কাউন্সিল স্থলের মাঠ পরিদর্শন করলেন জেলা বিএনপির সভাপতি বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলম
লোহাগড়া উপজেলা ও পৌর বিএনপির দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিলে চলছে ভোটের লড়াই।
নিজস্ব প্রতিনিধি শুক্রবার সন্ধ্যা ০৬:৫৯, ২৫ অক্টোবর, ২০২৪
নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলা ও পৌর বিএনপি’র দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিল সম্মেলন শনিবার ২৬অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে।
নড়াইল জেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলম শুক্রবার দুপুরে কাউন্সিল স্থলের মাঠ ও ভোট গ্রহনের বুথ পরিদর্শন করেছেন।
দীর্ঘদিন পর অনুষ্ঠিতব্য সম্মেলনকে ঘিরে সকল রাজনৈতিক মহলেই চলছে নানা আলোচনা। প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল বিএনপির রাজনীতি কোন কোন নেতার নেতৃত্বে চলবে সেটাই দেখার বিষয়। দলের শৃংখলা, আদর্শ ও দলের আগামী স্বপ্ন বাস্তবায়নে কোন কোন নেতা দূরদর্শীতার সাথে দল পরিচালনা করতে পারবেন সেটা নিয়েই চলছে আলোচনা।
তৃণমূলের নেতাকর্মীরা, ভোটাররা দলের পরিক্ষিত, ত্যাগী নেতাদের উপরই ভরসা রাখছেন।
রাজনৈতিক বোদ্ধাদের মতে,
লোহাগড়া, কালিয়া ও নড়াইল সদর এই তিনটি উপজেলা নিয়ে নড়াইল জেলা। এই জেলার বিএনপি’র রাজনীতিতে বরাবরই প্রভাব বিস্তার করে আসছে লোহাগড়া উপজেলা। কারণ, লোহাগড়া ও সদরের অংশ বিশেষ নিয়ে গঠিত নড়াইল-২ সংসদীয় আসনে লোহাগড়া উপজেলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এই উপজেলার রাজনীতি ভৌগলিক অবস্থান তথা নবগঙ্গা নদী দ্বারা উত্তর ও দক্ষিণ এই দুই ভাগে বিভাজিত। বিগত ০৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার সফল গনঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে আগামী ২৬ অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিঃ তারিখ অনুষ্ঠিতব্য লোহাগড়া উপজেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক কাউন্সিলে দলীয় প্রধান দুটি পদ তথা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পদ নিয়ে রয়েছে অনেক জল্পনা কল্পনা।
অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা যায়, দক্ষিন লোহাগড়ায় বিএনপি অপেক্ষাকৃত শক্তিশালী আর উত্তরে শক্তিশালী আওয়ামীলীগ। বিগত ১৭ বছরে তাই উত্তরের আওয়ামী নেতারা সর্বোচ্চ সুবিধাভোগী। উপজেলা চেয়ারম্যান পদটি ৫ বার উত্তরের নেতারাই দখলে নিয়েছে। তারাই উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি, সম্পাদক পদটি বারবার দখলে নিয়েছে।
অপরদিকে, উত্তরের বিএনপির বিগত কমিটির নেতারা আশানুরুপ সাফল্য পায়নি।
এবারের কাউন্সিলে উপজেলা বিএনপির সভাপতি পদে ৬ জন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ২জন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।
সাধারণ সম্পাদক পদে লড়ছেন দুই জন যথাক্রমে উত্তরের কাজী সুলতানুজ্জামান সেলিম (ছাতা প্রতিক)এবং দক্ষিনের মো: টিপু সুলতান(আনারস প্রতিক)।
অপরদিকে, সভাপতি পদে লড়ছেন ৬ জন প্রার্থী। এর মধ্যে ৩ জন উত্তরের এবং ৩ জন দক্ষিনের। তৃণমূলের ভোটারদের সাথে আলাপচারিতায় বেশ কিছু পরিসংখ্যান উঠে এসেছে।
প্রথমত: উত্তরের ৩ জন সভাপতি প্রার্থী হলেন জিএম নজরুল ইসলাম(দোয়াত কলম) , আসাদুজ্জামান (ঘোড়া) এবং আহাদুজ্জামান বাটু(চশমা)। প্রায় সমানতালে উত্তরের ভোট ৪ ভাগ হচ্ছে বলে ধারনা। দ্বিতীয়ত : দক্ষিনের তিন জন সভাপতি প্রার্থীর মধ্যে রয়েছেন রবিউল ইসলাম পলাশ( দেওয়ালঘড়ি), আবু হায়াত সাবু (চেয়ার)এবং মোঃ সাচ্চু মিয়া(মোটরসাইকেল)।
লোহাগড়ায় বিএনপির রাজনীতিতে মল্লিকপুর ইউনিয়ন অধিক শক্তিশালী। এখানে নেতাকর্মীও বেশি। প্রভাবও বেশি। দক্ষিণের বিএনপির রাজনীতি মূলত মল্লিকপুর থেকেই নিয়ন্ত্রিত হয়। দক্ষিনের প্রভাবশালী প্রার্থী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছেন মোঃ সাচ্চু মিয়া। দক্ষিণের তরুণ প্রার্থী মোঃ রবিউল ইসলাম পলাশ দলের নিবেদিত প্রান।
পৌর বিএনপির সভাপতি পদে বারবার নির্বাচিত পৌর কাউন্সিলর মোঃ মিলু শরীফ দোয়াত কলম প্রতিক নিয়ে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। সভাপতি পদে আরো প্রার্থী হয়েছেন ঘোড়া প্রতিকের সৈয়দ আব্দুস সবুর, চশমা প্রতিকের এস,এম শাহিন বিপ্লব, চেয়ার প্রতিকের মোঃ নজরুল মোল্যা।
বিএনপির পৌর সাধারন সম্পাদক পদে শেখ রবিউল ইসলাম রবি ছাতা প্রতিকে, এসএম মশিয়ার রহমান সান্টু মোমবাতি প্রতিকে, মোঃ আকিদুল ইসলাম আনারস প্রতিক, মোঃ সামসুল হক আজাদ ফুটবল প্রতিক নিয়ে ভোট লড়াই করছেন।
এছাড়াও উপজেলা ও পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পদেও ভোট লড়াই হবে।
এখন দেখার বিষয় ২৬ তারিখ অনুষ্ঠিতব্য বিএনপির কাউন্সিলে লোহাগড়া উপজেলা ও পৌর বিএনপির নেতৃত্ব কোন চারজন নেতার হাতে উঠে।