান্টনমেন্ট মুসলিম মর্ডান একাডেমীর সিনিয়র ধর্মীয় শিক্ষক মাওলানা ফজলে রব্বী মোঃ ফরহাদ, ক্বারী মাওলানা আসাদুজ্জামান, বাংলাদেশ সোস্যাল অ্যাক্টিভিস্ট ফোরামের সমন্বয়ক- শেখ জনি ইসলাম, মুফতী ক্বারী আব্দুল মজিদ পঞ্চগরী, মোঃ মিজানুর রহমান এশিয়া, সাংবাদিক মুজাহিদুল ইসলাম, মান্নান হাই স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক মোঃ মাহফুজুল ইসলাম, আব্দুস সালাম সরকার, নাফি উদ্দিন উদয় ও শাফি উদ্দিন বিনয় প্রমুখ।
পথ সভায় বক্তরা বলেন, মানুষ হত্যা করা কখনোই কোন সভ্যতার সূচক হতে পারে না। কোন ধর্মই মানুষ হত্যাকে সমর্থন দেয় না। অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য পাকিস্তান এখনো পূর্বের ন্যায় বর্ববরই রয়ে গেছে। নিরীহ বাঙ্গালির উপর একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধে যে গণহত্যা সংগঠিত করেছিল তার জন্য তারা আজও বাঙ্গালির কাছে ক্ষমাও চায়নি দুঃখও প্রকাশ করেনি। অথচ সময়ের বাঁকে বাঁকে বিশ্বের বহু দেশে ঘটে যাওয়া বা সংগঠিত হওয়া বহু হত্যাকাণ্ডের জন্য বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন রাষ্ট্রের কাছে দুঃখ/অনুতপ্তসহ ক্ষমা চাওয়ার দৃষ্টান্ত আছে। যুগের শ্রোতের তরঙ্গে বিশ্বের বহু দেশ মানবিকতায় রাষ্ট্রের পরিবর্তন এনেছে। জাতির মধ্যেও লেগেছে সভ্যতার ছোঁয়া। পাকিস্তানে সে সভ্যতার ছোঁয়াও লাগেনি পরিবর্তনও আসেনি। শুধু তাই নয় পাকিস্তান বিশ্ব শান্তি, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্বের ক্ষেত্রেও বড় ধরণের বাঁধা।
পাকিস্তান মূলত অভিশপ্ত দেশ। লক্ষ লক্ষ মানুষকে তারা হত্যা করেছে। পাকিস্তান সেনারা এখনও প্রতিনিয়ত বেলুচ, সিন্ধু ও গিলগিস্তান প্রদেশসহ বিভিন্ন প্রদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর চালিয়ে যাচ্ছে নির্মম, নৃশংস নির্যাতন-নিপীড়ন ও গণহত্যার মত জঘন্যতম মানবতাবিরোধী তাণ্ডব। বলা যায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের লীলাভূমিতে পরিণত হয়েছে পাকিস্তান। এছাড়াও জঙ্গি উৎপাদনের প্রজনন কেন্দ্রও রয়েছে দেশটিতে। পাকিস্তান সেনাদের এহেন বর্বরোচিত হিংস্র কাণ্ডের জন্য বিশ্বের সকল গণতান্ত্রিক ও মানবিক দেশগুলো দেশটির সাথে তাদের কূটনৈতিক এবং বাণিজ্যিক সম্পর্ক সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়া উচিৎ। কেননা পাকিস্তানের আকাশে লাশ আর লাশের প্রতিচ্ছবি বাতাসে রয়েছে পঁচা লাশের দুর্গন্ধ। চারদিকে নিরহ নারী-শিশুর আর্তচিৎকার।
এসময় বক্তারা বলেন, সরকার ও সেনাবাহিনী নিয়ে আল-জাজিরা ভিত্তিহীন বিভ্রান্তিকর মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার যে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। তার মধ্যে পাকিস্তানের পৃষ্ঠপোষকতা ও গভীর চক্রান্ত আছে বলে আমরা মনে করি। কেননা ইতিপূর্বে আল-জাজিরার সাথে পাকিস্তানের উগ্রবাদী জঙ্গীদের যে আত্মিক ও আদর্শিক সম্পর্ক আছে তা বিশ্ব জঙ্গী বিশেষজ্ঞদের মতামতে এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বহুবার প্রকাশ পেয়েছে। এছাড়াও ৪৯ বছরে পাকিস্তানের চেয়েও বাংলাদেশের অগ্রগতি-উন্নয়ন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, গণতান্ত্রিক ধারায় সরকারের পালাবদল ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে কঠিন অবস্থান এবং বঙ্গকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ব মানবতার “মা” হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ এসমস্ত চক্রান্তের কারণ হতে পারে। বাংলাদেশে বহু রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠনও পাকিস্তানের পৃষ্ঠপোষকতায় চলে। সুতরাং জঙ্গিবাদী সাম্প্রদায়িক আগ্রাসন ও আল-জাজিরার মত মিডিয়ার মিথ্যাচার থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষা এবং উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সরকার এসমস্ত সংগঠনগুলোকে চিহ্নিত করে কালক্ষেপন নয় দ্রুত নিষিদ্ধ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার।
সভাপতির বক্তব্যে মুফতী মাসুম বিল্লাহ নাফিয়ী বলেন, যারা ৬৩ বছরেও সভ্য জাতি হিসেবে বিশ্বের দরবারে নিজেদেরকে আত্মপ্রকাশ করতে পারেনি। আগামীতেও যে পারবে এর কোন ধরণের সম্ভাবনা আছে এমন কোন আলামতও তাদের মধ্যে দৃশ্যমান নয়। তাদের যে পশুত্ব আচরণ বাস্তবিক অর্থে আমরা তো দুরের কথা বিশ্বের কোন সুচিন্তিত মানুষও তা বিশ্বাস করবে বলে মনে হয়না। আমরা বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ মানবিকতার দায়বোধ থেকে পাকিস্তান সরকার ও সেনাবাহিনী কর্তৃক যেসকল প্রদেশে এখনো গণহত্যাসহ নারী-শিশুকে নৃশংস নির্যাতন-নিপীড়ন ও মানবতাবিরোধীযজ্ঞ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের অবাধ লীলা চলছে তা বন্ধ করার জন্য পথ সভা থেকে জোর দাবী করছি। এছাড়াও তিনি আন্তর্জাতিক আদালতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের মত জঘন্য অপরাধ সংগঠিত করা এবং জঙ্গী তৎপরতার দায়ে পাকিস্তানের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের জোর দাবি জানানোসহ পাকিস্তানের প্রতি ধিক্কার ও তীব্র ঘৃণা জানান।