রাজারহাটে কুকুরদের সঙ্গী ছকিনা
রমেশ চন্দ্র সরকার, রাজারহাট, কুড়িগ্রাম রবিবার রাত ০৮:৫৪, ২৬ জুলাই, ২০২০
তার আসল নাম ছকিনা খাতুন হলেও লোকে তাকে ছকি পাগলী নামেই চেনে। বয়স বেশি না হলেও আটাশের কম না। রাজারহাট বাজারে তাঁর সার্বক্ষণিক অবস্থান। ঠিক কতদিন আগে সে রাজারহাটে এসেছে কিংবা কোথা থেকে এসেছে তা জানা যায়নি। তবে লোক মুখে শোনা ১৫/২০ বছরের কম না। সে উন্মাদ না হলেও একেবারেই অপ্রকৃতিস্থ নয় তাও না। তাঁর জীবন চলে ভিক্ষাবৃত্তি করে। তবে মাঝে মধ্যে তাঁকে অন্যের বাড়িতে কাজ করতে দেখা যায়। সব সময় সবার কাছে ভিক্ষা না চাওয়া তাঁর একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য। কারো ক্ষতি কিংবা চুরি না করা ছকির অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
এভাবে ছকি তাঁর দীর্ঘ জীবন অতিবাহিত করলেও সম্প্রতি তাঁর জীবানাচরনের ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। হাট বাজার কিংবা রাস্তার ভাসমান কুকুরগুলো এখন তাঁর নিত্য দিনের সঙ্গী। কুকুরের সাথে তাঁর অবাদ বিচরণ ও নিদ্রাযাপন নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার। প্রতিদিন ভিক্ষা করে যা আয় করে তাঁর প্রায় ৭০ ভাগ কুকুরের পিছনে ব্যয় করেন। ৫/৭ টি কুকুরের খাদ্যের জোগানদাতা ছকি পাগলী এক দন্ড কুকুর ছাড়া চলতে পারে না।
প্রত্যহ ভোর বেলা থেকেই শুরু হয় কুকুরের প্রতি সেবাযত্ন। কুকুর গুলোকে আদরযত্ন, খাওয়ানো, কোলেপিঠে নেওয়া ও কুকুরের সাথে ঘুমানো এখন তার জীবনের বিরাট একটি অংশ। যা এলাকায় ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। বিষয়টি অনেকের কাছে অবাস্তব বলে মনে হলেও তাঁর কাছে এটাই বাস্তব।
রাজারহাট আদর্শ মহিলা কলেজের মনোবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক অনন্ত কুমার রায় জানান, মানুষের মনোজগৎ বড় বিচিত্র। কারো সঙ্গে কারো মতের মিল হলেই প্রেম হয়ে যায়। সেটা মানুষের সাথেই হোক কিংবা অন্য কোনো প্রাণীর সাথেই হোক।