ধর্মপাশায় ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করলেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক
মোবারক হোসাইন,ধর্মপাশা,সুনামগঞ্জ মঙ্গলবার রাত ০১:৫৮, ১১ জানুয়ারী, ২০২২
সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের ঘুলুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রটি পরিদর্শন করেছেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো.জাহাঙ্গীর হোসেন।
সোমবার দুপুরে তিনি এই ভোট কেন্দ্রটি পরিদর্শন করেন। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন সুনামগঞ্জের জেলা পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান , সুনামগঞ্জ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুরাদ উদ্দিন হাওলাদার, ধর্মপাশার ইউএনও মো.মুনতাসির হাসান, সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো.রেদুয়ানুল হালিম, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো.মোক্তার হোসেন, ধর্মপাশা থানার ওসি মো.খালেদ চৌধুরী, সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা ভারপ্রাপ্ত উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা আল মাহমুদ হাছান প্রমুখ।
ধর্মপাশা থানা পুলিশ,ঘুলুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে গত ৫জানুয়ারি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করেন।
৫ জানুয়ারির ফলাফলে ওই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী চশমা প্রতীক নিয়ে মোকাররম হোসেন ২২৬১ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সেলিম রাজা চৌধুরী পেয়েছিলেন ২২০৮ভোট।
ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠানের চারদিন পর রবিবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে ঘুলুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইফুর রহমানসহ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মিলে বিদ্যালয়টির বিভিন্ন কক্ষ পরিস্কার করতে থাকেন। এ সময় প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়ের আলমীরার এক কোনে তিনটি খামের ভেতরে চেয়ারম্যান পদের সিলমারা ব্যালট পেপার দেখতে পান। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি প্রধান শিক্ষক ইউএনও মো.মুনতাসির হাসানকে মোবাইল ফোনে বিষয়টি অবগত করেন। ইউএনও বেলা পৌনে দুইটার দিকে ওই ভোট কেন্দ্রটিতে সরোজমিনে উপস্থিত হয়ে এসব ব্যালট পেপারগুলো উদ্ধার করেন। পরে ইউএনওর উপস্থিতিতে প্রধান শিক্ষক সাইফুর রহমান ওই ভোট কেন্দ্রটির দায়িত্বে থাকা প্রিজাইডিং কর্মকর্তা তপন কান্তি তালুকদারের কাছে উদ্ধার হওয়া এসব ব্যালট পেপারগুলো হস্তান্তর করেন।
খবর পেয়ে ওইদিন বিকেল তিনটার দিকে ওই ইউনিয়নের শত শত মানুষ ভোটকেন্দ্রটির চারদিকে এসে সমবেত হয়। মানুষজনদের দাবির প্রেক্ষিতে উদ্ধার হওয়া ওই তিনটি খামের ভেতরে থাকা ব্যালট পেপারগুলো গণনা করতে বাধ্য হন বাদশাগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও ভোট কেন্দ্রটির দায়িত্বে থাকা প্রিজাইডিং কর্মকর্তা তপন কান্তি তালুকদার। ভোট গণনা শেষে দেখা যায়, চশমা প্রতীকের প্রার্থী মোকারকম হোসেন পেয়েছেন ৩৪৯ভোট,নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সেলিম রাজা চৌধুরী পেয়েছেন ২৬৪ভোট ও স্বতন্ত্র প্রার্থী জুনায়েদ চৌধুরী ঘোড়া প্রতীকে নিয়ে পেয়েছেন ৫৯ভোট। আর বাতিলকৃত ভোটের সংখ্যা ছিল ১৩৭টি।
অথচ ৫জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ঘুলুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রটিতে চশমা প্রতীকের প্রার্থী মোকাররম হোসেন পেয়েছিলেন ৪৮৬ভোট, নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সেলিম রাজা চৌধুরী ২৬৪ভোট ও ঘোড়া প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী জুনায়েদ চৌধুরী পেয়েছিলেন ৫৯ভোট।
বাদশাগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও ঘুলুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রিজাইডিং কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা তপন কান্তি তালুকদার বলেন, আমি ৫জানুয়ারি সঠিকভাবে ভোট গণনা করেছিলাম। কিভাবে ব্যালট পেপারগুলো ওই কেন্দ্রটিতে থেকে গিয়েছিল বুঝে উঠতে পারছি না। গণনাও সঠিক ছিল এখন কী ভাবে কী হলো তা ভেবে পাচ্ছি না।
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো.জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, যেহেতু ইউপি নির্বাচন ভোটের ফলাফল ৫জানুয়ারি রাতেই ঘোষণা করা হয়েছে। তাই এ নিয়ে এখন আমাদের দিক থেকে কিছুই করার নেই। আইনি প্রক্রিয়া ছাড়া এ বিষয়টির সমাধান সম্ভব নয়।