জান্নাতে যাওয়ার সহজ মাধ্যমগুলো
নিজস্ব প্রতিনিধি বুধবার রাত ০৯:৫০, ২২ জানুয়ারী, ২০২০
১, প্রত্যেক ওযুর পর কালেমা শাহাদত পাঠ করুন (আশ্হাদু আল্লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্দাহু লা- শারী কা লাহূ ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান ‘আব্দুহূ ওয়া রাসূলুহূ)
এতে জান্নাতের ৮টি দরজার যে কোন দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন। (১)
২, প্রত্যেক ফরজ সালাত শেষে আয়াতুল কুরসি পাঠ করুণ এতে মৃত্যুর সাথে সাথে জান্নাতে যেতে পারবেন। (২)
৩, প্রত্যেক ফরজ সালাত শেষে ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ্, ৩৪ বার আল্লাহু আকবার এবং ১ বার (লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া ‘আলা কুল্লি শাই’ইন কাদীর) পাঠ করুন এতে আপনার অতীতের সব পাপ ক্ষমা হয়ে যাবে। (৩)
সেই সাথে জাহান্নাম থেকেও মুক্তি পেয়ে যাবেন কেননা দিনে ৩৬০ বার এই তাসবিহগুলো পড়লেই জাহান্নাম থেকে মুক্ত রাখা হয় আর এভাবে ৫ ওয়াক্তে ৫০০ বার পড়া হচ্ছে। (৪)
৪, প্রতিরাতে সূরা মুলক পাঠ করুণ এতে কবরের শাস্তি থেকে মুক্তি পেয়ে যাবেন। (৫)
৫, রাসুল (সাঃ)-এর উপর সকালে ১০ বার ও সন্ধ্যায় ১০ বার দরুদ শরীফ পড়ুন এতে আপনি নিশ্চিত রাসুল (সাঃ)-এর সুপারিশ পাবেন। (৬)
৬, সকালে ১০০ বার ও বিকালে ১০০ বার সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আজিম পরলে সৃষ্টিকুলের সমস্ত মানুষ থেকে বেশী মর্যাদা দেওয়া হবে। (৭)
৭, সকালে ১০০ বার ও সন্ধ্যায় ১০০ বার সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি পাঠ করলে কিয়ামতের দিন তার চেয়ে বেশী সওয়াব আর কারো হবে না। (৮)
৮, সকালে ও বিকালে ১০০ বার সুবহানাল্লাহ, ১০০ বার আলহামদুলিল্লাহ্, ১০০ বার আল্লাহু আকবার এবং ১০০ বার লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া ‘আলা কুল্লি শাই’ইন কাদীর পাঠ করলে অগণিত সওয়াব হবে। (৯)
৯, বাজারে প্রবেশ করে- (লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু য়্যুহয়ী ওয়া য়্যুমীতু ওয়া হুয়া হাইয়ুল লা য়্যামূত, বিয়াদিহিল খাইরু ওয়াহুয়া ‘আলা কুল্লি শাই’ইন কাদীর)পাঠ করুণ এতে ১০ লক্ষ পুণ্য হবে, ১০ লক্ষ পাপ মোচন হবে, ১০ লক্ষ মর্যাদা বৃদ্ধি হবে এবং জান্নাতে আপনার জন্য ১ টি গৃহ নির্মাণ করা হবে। (১০)
১০, বাড়িতে সালাম দিয়ে প্রবেশ করুণ এতে আল্লাহ তায়ালা নিজ জিম্মাদারিতে আপনাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। (১১)
১১, জামাতে ইমামের প্রথম তাকবীরের সাথে ৪০ দিন সালাত আদায় করুন এতে আপনি নিশ্চিত জাহান্নাম থেকে মুক্তি পেয়ে যাবেন। (১২)
১২, প্রতিমাসের আয়ের একটা অংশ এতিমখানা বা মসজিদ মাদ্রাসা বা গরিব-দুখি, বিধবা ও দুস্থদের মাঝে দান করবেন হোক সেটা অতি অল্প এতে আপনি আল্লাহ তায়ালার কাছে জিহাদকারির সমতুল্য হবেন। (১৩)
১৩, মহিলারা ৪টি কাজ করবেন,
১, ৫ ওয়াক্ত সলাত আদায় করবেন,
২, রমজানের ৩০ সিয়াম রাখবেন,
৩, লজ্জাস্থানের হেফাজত (পর্দা) করবেন,
৪,স্বামীর আনুগত্য করবেন
এতে জান্নাতের ৮ টির যে কোন দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন। (১৪)
১৪, মসজিদে ফজরের সালাত আদায় করে বসে দোয়া জিকির পাঠ করুণ এবং সূর্য উঠে গেলে ২ রাকাত চাস্তের সালাত আদায় করুণ এতে প্রতিদিন নিশ্চিত কবুল ১ টি হজ্জ ও উমরার সওয়াব পাবেন। (১৫)
১৫, সাইয়িদুল ইস্তিগফার পাঠ করুন প্রতি ওয়াক্ত সালাতের পর।
শাদ্দাদ ইবনু আওস হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, সাইয়্যিদুল ইস্তিগফার হলোঃ হে আল্লাহ! আপনিই আমার রব। আপনি ব্যতীত আর কোন মাবূদ নেই। আপনিই আমাকে সৃষ্টি করেছেন, আর আমি আপনারই গোলাম। আর আমি আমার সাধ্য মত আপনার সঙ্গে কৃত প্রতিজ্ঞা ও অঙ্গীকারের উপর সুদৃঢ়ভাবে কায়িম আছি। আমি আমার প্রতি আপনার নি‘য়ামত স্বীকার করছি এবং কৃতগুনাহসমূহকে স্বীকার করছি। সুতরাং আমাকে মাফ করে দিন। কারণ আপনি ব্যতীত মাফ করার আর কেউ নেই। আমি আমার কৃতগুনাহের মন্দ ফলাফল থেকে আপনার কাছে আশ্রয় চাচ্ছি। যে লোক সন্ধ্যা বেলায় এ দোয়া পড়বে, আর এ রাতেই মারা যাবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। রাবী বলেন, অথবা তিনি বলেছেনঃ সে হবে জান্নাতী। আর যে লোক সকালে এ দোয়া পড়বে, আর এ দিনেই মারা যাবে সেও তেমনি জান্নাতী হবে।
আরবিতে:
ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺃَﻧْﺖَ ﺭَﺑِّﻲ ﻟَّﺎ ﺇِﻟَﻪَ ﺇِﻟَّﺎ ﺃَﻧْﺖَ، ﺧَﻠَﻘْﺘَﻨِﻲ ﻭَﺃَﻧَﺎ ﻋَﺒْﺪُﻙَ، ﻭَﺃَﻧَﺎ ﻋَﻠَﻰ ﻋَﻬْﺪِﻙَ ﻭَﻭَﻋْﺪِﻙَ ﻣَﺎ ﺍﺳْﺘَﻄَﻌْﺖُ، ﺃَﻋُﻮﺫُ ﺑِﻚَ ﻣِﻦْ ﺷَﺮِّ ﻣَﺎ ﺻَﻨَﻌْﺖُ، ﺃَﺑُﻮﺀُ ﻟَﻚَ ﺑِﻨِﻌْﻤَﺘِﻚَ ﻋَﻠَﻲَّ، ﻭَﺃَﺑُﻮﺀُ ﺑِﺬَﻧْﺒِﻲ ﻓَﺎﻏْﻔِﺮ ﻟِﻲ ﻓَﺈِﻧَّﻪُ ﻟَﺎ ﻳَﻐْﻔِﺮُ ﺍﻟﺬُّﻧُﻮﺏَ ﺇِﻟَّﺎ ﺃَﻧْﺖَ
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা আনতা রাব্বি লা-ইলাহা ইল্লা আনতা, খালাক্বতানি ওয়া আনা আ’বদুক, ওয়া আনা-আ’লা আহ’দিকা ওয়া-ওয়াদিকা মাস্তা-তোয়া’ত, আ’উযুবিকা মিন শাররি মা-ছানাআ’ত আবু-উ-লাকা বিনি’মাতিকা আলায়্যা ওয়া-আবু-উ-বি-যানবি, ফাগফিরলী, ফা-ইন্নাহু লা ইয়াগফিরুযযুনুবা ইল্লা-আনতা।
[বুখারি ৬৩০৬] আধুনিক প্রকাশনী- ৫৮৭৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৭১)
তথ্যসূত্রঃ
(১) সহিহ মুসলিম, হাদিস নং- ২৩৪। (২) সহিহ নাসাই, সিলসিলাহ সহিহাহ, হাদিস নং- ৯৭২। (৩) সহিহ মুসলিম, হাদিস নং- ১২২৮। (৪) সহিহ মুসলিম, মিশকাত হাদিস নং- ১৮০৩) । (৫) সহিহ নাসাই, সহিহ তারগিব, হাকিম হাদিস নং- ৩৮৩৯, সিলসিলাহ সহিহাহ, হাদিস নং- ১১৪০। (৬) তবরানি, সহিহ তারগিব, হাদিস নং- ৬৫৬ । (৭) সহিহ আবু দাউদ, হাদিস নং- ৫০৯১। (৮) সহিহ মুসলিম, হাদিস নং- ২৬৯২। (৯) নাসাই, সহিহ তারগিব, হাদিস নং- ৬৫১। (১০) তিরমিজি, হাদিস নং- ৩৪২৮,৩৪২৯। (১১) ইবনু হিব্বান, হাদিস নং- ৪৯৯, সহিহ তারগিব, হাদিস নং- ৩১৬। (১২) তিরমিজি, সিলসিলাহ সহিহাহ, হাদিস নং- ৭৪৭, সহিহ তারগিব, হাদিস নং- ৪০৪)। (১৩) সহিহ বুখারি, হাদিস নং- ৬০০৭। (১৪) সহিহ ইবনু হিব্বান, হাদিস নং- ৪১৬৩ । (১৫) তিরমিজি, তারগিব হাদিস নং- ৪৬১।
সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ৮০/ দোয়াসমূহ (كتاب الدعوات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩২৩
(বি দ্রঃ শির্ক, বিদআত ও হারাম উপার্জন/ভক্ষণ থেকে দূরে না থাকলে কোন দোয়াই কবুল হয় না)
[পুনশ্চঃ ফরয ইবাদত ও ইসলামের মুল বিষয় গুলো পালনের পাশাপাশি এই আমল গুলো করলে জান্নাতে যাবার পথ সহজ করবে। কিন্তু কেউ যদি ইসলামের মূল বিষয়গুলো পালন না করে শুধু এই আমল করেন তাহলে ফলপ্রসূ হবে না। তাই ইসলামের মূল খুটি আকরে ধরে এই আমল গুলো করতে হবে ইনশাআল্লাহ।
মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে এই আমল করার তৌফিক দান করুন আল্লাহুম্মা আমিন।