ধর্মপাশার সানবাড়ীর কমরেড চৌধুরীর বিরুদ্ধে মন্দিরের অর্থ আত্মসাৎ ও জায়গা দখলের প্রতিবাদে মানববন্ধন
মোবারক হোসাইন ধর্মপাশা সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি রবিবার রাত ০৮:২২, ১৬ অক্টোবর, ২০২২
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার জয়শ্রী ইউনিয়নের সানবাড়ী সার্বজনীন হরিমন্দির পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি কমরেড চৌধুরীর বিরুদ্ধে মন্দির উন্নয়ন তহবিল ও শ্মশানঘাট বাবদ বরাদ্দ থেকে দেড় লাখ টাকা আত্মসাত এবং হরিমন্দিরের জায়গা দখলেরর প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার সানবাড়ী সার্বজনীন হরিমন্দির প্রাঙ্গণে মন্দির পরিচালনা কমিটি ও ভক্তবৃন্দ এই মানবন্ধনের আয়োজন করেন।
মানবন্ধনে বক্ত্যব্য রাখেন,সানবাড়ী সার্বজনীন হরিমন্দির পরিচালনা কমিটির উপদেষ্টা সুধাময় দাস,সানবাড়ী সার্বজনীন হরিমন্দির পরিচালনা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশবিহারী সরকার, সাধারণ সম্পাদক প্রভাত দাস,সাবেক সভাপতি গোপিকা রঞ্জন তালুকদার,সাবেক সাধারণ সম্পাদক অসীম কুমার তালুকদার,কোষাধ্যক্ষ বাবুল চন্দ্র তালুকদার প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন,জয়শ্রী ইউনিয়নের সানবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা কমরেড চৌধুরী ২০১৭সালের ১৮অক্টোবর থেকে ২০২০সালের ৩০ডিসেম্বর পর্যন্ত সানবাড়ী সার্বজনীন হরিমন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। ওই সময়ে তিনি হরিমন্দির উন্নয়নের জন্য ৭০টি রশিদের মাধ্যমে আদায়কৃত এক লাখ টাকা ও সানবাড়ী শ্মশানঘাট উন্নয়ন কাজের জন্য সরকারিভাবে আসা এক লাখ বরাদ্দ থেকে তিনি ৫০হাজার টাকা আত্মসাত করেছেন। মন্দির ও শ্মশানঘাটের উন্নয়ন কাজের এই টাকা নিয়ে সানবাড়ী গ্রামে একাধিকবার সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সালিশ বৈঠকে কমরেড চৌধুরী তাঁর কাছে টাকা পাওনা রয়েছে বলে স্বীকার করলেও টাকা পরিশোধ না করে আজকাল করে করে তিনি সময় অতিবাহিত করে আসছেন। কমরেড চৌধুরীর পরিবার এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় টাকা পরিশোধ না করে উল্টো হরিমন্দির পরিচালনা কমিটির সদস্যদের নানাভাবে হুমকি দামকি দিয়ে আসছেন। শুধু দেড় লাখ টাকা আত্মসাত করেই তিনি ক্ষ্যান্ত হননি। গত ২অক্টোবর তিনি উপস্থিত থেকে তাঁর লোকজন নিয়ে মন্দিরের প্রায় একশতক জায়গা দখল করে নিয়েছেন। মন্দিরের জায়গা দখল কেন ?মন্দিরও শ্মশানঘাটের দেড় লাখ টাকা আত্মসাত কেন ? সাবেক সভাপতি কমরেড চৌধুরীরর বিচার চাই. বিচার চাই বলে মানববন্ধনে শ্লোগান দেওয়া হয়।
সানবাড়ী সার্বজনীন হরিমন্দির পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রভাত দাস বলেন,আমাদের হরিমন্দির পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি কমরেড চৌধুরী প্রভাবশালী হওয়ায় তিনি মন্দির ও দেড় লাখ টাকা আত্মসাতসহ মন্দিরের প্রায় একশতক জায়গায় বাঁশের বেড়া দিয়ে অবৈধভাবে দখল করে নিয়েছেন। এ নিয়ে মন্দির পরিচালনা কমিটির পক্ষে আমরা ইউএনও স্যারের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করেছি। কমরেড চৌধুরীর পরিবার এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় তাঁরা আমাদেরকে নানাভাবে বিপদে ফেলার হুমকি দিয়ে আসছেন। এ নিয়ে মন্দির কমিটির পক্ষে আমরা তাঁর বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সানবাড়ী সার্বজনীন হরিমন্দির পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি কমরেড চৌধুরী ফোন ধরেননি। তবে তাঁর আপন ছোট ভাই সম্রাট চৌধুরী বলেন,আমার ভাইয়ের কাছে যদি মন্দির উন্নয়ন ও ও শ্মশানঘাটের বরাদ্দ বাবদ পাওনা টাকা থাকার প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে অবশ্যই তাকে টাকা পরিশোধ করতে হবে। এ ছাড়া যে কা্উকে মুখে মুখে আত্মসাতকারী ও দখলদার বললেই সে খারাপ হয়ে যায় না। আমরা মন্দিরের জায়গা দখল করিনি। আমরা আমদের জায়গায় বেড়া দিয়েছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও) মো.মুনতাসির হাসান বলেন, মন্দির ও শ্মশানঘাটের টাকা আত্মসাত ও মন্দিরের জায়গা দখলের সত্যতা পাওয়া গেলে জড়িত ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেব।