চৌগাছায় ৬ টি ক্লিনিক এ অভিযান, চারটি বন্ধের নির্দেশ
মোরশেদ আলম, যশোর শনিবার বিকেল ০৫:১৬, ৮ আগস্ট, ২০২০
যশোর চৌগাছার ৬টি প্রাইভেট ক্লিনিকে অভিযান চালিয়ে ৪টিকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখতে নির্দেশ দিয়েছে যশোর স্বাস্থ্য বিভাগ। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টা থেকে ২টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত শহরের এসব ক্লিনিকে সিভিল সার্জনের প্রতিনিধি দল অভিযান চালিয়ে এই নির্দেশ দিয়েছেন।
অভিযানের নেতৃত্ব দেন চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রকৌশলী এনামুল হক।এই দলে ছিলেন যশোরের সিভিল সার্জনের প্রতিনিধি সাবেক ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ও যশোর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মীর আবু মাউদ এবং চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. লুৎফুন্নাহার লাকি, চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. তৌহিদুজ্জামান, যশোর সদর উপজেলা স্যানিটারী ইন্সপেক্টর পার্থ প্রতিম লাহিড়ী, চৌগাছা থানার এসআই বাবুল আক্তারসহ পুলিশ সদস্য ও স্থানীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মীরা।
অভিযানে চৌগাছা উপজেলা শহরের কপোতাক্ষ ক্লিনিকে, মায়ের দোয়া পাইভেট ক্লিনিক , বিশ্বাস ডায়াগনস্টিক ও পল্লবী ক্লিনিকে লাইসেন্স নবায়ন না থাকা, সার্বক্ষণিক মেডিকেল অফিসার ও পর্যাপ্ত নার্স না থাকাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত সবরকমের চিকিৎসা সেবা বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই সময় পল্লবী কিনিকে ভর্তি ১৫ রোগীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্থানান্তরের নির্দেশ দেওয়া হয় এবং ক্লিনিকটির মালিক গ্রাম্য ডাক্তার মিজানুর রহমান ও ক্লিনিকের একজন মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট জাহিদুর রহমানের প্রেসকিক্রপশন প্যাডে ডাক্তার লেখার অপরাধে তাদের তাদের সতর্ক করে তাদের প্রায় ২ হাজার প্রেসক্রিপশন প্যাড (চিকিৎসাপত্র) পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। অভিযানকালে দেখা যায় মায়ের দোয়া প্রাইভেট কিনিকের ঔষধ রাখার ফ্রিজে মাংস ও ব্লাড পাশাপাশি রাখা হয়েছে। ফ্রিজটির গোড়ায় অনেকগুলি ব্যাঙ লাফাতে দেখা গিয়েছে।
অপারেশন থিয়েটারের পাশের জানালা খোলা এবং রোগী রাখার বেডে ময়লা পড়ে থাকায় তাৎক্ষণিকভাবে ক্লিনিকটির সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। এছাড়া এসব কিনিক গুলোকে আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে ক্লিনিক গুলির লাইসেন্স নবায়নসহ ডাক্তার ও নার্সদের কাগজপত্র প্রদর্শন ও যে কিনিকে যে যে ত্রুুটি রয়েছে তা সমাধানের নির্দেশ দেওয়া হয়।পরবর্তী পরিদর্শনের সময়ে নবায়নসহ সকল কাগজপত্র ও সার্বিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে না পারলে কিনিকগুলোকে স্থায়ীভাবে সিলগালা করে দেওয়া হবে।
এই বিষয়ে অভিযানের নেতৃত্ব দেওয়া যশোরের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ও যশোর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মীর আবু মাউদ বলেন, ৬ টি ক্লিনিকের মধ্যে কপোতাক্ষ ক্লিনিক , বিশ্বাস ডায়াগনস্টিক, মায়ের দোয়া ক্লিনিক ও পল্লবী ক্লিনিকের পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সকল প্রকার চিকিৎসা সেবা বন্ধ রেখে কাগজপত্র হালনাগাদ ও কিনিকের স্বাস্থ্য সেবার পরিবেশ নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এই নির্দেশ না মানলে ক্লিনিকগুলিকে স্থায়ীভাবে সিলগালা করে দেয়া হবে।
তিনি বলেছেন, পল্লবী ক্লিনিকে ভর্তি থাকা ১৫জন রোগীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্থানান্তরের জন্য ৩ দিন সময় দেওয়া হয়েছে, এবং তাদের ২ জনকে, ভুয়া ডাক্তার লেখার অপরাধে সতর্ক করে দেওয়া হয় ও তাদের প্রেসক্রিপশন প্যাড (চিকিৎসাপত্র) পুড়িয়ে দেয়া হয়। তিনি আরো বলেছেন, নোভা এইড প্রাইভেট হাসপাতালের সার্টিফিকেটধারী নার্স সংকট রয়েছে এবং এছাড়া মধুমতি প্রাইভেট হাসপাতালের ইন্সপেকশন প্রক্রিয়াধীন থাকায় এই দুটির কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।পরর্বতীতে উপজেলার অন্যান্য ক্ললিনিকগুলিতেও অভিযান চালানো হবে বলেও তিনি জানান।