ধর্মপাশায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমাণ্ডারের সঙ্গে কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপকের অশুভ আচরণ:সুবিচার চেয়ে ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ
মোবারক হোসাইন,ধর্মপাশা(সুনামগঞ্জ) মঙ্গলবার বিকেল ০৪:৫৮, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন তালুকদারের সঙ্গে ধর্মপাশা কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মো,রিপন মিয়া অশুভ আচরণ, দূর্ব্যবহার ও ঋণ আদায়ে সাদা কাগুজে মুচলেকা নেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে ভুক্তভোগী সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমাণ্ডার গতকাল সোমবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
ইউএনওর কাছে দেওয়া লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয়দের সেঙ্গে কথা বলে জানা গেছে,গত ১৭সেপ্টেম্বর সকাল ১১টার দিকে ধর্মপাশা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমাণ্ডার রুহুল আমিন তালুকদার ধর্মপাশা কৃষি ব্যাংকে থাকা ঋণ পরিশোধ করার উদ্দেশ্যে ঋণ নেওয়া টাকার পরিমান জানতে তিনি ব্যাংকে যান। কৃষি ব্যাংকের পরিদর্শক বিকাশ রঞ্জন সরকারের সঙ্গে দেখা করে ব্যাংকে ঋণের পরিমান জেনে নেন ওই মুক্তিযোদ্ধা। হিসেব জেনে ওই মুক্তিযোদ্ধা ব্যাংক থেকে বেরিয়ে আসার সময় ব্যাংক ব্যবস্থাপক মো.রিপন মিয়া ওই ব্যাংকের একজন নিরাপত্তাকর্মীকে দিয়ে তাঁর কক্ষে সাবেক ওই মুক্তিযোদ্ধা কমাণ্ডারকে ডেকে নেন এবং তাঁর কাছে ব্যাংকে আসার কারণ জানতে চান । ওই মুক্তিযোদ্ধা তখন তাঁর মুক্তিযোদ্ধার পরিচয় ও ব্যাংকে আসার কারণ ওই শাখা ব্যবস্থাপককের কাছে তুলে ধরেন। শাখা ব্যবস্থাপক ওই মুক্তিযোদ্ধাকে চেয়ারে বসতে না বলে তাঁর সামনে এক সীট সাদা কাগজে এগিয়ে দেন এবং এতে ঋণ পরিশোধের ব্যাপারে ওই মুক্তিযোদ্ধাকে মুচলেকা দেওয়ার জন্য স্বাক্ষর দিতে চাপ সৃষ্টি করেন। কিন্তু সাবেক কমাণ্ডার এতে অসম্মতি প্রকাশ করেন। এক পর্যায়ে ও্ই শাখা ব্যবস্থাপক ওই মুক্তিযোদ্ধাকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠেন, আমার কাছে নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা কমাণ্ডার পরিচয় দিয়ে কোনো লাভ হবে না। এসবের কোনো কিছুতে আমি পাত্তা দিই না।
এমন অস্বাভাবিক আচরণে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন ওই মুক্তিযোদ্ধা। কাউকে কোনো কিছু না বলে তিনি উপজেলার থানা রোডে থাকা নিজ বাসায় চলে যান।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমাণ্ডার রুহুল আমিন তালুকদার বলেন,আমি ঋণের টাকা পরিমান কতো হয়েছে এটি জানতে ওইদিন কৃষি ব্যাংকে গিয়েছিলাম। কিন্তু ম্যানেজার আমার সঙ্গে যে অশুভ আচরণ ও দূর্ব্যবহার করেছেন তাতে আমি খুবই কষ্টে পেয়েছি। এই কারণে আমি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। আমার এই জীবনে কখনো এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হইনি। মানসিক দুশ্চিন্তায় আমি বেশ কয়েকদিন ধরে রাতে ঘুমুতে পারিনি। এ ঘটনায় ন্যায় বিচার চেয়ে ও ওই ব্যাংক ব্যবস্থাপককে বদলী করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমি ইউএনও স্যারের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করেছি।
কৃষি ব্যাংকের ধর্মপাশা শাখা ব্যবস্থাপক মো. রিপন মিয়া তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। আমি কোনো মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে অশুভ আচরণ ও দুর্ব্যবহার করিনি। আমার নাম জড়িয়ে যা প্রচার করা হচ্ছে তা মিথ্যা ও বানোয়াট।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও) মো.মুনতাসির হাসান বলেন, এ সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ আমি পেয়েছি। এ ব্যাপারে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।