নারায়ণগঞ্জে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫২
ডেক্স রিপোর্ট শুক্রবার সন্ধ্যা ০৭:১২, ৯ জুলাই, ২০২১
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান সেজান জুস কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫২ জন নিহত হয়েছে বলে ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানিয়েছে। এদের মধ্যে ঘটনাস্থলে ৪৯ জন এবং হাসপাতালে ৩ জন মারা যায়।
সজীব গ্রুপের এম এ হাসেম বলেন,”কারখানাটিতে প্রায় ৬০০-৭০০ জন শ্রমিক কাজ করতেন।”তিনি বলেন, আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো আমার ছেলেমেয়েদের পাশে থাকতে। এটা একটা দূর্ঘটনা। ফ্যাক্টরির সবগুলো ইউনিট চালু ছিলো না। লোকজন কম ছিলো। তারপরেও যারা ছিলো তারা সবাই চেষ্টা করেছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে, কিন্তু পারেনি।হাসেম দাবি করেন, বিল্ডিংয়ে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ছিল।
লাশগুলো ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ঘটনার পরপরই কারখানা ভবন থেকে দুটি লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে আগুন থেকে বাঁচতে কারখানার তৃতীয় তলা থেকে লাফ দেয়া আরেকজন আহত শ্রমিক রাত ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে।
বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। মুহূর্তের মধ্যে আগুনের শিখা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে।
আহতদের মধ্যে দশজনকে তৎক্ষণাৎ ঢাকা মেডিকেলে এবং ১৬ জনকে রূপগঞ্জের ইউএস বাংলা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। অগ্নিকাণ্ডে আহতদের অনেকেই ছাদে আশ্রয় নেন এবং ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়েন। দুর্ঘটনার সময় কারখানার ভেতরে ঠিক কতজন উপস্থিত ছিল তা এখন পর্যন্ত জানা যায় নি।
কারখানার শ্রমিক মোহাম্মদ সাইফুল জানান,অগ্নিকাণ্ডের সময় ভেতরে কয়েক ডজন মানুষ ছিল।সাইফুল বলেন,”তৃতীয় তলায় উভয় পাশের সিঁড়ির দরজা বন্ধ ছিল। আমার অন্যান্য সহকর্মীদের মতে, ভেতরে ৪৮ জন আটকা ছিল। আমি জানি না তাদের ভাগ্যে কী ঘটেছে”।
এই মুহুর্তে ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট ঘটনাস্থলে নিয়োজিত রয়েছে। এখন পর্যন্ত আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা যায় নি।
এদিকে অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান। তিনি শ্রম মন্ত্রণালয়ের অধীন শ্রমিক কল্যাণফাউন্ডেশন তহবিল থেকে নিহতদের স্বজনদের সহায়তার ঘোষণাও দেন।
শুক্রবার (৯ জুলাই) এক শোক বার্তায় প্রতিমন্ত্রী শোক জানান এবং শ্রমিক কল্যাণ তহবিল হতে সহায়তার ঘোষণা দেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন,”যেসকল শ্রমিক আহত হয়ে চিকিৎসাধীন তাদের শ্রমিক কল্যাণ তহবিল হতে চিকিৎসা সহায়তা দেয়া হবে।” শ্রম মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো.আকতারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়।