ঢাকা (সকাল ১০:৩০) রবিবার, ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
শিরোনাম
Meghna News লোহাগড়ায় ন্যাশনালিষ্ট ব্লাড ব্যাংকের পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান Meghna News ট্রমালিংক ১০ বছর পূর্তিতে মতিন সৈকত এআইপিকে সন্মাননা Meghna News সরাসরি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনসহ একগুচ্ছ সুপারিশ সংস্কার কমিশনের Meghna News গণহত্যায় অভিযুক্ত আ.লীগের কেউ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবে না Meghna News বিএনপি যতই চাপ দিক, সংস্কারের ওপর ভিত্তি করেই নির্বাচন Meghna News সুন্দর ব্যবহার ও আচরণের বিনিময়ে জান্নাত! Meghna News আল্লাহর পথে আহ্বানকারীর জন্য রয়েছে বিশেষ পুরস্কার Meghna News ভঙ্গুর শিক্ষা ব্যবস্থা দ্রুত সংস্কার করবো: ভিসি আমানুল্লাহ Meghna News গৌরীপুরে উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারের বর্ণিল বিদায় সংবর্ধনা Meghna News স্বামীর মধুময় স্মৃতি রোমন্থনে দিন কাটছে স্ত্রী মারজিনার

সিলেটের আবাসিক হোটেলগুলোতে গড়ে উঠেছে পতিতালয়ের আড্ডা খানা

মোঃইবাদুর রহমান জাকির মোঃইবাদুর রহমান জাকির Clock বুধবার রাত ০১:১৯, ৩ নভেম্বর, ২০২১

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারি ও থানা পুলিশের গাফিলতির অভাবে সিলেটের আবাসিক হোটেলগুলোতে গড়ে উঠেছে মিনি পতিতালয়। একাধিকবার পুলিশ লোক দেখানো অভিযান চালালেও পতিতালয়গুলো কোনভাবে বন্ধ হচ্ছে না।

সিলেটের উত্তর সুরমা ও দক্ষিণ সুরমার অন্তত ১০টি আবাসিক হোটেলে চলছে এ ব্যবসা। আবাসিক হোটেল ছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ফাঁকি দিয়ে সিলেট নগরীর বিলাসবহুল বাসা-বাড়িতে চলছে এই অসামাজিক ব্যবসা।

আবাসিক হোটেল ছাড়াও সিলেটের বিলাস বহুল বাসা-বাড়িতে জমে উঠেছে অসামাজিক ব্যবসা। এমনকি এসব বাসা-বাড়িতে ঘণ্টা চুক্তিতে ফূর্তির জন্য ঢাকাসহ দেশের বিভিন্নস্থান থেকে নিয়ে আসা হয় হাইপ্রোফাইল তরুণীদের। এদের মধ্যে ডিজে পার্টির তরুণীসহ মিউজিক ভিডিওতে অংশ নেয়া তরুণীরাও রয়েছেন বলে পুলিশ সূত্র জানায়।

অসামাজিক ব্যবসা বন্ধের জন্য এবার মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে মেট্রো আইনে মামলা না করে হোটেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মানব পাচার আইনেও মামলা করা হচ্ছে। সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনারের নির্দেশে আবাসিক হোটেলগুলোতে অসামাজিক ব্যবসা বন্ধের জন্য অভিযান জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। সেই সাথে আবাসিক হোটেলগুলোতে নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে।

সূত্র জানায়, কয়েক বছর আগে কাস্টঘর-সন্ধ্যা বাজার এলাকার একটি আবাসিক হোটেলে অভিযান চালিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছিলেন মেয়র আরিফ। এরপর থেকে বন্ধ হয়ে যায় সেই আবাসিক হোটেলের পতিতা ব্যবসা। এরপর থেকে লালদিঘীরপাড়, তালতলা, সুরমা মার্কেট ও দক্ষিণ সুরমার বেশ কয়েকটি হোটেলগুলোতে শুরু হয় জমজমাট পতিতা ব্যবসা। থানা ও ফাঁড়ি পুলিশকে মাসোহারা দিয়ে ম্যানেজ করেই আবাসিক হোটেলগুলোতে দিনে দিনে জমে উঠে এই অনৈতিক ব্যবসা। তবে পুলিশ বলছে, যেসব মার্কেটের উপর আবাসিক হোটেল রয়েছে এসবের উপর নজরদারি বাড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের প্রয়োজনে পুলিশের সহযোগীতা নেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

সুরমা মার্কেটের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, থানা থেকে সুরমা মার্কেটে অবস্থিত আবাসিক হোটেলের দূরত্ব বেশী নয়। এর মধ্যে এই মার্কেটের বদরুল রেস্টহাউস ও নিউ সুরমা হোটেলে দীর্ঘদিন থেকে পরিচালিত হচ্ছে নারী ব্যবসা। পূর্বে অর্ধশতাধিকবার অভিযান চালালেও পুলিশ এই অনৈতিক ব্যবসা বন্ধ করতে পারেনি। চিহ্নিত কয়েকজন ব্যক্তির শেল্টারে ও পুলিশের মাঠ পর্যায়ের সদস্যরা মিলে অসামাজিক কর্মকাণ্ডের নিরাপদ আস্থানা হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে।

সিলেট মহানগর পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনারর আশরাফ উল্যাহ তাহের বলেন, সিলেট মহানগরী আবাসিক হোটেলগুলোকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। সেই সাথে হোটেলগুলো থেকে অসামাজিকতা দূর করার জন্য প্রতিনিয়ত অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। এসব অনৈতিক কাজ বন্ধ করার জন্য স্থানীয়দেরকে এগিয়ে আসার পাশাপাশি পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহযোগীতা করার আহ্বান জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

পুলিশ সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ লালদীঘিরপাড়স্থ সোনালী আবাসিক হোটেলে অসামাজিক কাজে লিপ্ত থাকা অবস্থায় ১০ নারী-পুরুষকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃত হচ্ছে- জাকির আহমদ, পিন্টু দাস, মো. সাজু মিয়া, নুরু মিয়া, মো. মইনুল হক, শুভ দাস, বৃষ্টি আক্তার, সাথী আক্তার, স্মৃতি ও রুনা আক্তার।

এদিকে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে হোটেলের মালিক তাজু ওরফে কানা তাজুসহ আরও কয়েকজন পালিয়ে যায়। হোটেল সোনালীতে তাজু ওরফে কানা তাজু ও ম্যানেজার নুরু মিয়া দীর্ঘদিন ধরে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে তরুণী ও যুবতীদের হোটেলে নিয়ে রাখছেন এবং তাদের দিয়ে পতিতাবৃত্তির কাজ করাচ্ছেন। কানা তাজু সিলেট নগরীর পরিচিত হোটেল ব্যবসায়ী। দীর্ঘদিন ধরে সে হোটেল ব্যবসার আড়ালে অসামাজিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। তার সঙ্গে কোতোয়ালি থানা ও বন্দরবাজার ফাঁড়ি পুলিশের মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের সখ্যতা রয়েছে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।

এদিকে টানা ৩ দিন সিলেটের সুরমা মার্কেটের অসামাজিক কর্মকাণ্ডের জন্য অভিযুক্ত দুটি হোটেলে অভিযান চালিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। এরমধ্যে নিউ সুরমা হোটেল থেকে ৯ জন ও বদরুল রেস্টহাউস থেকে ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এঘটনায় গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা হয়।

অপরদিকে গত ১৪ সেপ্টেম্বর নগরীর কালিঘাটস্থ বন্ধু আবাসিক হোটেল থেকে অসামাজিক কার্যকলাপের দায়ে ১০ নারী-পুরুষকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ৬ জন নারী ও ৪ জন পুরুষ। এছাড়াও গত ২৬ মে কোতোয়ালি থানাধীন সুরমা মার্কেটস্থ নিউ সুরমা আবাসিক হোটেলে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। এসময় অসামাজিকতার দায়ে ২ নারীসহ ৪জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে, জালালাবাদ থানাধীন জঙ্গারকান্দি গ্রামের নূর ইসলামের ছেলে মিলন (২৪) ও জকিগঞ্জের কসকনপুর বিয়াবাই গ্রামের আব্দুল মানিকের ছেলে লিটন আহমদ (২০)।

এছাড়া গত ২৭ আগস্ট সিলেটের দক্ষিণ সুরমার তিতাস আবাসিক হোটেলে অভিযান চালিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপের দায়ে ৫ পুরুষ ও ২ নারীকে গ্রেফতারে করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছেন- বি-বাড়ীয়া জেলার সরাইল থানার শাহাজাদপুর উচাবাড়ী গ্রামের মৃত ধনু মিয়ার ছেলে সাচ্ছু মিয়া শান্ত (২৬), একই থানার শাহাজাদপুর (কোয়ালীপাড়া) গ্রামের মৃত জহুর মিয়ার ছেলে মো: বাবুল মিয়া (৪০), সিলেটের গোয়াইনঘাট থানার গুয়াইন পূর্বপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল খালিকের ছেলে ও তিতাস হোটেলের ম্যানেজার গিয়াস উদ্দিন (৪৪), মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং থানার বালিগাঁও বিক্রমপুর গ্রামের আকবর খালাসী গ্রামের রানা মিয়া খালাসী (২৭), বি-বাড়ীয়া জেলার বিজয়নগর থানার মীরপুর গ্রামের মৃত সাহেব আলীর ছেলে মো. হেবজু মিয়া (২৯), সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর থানার বারিক টিল্লা গ্রামের আব্দুল কাদিরের মেয়ে বৃষ্টি (২৭) ও হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং থানার উত্তর সানগড় গ্রামের সুমন মিয়ার স্ত্রী কনকা সরকার শিউলী (৩০)।




শেয়ার করুন

GloboTroop Icon
পাঠকের মতামত

মেঘনা নিউজ-এ যোগ দিন

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর



© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT