চাঁপাইনবাবগনঞ্জে বন্যা দূর্গতদের জন্য আলোর পাঠশালার ভালোবাসা
এস এম সাখাওয়াত জামিল দোলন,চাঁপাইনবাবগঞ্জ সোমবার সন্ধ্যা ০৭:১৫, ২০ জুন, ২০২২
দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী আসমা খাতুন। বাবার কাছ থেকে ১০ টাকা নিয়ে স্কুলে এসেছিল কিছু কিনে খাবার জন্যে। কিন্তু বিদ্যালয়ে এসে জানতে পারে বন্যায় দূর্গতদের জন্য টাকা উঠানো হচ্ছে। তা শুনে সেই টাকা আর খরচ না করে জমা দিয়ে দেয় বিদ্যালয়ে। এই ছোট্ট বয়সে অসহায় মানুষদের জন্য তার এ ভালোবাসা নজর কাড়ে সকলের।
অন্যদিকে বয়স না হলেও নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসার অভ্যাস তৈরী করা চার বছর বয়সি রাধিকা মুরমুও হাতে করে নিয়ে আসে ১০ টাকা। টাকা রাখার টেবিলে একটু লজ্জা নিয়ে রাখতে আসে টাকার নোটটি। টাকা রেখেই দেয় দৌড়। এখানেও প্রকাশ পায় তার ভালোবাসা।
আসমা খাতুন ও রাধিকা মুরমুসহ প্রথম আলো ট্রাস্ট পরিচালিত বাবুডাইং আদিবাসী আলোর পাঠশালার সকল শিক্ষার্থী ও শিক্ষকবৃন্দ সিলেট-সুনামগঞ্জসহ বন্যা দূর্গতের জন্য এ ভালোবাসার হাত বাড়িয়ে দেয়।
সোমবার রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের বাবুডাইং গ্রামে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীরা সমাবেশ শেষে যে যার সামর্থ্যমত টাকা জমা দেয়। শিক্ষার্থী ও শিক্ষকবৃন্দ মিলে মোট আট হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলী উজ্জামান নূর বলেন, সিলেট-সুনামগঞ্জসহ সারাদেশে বন্যা দূর্গতের যে অসহনীয় কষ্ট তা বিশ্ববাসী দেখতেই পাচ্ছে। সেইসব দূর্ভোগের ভিডিওচিত্র ও ছবি গত রোববার শিক্ষার্থীদের দেখানো হয় বিদ্যালয়ে। এছাড়া অনেকেই টেলিভিশনের খবরে তা দেখতেও পেয়েছে। এ নিয়ে দূর্গতের সাহায্যে শিক্ষার্থীদের এগিয়ে আসার কথা বললে সকলেই সম্মত হয়। আর তাই সকলেই পরের দিন অর্থাৎ সোমবার (২০ জুন) বিদ্যালয়ে টাকা নিয়ে আসে।
প্রথম শিফট ছুটির পর সমাবেশ শেষে সকলে সারিবদ্ধভাবে টাকা জমা দেয়। এছাড়া শিক্ষক-কর্মচারিরাও সামর্থ্যমত সাহায্য প্রদান করেন। সব মিলিয়ে আট হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। এ টাকা প্রথম আলো ট্রাস্টের মাধ্যমে জমা দেয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের সহযোগিতার এ মনোভাব তাদের আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে ও ভালো কাজের সঙ্গে যুক্ত করতে আগ্রহী করে তুলবে বলে আমরা আশা করি।