এশিয়া কাপের দ্বিতীয় ম্যাচে পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে রোহিত শর্মার ভারত। এই মাঠেই বিশ্বকাপের মঞ্চে পাকিস্তানের কাছে ১০ উইকেটে হেরেছিল ভারত। ১০ মাস পর সেই হারের মধুর প্রতিশোধ নিলেন রোহিত-কোহলিরা।
রোববার এশিয়া কাপের দ্বিতীয় ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ১৯.৫ ওভারে ১০ উইকেটে স্কোরবোর্ডে ১৪৭ রান তুলেছে পাকিস্তান। জবাব দিতে নেমে ২ বল হাতে রেখে জয় তুলে নেয় ভারত।
দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে পাকিস্তানকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় ভারত। আগে ব্যাট করতে নেমে সাবধানী শুরুর আভাস দিয়েও শুরুতেই বাবর আজমকে হারিয়ে ফেলে পাকিস্তান।
ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই সাজঘরে ফেরেন পাকিস্তান অধিনায়ক। ভুবনেশ্বর কুমারের করা তৃতীয় ওভারের চতুর্থ বল মোকাবিলা করতে গিয়ে শর্ট ফাইন লেগে অর্শ্বদীপ সিং-এর হাতে ক্যাচ তুলে দেন অধিনায়ক। ৯ বল খেলে ২ চারে ১০ রান করে ফিরে যান বাবর।
এরপর ব্যাট করতে নামা ফখর জামানকে টিকতে দেননি আবেশ খান। দলীয় ৪২ রানে উইকেটের পেছনে দিনেশ কার্তিকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। ২ বাউন্ডারিতে ৬ বলে ১০ করেন ফখর জামান।
জোড়া ধাক্কা খাওয়ার পর জুটি বাঁধেন রিজওয়ান ও ইফতেখার। কিন্তু এই জুটি জমে ওঠার আগেই ভেঙে দেন হার্দিক পান্ডিয়া। ১৩তম ওভারে ইফতেখার আহমেদের প্রতিরোধ ভেঙে পাকিস্তানকে চাপে ফেলে দেন পান্ডিয়া। ৪৫ রানে ভাঙে পাকিস্তানের তৃতীয় জুটি, ইফতেখার ফেরেন ২২ বলে ২৮ রান করে।
উইকেটে থিতু হয়ে যাওয়া রিজওয়ানকেও বিদায় করেন পান্ডিয়া। ভারতীয় অলরাউন্ডারের শর্ট বলে থার্ডম্যানে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন রিজওয়ান। ৪২ বলে ৪৩ রান করে ফেরেন রিজওয়ান। একই ওভারে খুশদিলকেও নিজের শিকার বানান পান্ডিয়া। পরপর ৩ উইকেট তুলে নিয়ে ভারতকে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ এনে দেন তিনি। দ্রুত উইকেট হারানোর মিছিলে বেশিদূর যেতে পারেনি পাকিস্তান। শেষ পর্যন্ত ১৪৭ রানে থেমে যায় বাবর আজমের দল।
ভারতের হয়ে বল হাতে ২৬ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নিয়েছেন ভুবনেশ্বর কুমার। ২৫ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন হার্দিক পান্ডিয়া। দুটি উইকেট নিয়েছেন অর্শ্বদীপ সিং। আর একটি করে নিয়েছেন আবেশ খান।
এই রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় ভারত। প্রথম ওভারেই অভিষিক্ত নাসিম শাহের শিকার হয়ে ফেরেন লোকেশ রাহুল। সেই ধাক্কা কাটিয়ে ভারতকে লড়াইয়ে রাখেন বিরাট কোহলি।
লম্বা সময় পর মাঠে ফেরা কোহলির ব্যাটে রানের আভাস মিলে। উইকেটেও থিতুও হয়ে যান তিনি। তবে থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ৩৫ রানে তার প্রতিরোধ ভাঙেন মোহাম্মদ নেওয়াজ। প্রতিরোধ গড়তে পারেননি রোহিত কিংবা যাদবরা।
পাকিস্তানি বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে চাপেই পড়ে যায় ভারত। একটা সময় মনে হয়েছিল, ম্যাচ থেকে ছিটকে যেতে পারে ভারত। তবে শেষ পর্যন্ত কোনো অঘটন হয়নি। জাদেজা ও পান্ডিয়া মিলে ভারতকে পৌঁছে দেন জয়ের বন্দরে। ম্যাচ শেষে পান্ডিয়া অপরাজিত ছিলেন ৩৩ রানে। তার সঙ্গে জাদেজা করেন ৩৫ রান। ব্যাটে-বলে ভূমিকা রাখা পান্ডিয়া হয়েছেন ম্যাচসেরা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পকিস্তান: ১৯.৫ ওভারে ১৪৭ (রিজওয়ান ৪৩, বাবর ১০, ফখর ১০, ইফতিখার ২৮, খুশদিল ২, শাদাব ১০, আসিফ ৯, নওয়াজ ১, রউফ ১৩*, নাসিম ০, দাহানি ১৬; ভুবনেশ্বর ৪-০-২৬-৪, আর্শদিপ ৩.৫-০-৩৩-২, পান্ডিয়া ৪-০-২৫-৩, আবেশ ২-০-১৯-১, চেহেল ৪-০-৩২-০, জাদেজা ২-০-১১-০)।
ভারত: ১৯.৪ ওভারে ১৪৮/৫ (রোহিত ১২, রাহুল ০, কোহলি ৩৫, জাদেজা ৩৫, সূর্যকুমার ১৮, পান্ডিয়া ৩৩*, কার্তিক ১*; নাসিম ৪-০-২৭-২, দাহানি ৪-০-২৯-০, রউফ ৪-০-৩৫-০, শাদাব ৪-০-১৯-০, নওয়াজ ৩.৪-০-৩৩-৩)।
ফল: ভারত ৫ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: হার্দিক পান্ডিয়া।