আলীকদমে বিস্তীর্ণ বনভূমি থেকে গাছ কেটে পুড়ানো হচ্ছে ইট ভাটা ও তামাক চুল্লিতে
নিজস্ব প্রতিনিধি মঙ্গলবার রাত ১০:৩৫, ২১ জানুয়ারী, ২০২০
সুশান্ত কান্তি তঞ্চঙ্গ্যা,বান্দরবান প্রতিনিধি: পরিবেশ ও বন আইন নীতি মালার কোন প্রকার তোয়াক্কা না করে যার যার ইচ্ছা ও মর্জি মাফিক বন ধ্বংসের প্রতিযোগীতা করলেও যেন বলার কেহ নেই, পার্বত্য জেলা বান্দরবানের আলীকদম উপজেলায়। উপজেলায় স্থাপিত ইট ভাটাগুলোতে কয়লা নয় পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। অনুমতির বিধান আছে কিন্তু নেয়ার প্রয়োজন নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতির। সরকারি সকল বিধি-বিধানকে অমান্য করে ইটভাটা ও তামাক কিউরিং এর কাজে তামাল চুল্লির জ্বালানীর সিংহভাগ সংগ্রহ করা হচ্ছে আলীকদম-থানচি ও কলারঝিরি,সড়ক তৈন মৌজার আশেপাশ বিস্তীর্ণ বনাঞ্চল হতে। আর বন বিভাগের দায়িত্ব সংশ্লিরা মোটা অংকের বিনীময়ে নিরব দর্শক।উপজেলার মাংগু মৌজার বিস্তির্ণ বনভূমিতে চলছে বৃক্ষখেকোদের রামরাজত্ব। দীর্ঘদিন ধরে বৃক্ষনিধনকারীদের দাপটে পাহাড়গুলোর সবুজ বন দূষর মরুভূমিতে পরিনত হচ্ছে। প্রতিদিন শতাধিক গাড়ি কাঠ পাচার হচ্ছে হলেও সরকার বঞ্চিত হচ্ছে সরকারি রাজস্ব থেকে।সরেজমিনে দেখা যায়, আলীকদম থানচি সড়কের ১৩কিলোমিটার থেকে ২৩ কিলোমিটার, মাংগু মৌজার মেনপা পাড়া, রেংইয়া পাড়া, রুইপা পাড়া, কলার ঝিরির আগা, আদু পাড়াসহ, তৈনফা মৌজার বিভিন্ন এলাকার প্রায় দুইশটিরও বেশি স্থানে গাছ কেটে স্তুপ করে রেখেছে গাছ পাচারকারী এসব সিন্ডিকেট। মুষ্টিমেয় কিছু অসাধু কর্মকর্তাকে পকেটস্থ করে অবাদে বন নিধন করে আসছে এসব বন খেকোরা। দাপিয়ে বেড়াছে এপাহাড় থেকে ওপাহাড়। কয়েকজন কাঠ শ্রমিকের সাথে কথা বললে তারা জানান, বন উঝাড়ের শীর্ষে রয়েছে মোঃ আলী সওদাগর আলীকদম থানচি সড়কে কয়েকশত একর খাস পাহাড়ী বন ভূমির অঘোষিত মালিকানা তাঁর। অন্যান্যাদের মাঝে মোঃ ইসমাইল, মোঃ বেলাল, মোঃ হাবিব, মোঃ আলম, মোঃ শহিদুর রহমান, মোঃ আবু হেনা, মৌলভী আব্দু শুক্কুর, মোঃ ওসমান, আব্দুছ ছবুর, ফারুকসহ অনেকেই আছে যারা এসব গাছ নিধন করে আসছে। আমরা দিন মুজুর, দিন শেষে শুধুমাত্র পারিশ্রমিকটাই পাই। এসময় গাছ কাটার জন্য বেশ কিছু আধুনিক মেশিন দেখা যায় শ্রমিকদের কাছে। দ্রুত বেশি মাত্রায় গাছ কাটার জন্য এসব মেশিন ব্যবহার হয় বলে জানান শ্রমিকরা।নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ব্যবসায়ী বলেন, আমাদের একটি সমিতি আছে। সমিতি মণ প্রতি আমাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে বিভিন্ন প্রশাসনকে ম্যানেজ করে। তার পরও আমরা সংশ্লিষ্ঠ বিভাগকে গাড়ি প্রতি টাকা দিয়ে থাকি। অপর এক ব্যবসায়ী মোঃ আলী সওদাগর বলেন, আমরা ছোটখাট ব্যবসায়ী। ব্যবসা করে পরিবারের খরচ চালাই। এসব নিয়ে না লিখে অনেক কিছুইতো আছে লিখার মত। সেসব বিষয় নিয়ে লিখার পরামর্শ দেন সংবাদিকদেরকে।জানতে চাইলে ১নং আলীকদম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন হতাশা প্রকাশ করে বলেন, বন ও পরিবেশ রক্ষায় আমরা আন্তরিক। কিন্তু আমাদের ক্ষমতা নেই, আমরা নিরুপায়। অপরদিকে আলীকদম উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি সমরঞ্জন বড়ুয়া বলেন, বর্তমান সরকার পরিবেশ রক্ষায় বদ্ধপরিকর। সরকার কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন ভাতা পর্যাপ্ত পরিমানে বৃদ্ধি করেছে। তথাপিও বন বিভাগের কর্মকর্তারা কাঠ পাচারকারীদের সাথে আতাত করে প্রকৃতিকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আমি পরিবেশ রক্ষায় সংশ্লিষ্ঠ প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করি। সেই সাথে বিষয়গুলো গণমাধ্যমে তুলে ধরার জন্য কর্মরত সংবাদকর্মীদেরকে আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই
এবিষয়ে লামা বন বিভাগের অধিনস্ত তৈন রেঞ্জ কর্মকর্তা শামসুল হুদা বলে উর্দ্বোতন কর্মকর্তাদের অনুমতি ছাড়া আমার মিডিয়াতে কোন প্রকার বক্তব্য দিতে পারিনা। তবে সাংবাদিকের কৌশলী প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন বিষয়টি আমরা দেখবো। অপরদিকে লামা বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোঃ কাইছার এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনিও উর্দ্বোতন কর্মকর্তার দোহাই দিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে যান।