গুঞ্জন যদি সত্যি হয় কুমিল্লা- ১ আসনে বিএনপির প্রার্থী হবেন ড. মারুফ হোসেন

হোসাইন মোহাম্মদ দিদার
মঙ্গলবার বিকেল ০৫:২৪, ১৭ জুন, ২০২৫
গেল বছরের ৫ ই আগষ্ট পতিত সরকারের দেশেত্যাগের পর রাজনৈতিক ময়দানে সারাদেশে আমূল পরিবর্তন আসে। গা ঢাকা দেয় আওয়ামী লীগ, ফ্রন্ট লাইনে চলে আসে বিএনপি। আওয়ামী সরকার জনরোষে পড়ে ক্ষমতা হারানোর পর দলটি কোণঠাসা হয়ে পড়ে। কারণ ইতিমধ্যে দলটির রাজনৈতিক বিভিন্ন সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে অন্তবর্তীকালীন সরকার। দেশের বাইরে পালিয়ে গেছে অনেক শীর্ষ নেতা। এছাড়াও ইমেজ সংকটে রয়েছে দলটি। এদিকে ১৭ বছরের দমনপীড়ন,অত্যাচার, খরর্গ কাটিয়ে জনগণের আস্থা অর্জনে মাঠে রয়েছে বিএনপির সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। বিগত দশমাসে দৃশ্যমান রাজনৈতিক বিভিন্ন সভাসমাবেশে অংশগ্রহণ করে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় এসেছে কুমিল্লা-১ আসনের সাবেক সাংসদ, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সদস্য সাবেক প্রভাবশালী মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের কনিষ্ঠ পুত্র বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মারুফ হোসেন।
তিনি রাজনীতিতে প্রবেশ করেন ১ যুগেরও আগে। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে আজ তার অবস্থান অনেক অনুকূল পথে। কন্টাকীর্ণ পথ আজ মসৃণ।
বিগত দিনে আন্দোলন সংগ্রামে তার নেতৃত্ব ছিল চোখে পড়ার মতো।
তবে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বিএনপির প্রভাবশালী নেতা হওয়ায় কুমিল্লা-১ (দাউদকান্দি-তিতাস) ও কুমিল্লা-২ (হোমনা-মেঘনা) দুটি আসনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে কে নির্বাচন করবে এমন গুঞ্জন চলছে। এ বিষয়টি এখন ধোঁয়াশা কাটতে শুরু করেছে। আবার অনেক নেতাকর্মীরাই দ্বিধায় ছিল কুমিল্লা-১ আসনে কে হবে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী। বিএনপির প্রভাবশালী নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন নাকি তার কনিষ্ঠ পুত্র বিএনপির নির্বাহী সদস্য ড. খন্দকার মারুফ হোসেন। এমন আলোচনার পারদ ওঠানামা করছে রাজনৈতিক মহলসহ সর্বমহলে। ধোঁয়া ওঠা চায়ের কাপ হাতে চায়ের টং দোকান থেকে শুরু করে বিপণীবিতান, শমিং মহল, মাঠেঘাটে এ আলোচনায় সয়লাব।
সোমবার প্রকাশিত গণমাধ্যমে একটি সংবাদপত্রে বিএনপির হাইকমান্ডের বরাত দিয়ে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।এতে বলা হয়েছে, তারুণ্য নির্ভর, ত্যাগী, ক্লীন ইমেজ, জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা আছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে
এমন নেতাকে বিএনপির মনোনয়ন দেওয়া হবে। এমন সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য ড. খন্দকার মারুফ হোসেনকে কুমিল্লা-১ আসনে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে পেতে চায়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এমন স্ট্যাটাস দিতে দেখা গেছে দাউদকান্দি-তিতাস বিএনপির নেতাকর্মীদের। এছাড়াও কুমিল্লা উত্তর জেলা যুবদলের আহ্বায়ক ভিপি শাহাবউদ্দিনসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারী অনেক নেতাকর্মীর ফেসবুক ওয়ালে এ পোষ্টটি দেখা যাচ্ছে।
তবে এ বিষয়টি প্রথমে সামনে আনেন দাউদকান্দি পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সাবেক কাউন্সিলর খন্দকার বিল্লাল হোসেন সুমন। মঙ্গলবার (১৬ জুন) তার নিজস্ব ফেসবুক ওয়ালে একটি পোস্ট দেন। তার দীর্ঘ এ পোস্টে স্থানীয় বেশিরভাগ নেতাকর্মী (যারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ব্যবহার করে) ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন। এবং সকলেই ড. খন্দকার মারুফ হোসেনকে কুমিল্লা-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন দিতে দাবি জানান।
এদিন পৌর জাসাসের আহ্বায়ক মোল্লা সোহেল ও সদস্য সচিব প্রমোদ সরকার মধুকেও কুমিল্লা-১ আসনে ড. খন্দকার মারুফ হোসেনকে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হওয়ার দাবি জানিয়ে তাদের আইডি থেকে পৃথক দুটি পোস্ট দিয়েছেন। এতেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন।
উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুস সাত্তার জানান,” আমাদের প্রিয় নেতা দেশ বরেণ্য রাজনীতিবিদ সাবেক মন্ত্রী বিএনপির সিনিয়র সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সুযোগ্য তনয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ড. মারুফ হোসেন একজন পরিশীলিত ও পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ। তরুণ প্রজন্মের নেতা হিসেবে তিনি ইতিমধ্যে ব্যাপক সমাদৃত। তিনি যদি কুমিল্লা- ১ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হোন তাহলে আমাদের দীর্ঘদিনের আশাআকাঙ্ক্ষার প্রতিফল ঘটবে। তিনি ভালো কিছু করবেন, চমক দেখাবেন এই আশাকরি। একটি শান্তিপ্রিয় জনপদ তিনি গড়তে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।”
তিতাস উপজেলা বিএনপির সভাপতি ওসমান গণি ভূঁইয়া জানান,” বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য ড. মারুফ হোসেন একজন ভদ্র মার্জিত ও সর্বজনীন গ্রহণযোগ্য রাজনীতিবিদ। তিনি দলীয় মনোনয়ন পাবেন বলে আমরা আশাবাদী ইনশাল্লাহ। বিএনপির মনোনয়ন বোর্ড ত্যাগী, জনবান্ধব ও জনপ্রিয় বিএনপি নেতাদের মনোনয়ন দিবে। এই তিনটি গুণ আমাদের নেতার মধ্য আছে।”
এ বিষয়ে জানতে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এমএ লতিফ ভূঁইয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,” ড. মারুফ হোসেন তারুণ্যের অহংকার। তিনি রাজনীতিতে আসার পর তরুণ প্রজন্মের রাজনীতি করার আগ্রহ আগ্রহ বাড়ছে। সেই সঙ্গে তিনি ন্যায়পথে চলেন, অন্যায় অবিচারে জিরো টলারেন্স। ব্যক্তি হিসেবে ভালো মানুষ। দলের দুর্দিনে তিনি ছিলেন একজন কাণ্ডারি। নিজ নির্বাচননী এলাকাসহ রাজধানীতে তার সরব উপস্থিতি আমাদের সাহস জুগিয়েছেন। তিনি একজন বিচক্ষণ আইনজীবী। নেতাকর্মীদের বিপদে পাশে থাকেন। এমন নেতা বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হোক এটা সবারই চাওয়া।
বিএনপির দুঃসময়ে দলের নেতাকর্মীদের পাশে থেকে দিকনির্দেশনা দিয়ে, নিজে সরাসরি মাঠে ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়তেন। দল তালে মূল্যায়ন করুক তা চাই।
এবিষয়ে কুমিল্লা-১ আসনের বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকের মনোনয়ন প্রত্যাশী কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ড. মারুফ হোসেন জানান,” বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশ গঠনে যে ৩১ দফা দিয়েছেন। তা বাস্তবায়নে আমরা কাজ করছি। দলের জন্য মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। দলের হাইকমান্ড যদি আমাকে কুমিল্লা-১ (দাউদকান্দি-তিতাস) আসনে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে যোগ্য মনে করেন এবং মনোনয়ন দেন তবে অবশ্যই নির্বাচন করব। দলের সিদ্ধানের প্রতি আনুগত্য থেকে কাজ করব।”