ঢাকা (সকাল ১০:৪৮) শনিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
শিরোনাম
Meghna News গৌরীপুরে উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারের বর্ণিল বিদায় সংবর্ধনা Meghna News স্বামীর মধুময় স্মৃতি রোমন্থনে দিন কাটছে স্ত্রী মারজিনার Meghna News চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃতি সন্তান সানাউল্লাহ হলেন নির্বাচন কমিশনার Meghna News চাঁপাইনবাবগঞ্জে সাড়ে ৩ লক্ষ টাকার মাদক উদ্ধার, আটক-১ Meghna News নাগরপুরে যদুনাথ স. প্রা. বিদ্যালয়ে মা সমাবেশ অনুষ্ঠিত Meghna News দ্রুত সুমনের মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনের দাবি জানাল পরিবার Meghna News সাপ্তাহিক বৈচিত্র্যময় সিলেটের সম্পাদক গরম পানিতে ঝলসে গুরুতর আহত Meghna News চাঁপাইনবাবগঞ্জে খাস জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব, সংঘর্ষে নিহত একজন Meghna News চাঁপাইনবাবগঞ্জে নিখোঁজের ৪ দিন পর আদিবাসী শিশুর মরদেহ উদ্ধার Meghna News মোটরসাইকেল দূর্ঘটনায় যুবক নিহত

সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরা করোনা রোগীদের দেওয়া হল ফুলেল শুভেচ্ছা

নিজস্ব প্রতিনিধি নিজস্ব প্রতিনিধি Clock বৃহস্পতিবার বিকেল ০৫:৩৪, ৭ মে, ২০২০

 মোঃ ইবাদুর রহমান জাকির, সিলেট প্রতিনিধিঃ  ‘ডাক্তার, নার্সরা দাঁড়িয়ে আছেন ফটকে। সবার মুখে হাসি। দিচ্ছেন হাততালি। নতুন জীবনে স্বাগত জানালেন তাদের। হাতে তুলে দিলেন গোলাপ ফুল। এমন দৃশ্য দেখে চোখে জল চলে আসে সুস্থ হওয়া রোগিদের। কেঁদে ফেলেন তারা।’
গতকাল বুধবার সিলেটের শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের এমন দৃশ্যের অবতারনা ঘটে। দু:খের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে খুশির ঝিলিক। দীর্ঘ ১৫ দিনের চিকিৎসা গ্রহন শেষে সুস্থ হওয়ার পর বাইরে বের হয়ে শুকরিয়া আদায় করেন রোগিরা। তারা বলেন- হাসপাতালের পরিবেশ তেমন ভালো না হলেও ডাক্তারদের আচরন ও সহযোগিতায় তারা খুব খুশি। যেন নিজের বাড়িতেই ছিলাম। সবার আচরন পজেটিভ হওয়ার কারনে তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়েছেন বলে জানান রোগিরা।
সিলেটের জৈন্তাপুরের সরুপদ গ্রামের জামাল উদ্দিন। পেশায় ট্রাকের হেল্পার। বসের সঙ্গে নারায়নগঞ্জ গিয়ে করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। এরপর নিজ বাড়ি থেকে চিকিৎসকরা তাকে ধরে নিয়ে আসেন। ভর্তি করেন সিলেটের শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে। সেখানে ভর্তি হওয়ার পর প্রথমে তিনি কিছুটা ভড়কে যান। পরে ডাক্তার ও নার্সদের ভালো আচরন তাকে আশাবাদী করে তোলে। জামাল জানান, ‘হাসপাতালে আসার পর প্রথমে ভেঙ্গে পড়েছিলাম। এরপর ধীরে ধীরে সবার সহযোগিতায় সুস্থ হয়ে উঠেছি।’ তিনি বলেন- ডাক্তার ও নার্সরা অসম্ভব যত্ন করেছেন। তাদের আন্তরিকতা কখনোই ভুলবো না।’
একই ভাবে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন গোয়াইনঘাটের বীরকুড়ি গ্রামের খয়রুল আমীন। তিনি ঢাকার মিরপুরের হোটেল শ্রমিক ছিলেন। লকডাউনের আগেই বাড়ি ফিরে আসেন। এরপর তিনি আক্রান্ত হন করোনা ভাইরাসে। খয়রুল গতকাল হাসিমুখে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। তিনি জানান, ডাক্তারদের সেবা ভালো। তাদের মানসিক শক্তিই আমাদের বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা দিয়েছে। জামাল ও খয়রুলের মতো ৫ জন সুস্থ হওয়া করোনা আক্রান্ত রোগিকে গতকাল বিদায় দেওয়া হয়েছে হাসপাতাল থেকে। তারা সবাই পুরুষ। বয়স ২০ থেকে ৪৫ মধ্যে। বাড়ি ফেরার সময় জানালেন- দ্বিতীয় জীবন পেলাম। আল্লাহ বাঁচিয়ে রেখেছেন।’
শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার মহাপাত্র জানিয়েছেন- ‘বুধবার দুপুরে এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠা পাঁচজন রোগীকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। যাদের ডিসচার্জ করে দেওয়া হয়েছে এদের করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের পর থেকে তাদের কোনো শারীরিক সমস্যা ছিল না। তারা সুস্থই ছিলেন। তাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার যে সকল প্রটোকল আছে, সে অনুযায়ী আমরা তাদের রিলিজ করে দিয়েছি।’
শামসুদ্দিন হাসপাতালে ১৯ জন করোনা পজিটিভ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। এদের মধ্যে ৫ জন পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠে বাড়ি ফিরে গেলেন। তাদের পরপর দুটি টেস্ট নেগেটিভ এসেছে। তারা সবাই পুরুষ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মো. ইউনুছুর রহমান, উপ-পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায়, সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. প্রেমানন্দ মন্ডল ও হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. সুশান্ত কুমার মহাপাত্র।
সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. ব্রিগেডিয়ার ইউনূসুর রহমান জানিয়েছেন- ফ্রন্টের লাইনের যুদ্ধা ডাক্তার নার্সদের আন্তরিক সেবার কারনে আজ ৫ রোগি বাড়ি ফিরলেন। এর চেয়ে আনন্দের আর কী হতে পারে। তিনি এ জন্য ডাক্তার সহ চিকিৎসা সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন- রোগির সেবা করতে আমাদের চেষ্টার কোনো কমতি নেই। সীমিত সুযোগেও সেবা চলমান কষ্টকর। এরপরও সবাই আন্তরিক ভাবেই সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এর প্রমান আজ ৫ জন রোগি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেলেন। এদিকে সিলেট বিভাগে মোট করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ২৫৭ জন। যাদের মধ্যে চিকিৎসক, নার্স থেকে শুরু করে প্রশাসনের বহু কর্মকর্তাও এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসকও রয়েছেন। বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে হবিগঞ্জ জেলায়।
এ জেলায় এখন পর্যন্ত ৮০ জন রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, ৩ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীরাও রয়েছেন। এছাড়া বিভাগের অন্য তিন জেলা সিলেট ৩৯ জন, সুনামগঞ্জে ৩৫ জন ও মৌলভীবাজারে ২৮ জন রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, করোনাভাইরাসে সিলেট বিভাগে যারা আক্রান্ত হয়েছেন তাদের মধ্যে ৪৫ জন স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন। যার মধ্যে ১১ জন চিকিৎসক, সেবিকা (নার্স) ১১ জন ও হাসপাতালের স্টাফ রয়েছেন ২২ জন। এর আগে কেবল সুনামগঞ্জের এক নারী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।



শেয়ার করুন

GloboTroop Icon
পাঠকের মতামত

মেঘনা নিউজ-এ যোগ দিন

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর



© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT