শিক্ষকদের মানববন্ধনে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিক্ষককে মারধর
এস এম সাখাওয়াত বৃহস্পতিবার রাত ০৯:০৬, ২৯ আগস্ট, ২০২৪
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বহিরাগতদের অনুপ্রবেশ বন্ধ ও শিক্ষকদের হেনস্তার প্রতিবাদে করা শিক্ষকদের শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনে হামলা করেছে শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (২৯ আগষ্ট) সকালে সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের কারবালা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে এই ঘটনা ঘটে। এ সময় শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের হাত থেকে ব্যানার কেড়ে নিয়ে শিক্ষকদেও ওপর চড়াও হয়ে বেধড়ক পেটায়। এতে গুরুতর আহত হয়েছেন কারবালা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের কয়েকজন শিক্ষক। পরে মারধরের পর উল্টো শিক্ষকদের পদত্যাগের দাবিতে ক্লাস বর্জন করে প্রতিষ্ঠানটির মাঠে অবস্থান নেয় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। পরে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
অভিযোগ উঠেছে, শিক্ষার্থীদের একাংশ ও প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকরা গত কয়েকদিন ধরেই অনিয়ম-দুর্নীতি ও বহিরাগতদের প্রবেশ নিষেধের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছিলো। এরই ধারাবাহিকতায় একটি শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনের আয়োজন করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ফলে বেলা ১১টার দিকে মানববন্ধনে দাঁড়ালে তাতে বাধা দেয় শিক্ষার্থীদের একাংশ। পরে ব্যানার কেড়ে নিয়ে কয়েক শিক্ষকদের হেনস্তা করে কয়েকজন শিক্ষককে বেধড়ক মারধর করে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও কয়েকজন বহিরাগত।
এ বিষয়ে নাম না প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক বলেন, কারবালা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের উন্নয়ন করলেও অধ্যক্ষ মো. মশিদুল হকের কিছু অপকর্ম নিয়ে তার সাথে শিক্ষকরা কয়েকদিন আগে একটি আলোচনা করি। যেহেতু ২০২৭ সালে তিনি অবসরে যাবেন সেহেতু ভবিষ্যতে আর কোন অনিয়ম না করার শর্তে তাকে আমরা ছাড় দিই। কিন্তু আজকে আমাদের প্রতিবাদী মানববন্ধনে অধ্যক্ষ ও তার কিছু অনুসারী শিক্ষক কোমলমতি শিক্ষার্থীদের উত্তেজিত করে আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে ণ্যাক্কারজনক অবস্থার সৃষ্টি করে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, স্যারেরা আমাদের ক্লাসে এসে রাজনীতি নিয়ে আলোচনা করেন। জামায়াত-শিবির দলে যোগ দিতে বলেন। যা আমরা তাদের কাছ থেকে আশা করিনা। আমার রাজনীতি মুক্ত ক্যাম্পাস চাই। এসব কথা বলাতেই স্যারেরা আমাদের কয়েকজন সহপাঠিকে বিনা কারণে শাস্তিও দিয়েছেন।
তবে মারধরের কথা অস্বীকার করে কারবালা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ মো. মশিদুল হক বলেন, মানববন্ধনের বিষয়ে আমি নিজেই কিছু জানি না। আমি আমার অফিসে ছিলাম। হঠাৎ হট্টগোলের শব্দে আমি বাইরে এসে শিক্ষার্থীদের সাথে শিক্ষকদের ধ্বস্তাধস্তি দেখতে পায়। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় শিক্ষার্থীরা আবু সাঈদ, আব্দুর রউফ, মামুন নামে কয়েকজন শিক্ষকের পদত্যাগ দাবি করে। এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে সুরাহা করা হবে বলে জানান তিনি।