ধলেশ্বরী নদী ও জিয়া খাল ধ্বংস করে চলছে অবৈধ মাটি উত্তোলনের মহাউৎসব
শাকিল হোসেন শওকত,নাগরপুর,টাঙ্গাইল মঙ্গলবার সন্ধ্যা ০৬:৫১, ১৩ এপ্রিল, ২০২১
টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে গেছে যমনুার শাখা নদী ও ধলেশ্বরী নদী। ধলেশ্বরীর ভাঙ্গন ও বন্যার পানি থেকে উপজেলাকে রক্ষা করতে প্রতিবছর বাধ ও খাল খনন করা হয়ে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম একটি খাল হল জিয়া খাল, এই খালটি সহবতপুর ইউনিয়নের উপর দিয়ে বয়ে গিয়ে ধলেশ্বরী নদীর সাথে মিলিত হয়েছে।গত বছর খালটির নাব্যতা ফেরাতে পুনরায় খনন করা হয়।
২ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ব্যায়ে ২০২০ সালে ধলেশ্বরীর শাখা নদী জিয়াই খাল- কাশাদহর মেম্বার বাড়ি পর্যন্ত খনন করে পাড় মেরামত করা হয়। আর এই নবনির্মিত খালপাড়ে উভয় পাড়ে ১০ মিটার পরপর রোপণ করা জাম, নীম, মেহেগুনী, নারিকেল সহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা।
কিন্তু অবৈধ মাটি উত্তোলনকারীদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি খাল, খালপাড় সহ গাছের চারা। খালটি ও সংযুক্ত নদী ধ্বংস করে চলছে মাটি উত্তোলণের মহা উৎসব।
সরেজমিনে ধলেশ্বরী নদী ও নদী সংযুক্ত জিয়া খালটির বিভিন্ন স্থানে গিয়ে দেখা যায়, এস্কেভেটর(ভেকু) ও বেলচা দিয়ে খাল ধ্বংস করে মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে। আর এসব মাটি অবৈধ ট্রাক্টর/ট্রলি ব্যবহার করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে পার্শ্ববর্তী ইট ভাটা গুলোতে।
যদিও ইট প্রস্তুত ও ইট ভাটা স্থাপনা আইন অনুযায়ী, ইটাভাটা পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ও অনুমোদন ছাড়া কোনো ব্যক্তি ইট তৈরির জন্য কৃষিজমি, পাহাড়, টিলা, মজা পুকুর, খাল, বিল, খাঁড়ি, দিঘি, নদ-নদী, বা পতিত জায়গা থেকে মাটি কাটা নিষিদ্ধ। এছাড়াও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক নির্মিত উপজেলা, ইউনিয়ন বা গ্রামীণ সড়ক ব্যবহার করে, ভারি যানবাহন দ্বারা ইট বা ইটের কাঁচামাল পরিবহন না করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হিসেবে উল্লেখ আছে (৫ ধারা)। তবুও এই আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে একটি মহল নদী ও খাল কেটে মাটি উত্তোলন করছে।
স্থানীয় জমির মালিকরা ভয়ে মুখ না খুলতে চাইলেও তাদের দাবি, আমরা নিষেধ করলেও, মাটির ট্রলি গুলো আমাদের কথায় কোন কর্ণপাত করে না। উৎসবের মতই চলে রাত-দিন চলে অবৈধ মাটি উত্তোলন।এমনকি নদী ও খালসহ আবাদি ফসলি জমি কেটেও মাটি উত্তোলন করা হয়। এর ফলে প্বার্শবতর্ত্তী অন্যান্য জমি ভেঙ্গে নদীতে বিলীন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অপর দিকে, অপরিকল্পিত ভাবে মাটি খননের ফলে পুরো উপজেলা রয়েছে নদী ভাঙ্গনের কবলে।
মাটি উত্তোলনের ব্যাপারে সহকারি কমশিনার ( ভূমি ) তারিন মশরুর বলেন অবৈধ মাটি উত্তোলন এর ব্যাপারে আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। খালের ব্যাপারটা তদন্তাধীন রয়েছে তদন্ত প্রতিবেদন পেলে বিধি মোতাবেক ব্যাবস্থা নিব।