অতিরিক্ত জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে ভোলার ইলিশা ফেরিঘাট
নিজস্ব প্রতিনিধি বুধবার দুপুর ০২:৩০, ১ জুলাই, ২০২০
কামরুজ্জামান শাহীন, ভোলা প্রতিনিধি: অতিরিক্ত জোয়ারের পানির তলিয়ে গেছে ভোলার ইলিশা ফেরিঘাট। এতে যাত্রীবাহি পরিবহন, পণ্যবাহী পরিবহনগুলো ফেরিতে ওঠা-নামা করতে পারছে না। জোয়ার-ভাটার উপর নির্ভর করে চলাচল করতে হচ্ছে ফেরিগুলোকে।
হাই-ওয়াটার ঘাট সংস্কার না করায় গত দেড় মাস ধরে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ করছেন ফেরি কর্তৃপক্ষ। ঘাটটি দ্রুত সংস্কারের জন্য দাবী জানিয়েছেন তারা।
এদিকে ঘাটের সমস্যার কারণে একদিকে যেমন চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছেন পরিবহন চালক-শ্রমিকরা, অন্যদিকে এ অঞ্চলের যাত্রীরাও চরম বিড়ম্বনায় মধ্যে পড়ছেন। নির্দিষ্ট সময় গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছে না কোনো যানবাহন। ঘন্টার পর ঘন্টা ঘাটেই অপেক্ষা করতে হয় তাদের।
স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, ভোলা-লক্ষীপুর রুটে জোয়ারের পানিতে ঘাট তলিয়ে যাওয়ায় ভোলা অংশের ইলিশা ঘাট এবং নদীর নাব্যতা সংকটে লক্ষীপুর অংশের রহমতখালী পয়েন্টে নাব্যতা সংকট দেখা দিয়েছে। এতে প্রতিদিন ৬ ঘন্টা ফেরি চলাচল বন্ধ রাখতে হচ্ছে। যে কারণে উভয় পাড়ে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানযট।
ভোলার দায়িত্বপ্রাপ্ত বিআইডব্লিউটিসির ফেরির কর্মকর্তা মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্পানের সময় হাই ওয়াটার (উঁচুঘাট) ঘাটটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরপর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পন্টুনটিও। এ দুটির মেরামত কাজ চলছে, কিন্তু এখন পর্যন্ত ঘাটের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসেনি। এতে ফেরির ট্রিপ কমে গেছে। আগে যেখানে দৈনিক ৮ বার করে ফেরি আসা-যাওয়া করত সেখানে বর্তমানে ৪ বারের বেশি ট্রিপ দিতে পারছে না। এতে সবার ভোগান্তি হচ্ছে। ফেরি ট্রিপ কমে যাওয়ায় ঘাটেও দীর্ঘ লাইন থাকছে। এছাড়াও বাঁধের কারণে ঠিকমত গাড়ি উঠতে পারছে না।
জানা গেছে, ভোলার সঙ্গে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোর যোগাযোগের একমাত্র সহজ মাধ্যম ভোলা ইলিশা-মজুচৌধুরীর,লক্ষীপুর ফেরি রুট। দেশের দীর্ঘতম এ রুটে প্রতিদিন ৩টি করে ফেরি চলচলা করে আসছে। হাজার হাজার যাত্রী ও পরিবহন নির্ভনশীল এ রুটটির ওপর।
মঙ্গলবার(৩০ জুন) ভোলা ইলিশা ফেরী ঘাটে অপেক্ষমান যাত্রী এম শাহাদাত হোসেন জানান, জোয়ারের পানিতে পুরো ঘাট তলিয়ে রয়েছে, এ অবস্থায় মানুষ কীভাবে ফেরিতে উঠবো। কয়েক ঘন্টা অপেক্ষা করছি। জোয়ারের পানি না কমা পর্যন্ত ফেরিতে ওঠা যাবে না।যাত্রী ও জনসাধারনের দূর্ভোগের কথা বিবেচনা করে দ্রুত ফেরী ঘাটটি সংস্কার করা প্রয়োজন।
অপর এক যাত্রী কামাল হোসেন জানান, আমরা প্রায় এ রুট দিয়ে যাতায়াত করি কিন্তু মাঝে মধ্যে এমন বিড়ম্বনার মধ্যে পড়ছি। যাত্রীদের কথা বিবেচনা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে ফেরী ঘাটটি সংস্কার করা দরকার।
কয়েকজন ট্রাক চালক ও শ্রমিক অভিযোগ করেন, ভোলা-লক্ষীপুর রুটটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু সে তুলনায় এখানে একের পর এক সমস্যা লেগেই রয়েছে। তাই দীর্ঘতম রুটটির সব সমস্যা সমাধানের দাবি জানান তারা।
এ ব্যাপারে ভোলার দায়িত্বপ্রাপ্ত বিআইডব্লিউটিএ উপ-পরিচালক মো.কামরুজ্জামান বলেন, হাই ওয়াটার ঘাটের পন্টুনটি মেরামত হয়ে গেছে, কয়েকদিনের মধ্যে সেটি ঘাটে যুক্ত করা হবে। তখন আর এ সমস্যা থাকবে না।