আর কথা নয়, এখন শুধু অ্যাকশন : গয়েশ্বর
মেঘনা নিউজ ডেস্ক সোমবার বিকেল ০৪:৫২, ৬ ডিসেম্বর, ২০২১
‘মিডনাইট গভর্মেন্ট’ এর বিরুদ্ধে এখন থেকে আর কথা নয়, অ্যাকশন শুরু হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের আর কথা নয়, এখন থেকে অ্যাকশন। অ্যাকশন এগেইনস্ট মিডনাইট গভর্মেন্ট। সারা দেশ, গ্রাম-গঞ্জে, শহর-বন্দরে একটি সুর-শেখ হাসিনা সরকার ভোট চোর। আর এ ভোট চোরের বিরুদ্ধে জনগণের লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছে বিএনপি।’
আজ সোমবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তার বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানদের সমাবেশ তিনি এসব কথা বলেন।
সাবেক এ জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশে গয়েশ্বর বলেন, ‘আপনারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন, এখনো আপনাদের নেতৃত্বে এলাকার মানুষ ঐক্যবদ্ধ আছে। এসব মানুষদের নিয়ে আপনারা আরও ঐক্যবদ্ধ হন। আমরা আবারও ‘৯০ এর গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আরেকটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করবো। মিডনাইট এ গভর্মেন্টকে বিদায় করবো, গণতন্ত্রের মাতা বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবো, দেশবাসীকে মুক্ত করবো।’
উপমহাদেশের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া উল্লেখ করে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘মুসলিম বিশ্বের প্রথম নির্বাচিত মহিলা প্রধানমন্ত্রী। একবার নয়, তিনবার। তিনি আলাদা আলাদাভাবে ২৩টি আসনে নির্বাচন করে প্রতিটি আসন থেকে বিজয়ী হয়েছেন। সেই নেত্রী সম্পর্কে (ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রী-এমপি ও নেতা) যে ধরনের ঠাট্টা মশকরা করা হয়-এটা সৃষ্টাচারের সঙ্গে তুলনা করা যায় না। এরা বেয়াদব। এদের জবাব মুখে দেওয়া যায় না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা আপনাদের সাহসকে আরও প্রত্যয়ী করেন। নেতাকর্মীদের সঙ্গে আরও ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তুলুন। এটাই হবে আমাদের আন্দোলনের সফলতার মূলমন্ত্র।’
ফ্যাসিবাদী সরকার ক্ষমতায় উল্লেখ করে গয়েশ্বর বলেন, ‘এই সরকারের জনপ্রিয়তা তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। জনবিচ্ছিন্ন এ সরকার যদি আমাদের কণ্ঠরোধ করে, আমাদের আন্দোলনকে স্তব্ধ করে তাহলে আমাদের জন্মই বৃথা। আমাদের জন্ম হয়েছে সংগ্রামের জন্য। আমরা বিএনপি করি তার যে নেতা স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে দেশ স্বাধীন করেছেন, আমরা আপসহীন দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার অনুসারী- এসব কারণে আমরা ব্যর্থ হতে পারি না। ’
‘আমাদের নেতা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যুক্তরাজ্যে মানবেতর জীবনযাপন করছেন, সেখান থেকে গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন সংগ্রামের নেতৃত্ব দিচ্ছেন শুধুমাত্র আমাদের ঐক্যবদ্ধ রাখার জন্য। আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি তাহলে তারেক রহমানের নেতৃত্বে সফল আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দেশে গণতন্ত্র ফিরবে, খালেদা জিয়া মুক্ত হবেন এবং উন্নত চিকিৎসায় বিদেশ যেতে পার’, যোগ করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জিয়াউর রহমানের সৈনিক, খালেদা জিয়ার সৈনিক ও তারেক রহমানের সৈনিক। আমাদের আলাদা পরিচয় নেই, সৈনিকদের কাজ হচ্ছে লড়াই করা। আজকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারেক রহমান, তার নেতৃত্বেই বাংলাদেশ মুক্ত হবে এবং মুক্ত হবে গণতন্ত্র। ’
গয়েশ্বর বলেন, ‘আমাদের নেত্রী আজ মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারি না। চিকিৎসকদের কথা সরকার কানে নেয় না, তারা আইনের ছবক দেয়। আবার বলে, তাকে ক্ষমা চাইতে হবে। বাংলাদেশে এ সময়ে কোন লোকটা নিষ্পাপ আছে, যার কাছে খালেদা জিয়া ক্ষমা চাইবে। খালেদা জিয়া এমন কী অন্যায় করেছে, যার জন্য ক্ষমা চাইবে? টাকা তছরুপ হয়নি বরং বেড়ে কয়েকগুণ হয়েছে। তারপরও তাকে সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অথচ হাজার হাজার, লাখ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয় তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। ’
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করার কথা থাকলেও বৈরী আবহাওয়ার কারণে স্থান পরিবর্তন করে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় এই সমাবেশ করা হয়। এতে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু আশফাক সভাপতিত্ব করেন।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুণ রায় চৌধুরী, সাবেক জনপ্রতিনিধি ইঞ্জিনিয়ার জাকির হোসেন, শাহে আলম, আবু সাইদ চাঁন, দেওয়ান শফিকুজ্জামান, তমিজ উদ্দিন, কফিল উদ্দিন, দিলদার হোসেন, জাফর ইকবাল হিরন, আমিনুল ইসলাম বাদশা, সরকার বাদল, মোর্শেদ মিল্টন, মশিউর রহমান, নবী নেওয়াজ খান, জয়নাল আবেদিন, আতাউর রহমান আতা, আসিক চৌধুরী প্রমুখ।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, দেশের প্রথিতযশা চিকিৎসকরা বলছেন, খালেদা জিয়ার রক্তক্ষরণ হচ্ছে, এ দেশে তার আর কোনো চিকিৎসা নেই। তাকে দ্রুত উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে হবে। কিন্তু সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা তুচ্ছতাচ্ছিল্য করছেন। এ সময় জিয়া পরিবার তথা তারেক রহমানের কন্যা ব্যারিস্টার জাইমা রহমান সম্পর্কে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর নারী বিদ্বেষী মন্তব্যের কঠোর সমালোচনা করেন রিজভী।