ধর্মপাশায় ইউএনও’র হস্তক্ষেপে বাল্য বিয়ে থেকে রক্ষা পেল স্কুল ছাত্রী
মেঘনা নিউজ ডেস্ক মঙ্গলবার রাত ১০:৩১, ২৬ মে, ২০২০
মোবারক হোসাইন, ধরমপাশা (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর উত্তর ইউনিয়নের ভাঠি এলাকার একটি গ্রামে নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক স্কুল ছাত্রী (১৪) বাল্য বিয়ে থেকে রক্ষা পেয়েছে। আজ মঙ্গলার বেলা দুইটার দিকে এই বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.মুনতাসির হাসানের হস্তক্ষেপে ওই ছাত্রীটি বাল্য বিয়ে থেকে রক্ষা পায়।
উপজেলা প্রশাসন ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর উত্তর ইউনিয়নের ভাঠি এলাকার একটি গ্রামের বাসিন্দা ওই ছাত্রীটি স্থানীয় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে পড়ে।আজ মঙ্গলবার বেলা দুইটার দিকে একই ইউনিয়নের এক ওষুধ ব্যবসায়ীর (২৪) সঙ্গে ওই ছাত্রীটির বাল্য বিয়ের আয়োজন করা হয়।
বিয়ে উপলক্ষে ওই ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মানুষজনকে আমন্ত্রন জানানো হয়। খাবারের জন্য দুটি খাসী ও ৫০টি মোরগ জবাই করা হয়।
স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছ থেকে আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এই বাল্যবিয়ের আয়োজনের খবরটি পেয়ে যান ধর্মপাশার ইউএনও। তিনি তাৎক্ষনিকভাবে এই বাল্য বিয়েটি বন্ধ করতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও ধর্মপাশা থানার ওসি দেলোয়ার হোসেন কে খোঁজ নিয়ে এই বাল্যবিয়েটি বন্ধ করতে তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন।
ওই ছাত্রীর বাবা মেঘনা নিউজকে বলেন, মাইয়ার ১৮ বছর না অওয়ায় কাজী সাব এই বিয়া পড়াইতাইননা কইছইন। চেয়ারম্যানসাব ও ধর্মপাশা থানা থাইক্যাও বিয়া না দেওয়ার লাইগ্যা নিষেধ আইছে। না বুইজ্জা ভুল করছিলাম। অহন ১৮ বছর না অইলে আমার মাইয়ারে বিয়া দিতাম না।
সুখাইড় রাজাপুর উত্তর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান ফরহাদ আহমেদের সাথে কথা বললে তিনি জানান, বাল্য বিয়ের খবরটি আগে আমার জানা ছিল না। ইউএনও স্যারের ফোন পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে মেয়টির বাবার সঙ্গে এই বাল্য বিয়েটি বন্ধ করার জন্য কথা বলেছি। তিনি তাঁর মেয়েকে ১৮বছরের আগে বিয়ে দেবেন না বলে আমার কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
ধর্মপাশা থানার ওসি মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, খোঁজ নিয়ে এই বাল্যবিয়ের আয়োজনের সত্যতা মিলেছে। এ নিয়ে স্কুল ছাত্রীর বাবার সঙ্গে আমি কথা বলেছি। মেয়েটির বাবা ১৮বছরের আগে তিনি তার মেয়েকে বিয়ে দেবেন না বলে আমার কাছে মৌখিকভাবে অঙ্গীকার করেছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইডএনও) মো. মুনতাসির হাসান সাংবাদিকদের বলেন, বাল্য বিয়ের আয়োজনের খবর পেয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও থানার ওসির সঙ্গে এটি বন্ধ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমি কথা বলেছি। বাল্য বিয়ে একটি অপরাধ। রাষ্ট্রীয় আইনেও এ ধরনের বিয়ের কোনো স্বীকৃতি নেই। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, ওসি এবং সাংবাদিকসহ সকলের সমন্বিত প্রচেষ্ঠার কারণেই ওই ছাত্রীটি বাল্য বিয়ে থেকে রক্ষা পেয়েছে। এ ছাড়া বাল্য বিয়ে বন্ধে উপজেলা প্রশাসন সর্বদা তৎপর রয়েছে।