ঢাকা (বিকাল ৫:৩৭) শুক্রবার, ১৫ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
শিরোনাম
Meghna News নেপালে আন্তর্জাতিক অ্যাওয়ার্ডে মনোনীত হলেন নড়াইলের কৃতি সন্তান সোহাগ Meghna News নড়াইল জেলা ব্লাড ব্যাংকের স্বেচ্ছাসেবী মিলনমেলা অনুষ্ঠিত Meghna News বিআরডিবি’র নির্বাচনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেন মহিউদ্দিন তালুকদার Meghna News চাঁপাইনবাবগঞ্জে শাশুড়ী হত্যায় অভিযুক্ত টুটুল পলাতক Meghna News গৌরীপুরে কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ৭৬তম জন্মোৎসব পালিত Meghna News সিলেট টিটিসি থেকে ২২ বছর পর বদলী : মালিক হলেন লাল লাখ টাকার! Meghna News গৌরীপুরে হুমায়ূন আহমেদের নামে ক্যান্সার হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার দাবী ভক্তদের Meghna News সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সম্পদের অনুসন্ধানে নেমেছে দুদক Meghna News চাঁপাইনবাবগঞ্জে বালু বোঝাই ট্রাক্টরের ধাক্কায় শিশু নিহত, চালক আটক Meghna News ভোলার চরফ্যাশনে মোটরসাইকেল-নসিমন সংঘর্ষে দুই বন্ধু নিহত

ডা. জাফরুল্লাহ : চিকিৎসাখাতে অবদান, আত্মত্যাগ ও সম্মাননা

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী

মেঘনা নিউজ ডেস্ক মেঘনা নিউজ ডেস্ক Clock বুধবার দুপুর ০১:১১, ১২ এপ্রিল, ২০২৩

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধের পর থেকে শুরু করে দীর্ঘ ৫১ বছর দেশের গরিব, অসহায়দের চিকিৎসাসেবা ও নারীর ক্ষতায়নে কাজ করেছেন। সারা দেশে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ৪০টি পাবলিক হেলথ সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেছেন।

ডা. জাফরুল্লাহর জন্ম ১৯৪১ সালের ২৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম জেলার রাউজানে। তার বাবার শিক্ষক ছিলেন বিপ্লবী মাস্টার দা সূর্যসেন। পিতামাতার ১০ সন্তানের মধ্যে তিনি সবার বড়।

বাবার চাকরির সুবাদে ঢাকার বকশীবাজারের নবকুমার স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন এবং ঢাকা কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেন। তিনি ১৯৬৪ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস এবং ১৯৬৭ সালে বিলেতের রয়্যাল কলেজ অব সার্জনস থেকে এফআরসিএস প্রাইমারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।

তিনি ১৯৭১ সালে লন্ডনের রয়্যাল কলেজ অব সার্জনসে এফআরসিএস ডিগ্রিতে পড়াকালীন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়। ওই সময় চূড়ান্ত পর্ব শেষ না-করে লন্ডন থেকে ফিরে এসে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। ভারতের আগরতলার মেলাঘরে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে গেরিলা প্রশিক্ষণ নেন। নিজে চিকিৎসক হওয়ায় সহযোদ্ধা ডা. এমএ মবিনের সঙ্গে মিলে সেখানেই ৪৮০ শয্যাবিশিষ্ট ‘বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল’ প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা করেন।

অনেক নারীকে প্রাথমিক স্বাস্থ্য জ্ঞান দান করেন, যা দিয়ে তারা রোগীদের সেবা করতেন। তার এই অভূতপূর্ব সেবাপদ্ধতি পরে আন্তর্জাতিক চিকিৎসা সাময়িকী ‘দ্য ল্যানসেট’-এ প্রকাশিত হয়। বিশ্বব্যাপী ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী পাবলিক হেলথ মুভমেন্ট নেতা হিসাবে পরিচিত হন।

প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষকে সেবা দিতে প্যারামেডিকেল শিক্ষা দিয়ে এতে মাঠপর্যায়ের জনগণকে সম্পৃক্ত করেন ডা. জাফরুল্লাহ।

এ বিষয়ে ১৯৭২ সালে ধারণাপত্র প্রকাশ করেন তিনি, যা ১৯৭৮ সালে কাজাকিস্তানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অ্যালমাটা ঘোষণায় স্বীকৃতি পায়। তিনিই প্রথম দেশে গ্রামীণ স্বাস্থ্যবীমা চালু করেন।

সবার জন্য সুলভমূল্যে ওষুধ নিশ্চিত করতে তিনি প্রণয়ন করেন ওষুধ নীতি। যার ওপর দাঁড়িয়ে আছে বাংলাদেশের বর্তমান ওষুধশিল্প। ১৯৮২ সালে প্রণীত ওষুধ নীতির অন্যতম রূপকার ছিলেন প্রতিভাবান এই চিকিৎসক।

এশিয়া মহাদেশের সর্ববৃহৎ কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার ছাড়াও ক্যানসার হাসপাতাল ও ধানমন্ডি গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন।

ঢাকার অদূরে সাভার এলাকায় প্রতিষ্ঠা করেন গণবিশ্ববিদ্যালয়, গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ, ডেন্টাল ও ফিজিওথেরাপি কলেজ, পাবলিক হেলথ সেন্টার। করোনা মহামারিকালে কোভিড-১৯ পরীক্ষার কীট উদ্ভাবন ছাড়াও প্রতিরোধ ও প্রতিকারের গবেষণায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ভূমিকা রাখে।

উন্নত চিকিৎসার জন্য অনেকে তাকে বিদেশে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু বরাবরই তিনি বলেছেন, ‘আমি দেশের মানুষের জন্য গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছি। সেই আমি বিদেশে চিকিৎসা নেব, তা কী করে সম্ভব। আমি এই দেশে চিকিৎসা নিয়ে মরতে চাই।’

কানাডার ওয়ার্ল্ড অর্গানাইজেশন অব ন্যাচারাল মেডিসিন ২০০৯ সালে দেয় ডক্টর অব হিউম্যানিটেরিয়ান উপাধি। যুক্তরাষ্ট্রের বার্কলে থেকে ২০১০ সালে দেওয়া হয় ইন্টারন্যাশনাল পাবলিক হেলথ হিরোজ অ্যাওয়ার্ড।

যুক্তরাজ্যের প্রবাসী বাংলাদেশিদের সংগঠন ভয়েস ফর গ্লোবাল বাংলাদেশিজ ২০২২ সালে জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে ‘এনআরবি লিবারেশন ওয়ার হিরো ১৯৭১’ পুরস্কার দেয়।

জাফরুল্লাহ চৌধুরী ৫০টির বেশি দেশে বিভিন্ন সম্মেলন বা সেমিনারে মূল বক্তা হিসেবে অংশ নেন। একাধিক দেশকে জাতীয় ওষুধনীতি তৈরিতে পরামর্শ দিয়েছেন।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী মঙ্গলবার রাত ১১টায় ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

মরণোত্তর দেহদানের মাধ্যমে নিজের শরীরকেও তিনি মানুষের কল্যাণেই বিলিয়ে দিয়ে গেছেন। তিনি পুরোটা সময় দেশ ও মানুষের কল্যাণে ব্যয় করেছেন। নিজের ক্যারিয়ারের চেয়ে দেশপ্রেমকে প্রাধান্য দিয়েছেন সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পদক স্বাধীনতা পুরস্কার (১৯৭৭ সালে), ফিলিপাইনের র্যামন ম্যাগসাইসাই পুরস্কার পান ১৯৮৫ সালে। ১৯৯২ সালে সুইডেন থেকে তাকে দেওয়া হয় রাইট লাইভলিহুড অ্যাওয়ার্ড পাওয়া এই মহান মানুষটি।

তার উল্লেখযোগ্য প্রকাশনার মধ্যে একটির নাম রিসার্চ: আ মেথড অব কলোনাইজেশন। এটি ইংরেজিতে প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৭৭ সালে। এর পর এটি বাংলা ছাড়াও ফরাসি, জার্মান, ইতালি, ডাচ, স্প্যানিশ ও একাধিক ভারতীয় ভাষায় অনুবাদ হয়েছে।




শেয়ার করুন

GloboTroop Icon
পাঠকের মতামত

মেঘনা নিউজ-এ যোগ দিন

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর



© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT