গৌরীপুরে কিশোর-কিশোরী ক্লাবের নাস্তা নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ
ওবায়দুর রহমান,গৌরীপুর,ময়মনসিংহ সোমবার রাত ১১:৪৬, ২৫ জুলাই, ২০২২
ময়মনসিংহের গৌরীপুরে কিশোর-কিশোরী ক্লাবে নাস্তা বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও ক্লাবের স্টেশনারি মালামাল বিতরণে অনিয়ম ও অনিয়মিত ক্লাস নেয়ার অভিযোগ আছে।
উপজেলায় ১১ টি কিশোর-কিশোরী ক্লাব রয়েছে। প্রত্যেক ক্লাবে শিক্ষার্থী রয়েছে ৩০ জন। প্রতি শিক্ষার্থীর নাস্তার জন্য বরাদ্দ ৩০ টাকা। অভিযোগ আছে ৩০ টাকার পরিবর্তে ১৫ টাকার মধ্যে নাস্তা বিতরণ করে বাকি টাকা চলে যাচ্ছে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার পকেটে। এদিকে জুলাই মাস থেকে নাস্তার জন্য বরাদ্দ ৩০ টাকার পরিবর্তে ১৫ টাকা করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
গত (২৪ জুলাই) ক্লাবের অনিয়ম নিয়ে আহাম্মেদ হোসেন নামে এক ব্যক্তি উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ডৌহাখলা ইউনিয়নে কিশোর-কিশোরী ক্লাবে আবৃত্তি শিক্ষক হারুন অর রশিদ ও সঙ্গীত শিক্ষক হিসাবে আছে তার ছেলে অনিরুদ্ধ শুভ। শুভ অনুপস্থিত থাকায় তার বাবা হারুন ছেলের প্রক্সি দিচ্ছেন। সিধলা ইউনিয়নে সঙ্গীত শিক্ষক প্রিয়াঙ্কা চৌহান বিয়ের পর তার পরিচিত শিক্ষককে দিয়ে ক্লাস করান। জেন্ডার প্রমোটর ঝুমা দেবনাথ ক্লাব পরিদর্শন করেন না। অপর জেন্ডার প্রমোটর প্রমা রানী বিয়ের পর শ্বশুর বাড়িতে আছেন।
হারুন অর রশিদ বলেন, কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে প্রক্সি দেয়া হচ্ছে। আমরা নাস্তা বিতরণ করিনা। এটা কর্তৃপক্ষ করে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিটি ক্লাবে সপ্তাহে দুই দিন ক্লাস নেয়ার পরিবর্তে নেয়া হচ্ছে একদিন। ক্লাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ১২ থেকে ১৫ জন। নাস্তা হিসাবে দেয়া বিস্কুটের মূল্য ১২ থেকে ১৫ টাকার বেশি নয়। কখনো কখনো দেয়া হয় কলা। শিক্ষার্থীরা জানান এপ্রিল ও জুলাই মাসে তারা কোন নাস্তা পায়নি। মে ও জুন মাসে পেয়েছে দুই দিন করে। এর আগে জানুয়ারি মাস থেকে স্বল্পমূল্যের নাস্তা দেয়া হয়েছে।
এদিকে গত জানুয়ারি মাসে স্টেশনারি মালামাল কেনার জন্য প্রত্যেক ক্লাবের বিপরীতে ৩ হাজার টাকা করে বরাদ্দ আসে। ওই টাকায় কোন পণ্য কেনা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। ক্লাবের সদস্যদের জন্য আনা মার্শাল আর্টের পোশাক মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ে পড়ে আছে। অপরদিকে ক্লাবের শিক্ষার্থীদের জন্য ক্যারাম বোর্ড, লুডু, দাবা ও অন্যান্য সামগ্রী বাক্সবন্দি হয়ে পড়ে আছে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়ে।
অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সুলতানা বেগম আকন্দ বলেন, শিক্ষকদের প্রক্সি দেয়ার নিয়ম আছে। নাস্তা ৩০ টাকার দেয়া হয়েছে। এপ্রিল মাসের নাস্তার টাকা মে মাসে সমন্বয় করা হয়েছে। জুলাই মাসে নাস্তার বরাদ্দ ২৫ জুলাই এসেছে। এটা দেয়া হবে। শিক্ষক না থাকায় মার্শাল আর্টের মালামাল বিতরণ করা হয়নি। স্টেশনারি সামগ্রী হিসাবে জগ, মগ ও ডায়েরি দেয়া হয়েছে। কেউ অনিয়ম করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ইউএনও হাসান মারুফ বলেন, অনিয়মের বিষয়টি শুনেছি। লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।