সুনামগঞ্জ সীমান্তে বাঁশের ছিপের চালান জব্দ করে নৌকা ছেড়ে দিয়েছে বিজিবি
মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়া,সুনামগঞ্জ বৃহস্পতিবার বিকেল ০৫:৪৫, ১৯ নভেম্বর, ২০২০
সুনামগঞ্জের বালিয়াঘাট সীমান্ত দিয়ে সোর্সদের পাচাঁরকৃত অবৈধ বাঁশের ছিপ বোঝাই ১টি ইঞ্জিনের নৌকা আটক করে চারাগাঁও সীমান্তের বিজিবি সদস্যরা। কিন্তু রহস্য জনক কারণে বাঁশের ছিপ আটক রেখে প্রায় ৫লক্ষ টাকা মূল্যের ইঞ্জিনের নৌকা আজ ১৯.১১.২০ইং বৃহস্পতিবার ভোরে ছেড়ে দিয়েছে চারাগাঁও ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যরা। এঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর পুরো সীমান্ত এলাকা জুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠে।
এব্যাপারে এলাকাবাসী জানায়- প্রতিদিনের মতো গতকাল ১৮.১১.২০ইং বুধবার রাত ১২টায় জেলার তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের বালিয়াঘাট সীমান্তের লালঘাট,লাকমা ও টেকেরঘাট এলাকা দিয়ে বিজিবি অধিনায়কের সোর্স পরিচয়ধারী ইয়াবা কালাম মিয়া,জানু মিয়া,হাসিম মিয়া,লেংড়া বাবুল,জিয়াউর রহমান জিয়া ও চারাগাঁও এর কদ্দুস মিয়া রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে বিপুল পরিমান বাঁশের ছিপ,ফালি (কাঠের বড় পিছ), লাকড়ি,কয়লা,মদ,গাঁজা ও ইয়াবা পাচাঁর করে বাড়িঘরের ভিতর লুকিয়ে রাখে। পরে রাত ১টায় সোর্স কালাম মিয়ার লালঘাটের বাড়ির সামনে দক্ষিণ পাশে অবস্থিত চুনখলার হাওরে চোরাচালানী হাসিম মিয়ার স্টিলবডি ইঞ্জিনের নৌকায় পাচাঁরকৃত ১৫০০পিছ বাঁশের ছিপ বোঝাই করে। এরপর চারাগাঁও ক্যাম্পের দক্ষিণে অবস্থিত সমসার হাওরের খাল দিয়ে যাওয়ার সময় ছোট ব্রিজের কাছ থেকে বাঁশের ছিপ বোঝাই নৌকাসহ মালামালের মালিক কদ্দুস মিয়া ও নৌকার মালিক হাসিম মিয়াকে আটক করে বিজিবি। পরে বিজিবি অধিনায়কের নির্দেশে আলোচনা সাপেক্ষে বাঁশের ছিপগুলো রেখে ৫লক্ষ টাকা মূল্যের ইঞ্জিনের নৌকাসহ নৌকার মালিক হাসিম মিয়া ও বাঁশের ছিপের মালিক কদ্দুস মিয়াকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এর আগে গত ২৭ অক্টোবর সোর্স ইয়াবা কালাম ও কদ্দুস মিয়ার পাচাঁরকৃত বাঁশের ছিপসহ আরো ১টি নৌকা আটক করেছিল চারাগাঁও ক্যাম্পের বিজিবি। কিন্তু এব্যাপারে কোন মামলা হয়নি। কারণ পাঁচারকৃত ১পিছ বাঁশের ছিপ থেকে ৫টাকা,১টি ফালি(কাঠের পিছ) থেকে ১শত টাকা,১ আটা লাকড়ি থেকে ২০টাকা থেকে ৫০টাকা,১বস্তা কয়লা থেকে ১২০টাকা,১কার্টন মদ থেকে ৮শত টাকা,১শত পিছ ইয়াবা থেকে সাড়ে ৩হাজার টাকা করে চাঁদা উত্তোলন করে সোর্স পরিচয়ধারী ইয়াবা কালাম,জিয়াউর রহমান জিয়া ও লেংড়া বাবুল। তাদের ৩জনের মধ্যে ইয়াবা কালামের নামে ইয়াবা,মদ,হুন্ডি ও কয়লা পাঁচার মামলা রয়েছে। আর লেংড়া বাবুলের নামে চুরি,চাঁদাবাজি,অস্ত্র মামলা এবং জিয়াউর রহমান জিয়ার নামে চাঁদাবাজি মামলা হয়েছিল। বড়ছড়া ও চারাগাঁও শুল্কস্টেশনের ব্যবসায়ীরা জানান- বিজিবি অধিনায়ক মাকসুদুল আলমকে অন্যত্র বদলি না করা হলে সোর্সদের দাপট ও চোরাচালান বন্ধ করা কখানোই সম্ভব হবেনা।
এব্যাপারে টেকেরঘাট বিজিবি কোম্পানীর এফএস মনির বলেন- বালিয়াঘাট সীমান্তের পাঁচারকৃত বাঁশের ছিপ বোঝাই নৌকা চারাগাঁয়ে আটক হওয়ার বিষয়টি জানতে পেরেছি,এব্যাপারে ভাল ভাবে খোঁজ খবর নিয়ে পরে আপনাকে জানাব। কিন্তু বিজিবি অধিনায়কের সোর্স পরিচয়ধারীদের চোরাচালান ও চাঁদাবাজির বিষয় নিয়ে সুনামগঞ্জ ২৮ব্যাটালিয়নের বিজিবি অধিনায়ক মাকসুদুল আলম মুখ খুলতে নারাজ। তার সরকারী মোবাইল নাম্বারে বারবার কল করার পর শুধু ব্যস্ত পাওয়া যায়। রহস্য জনক কারণে তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।