টাঙ্গাইলে ৭.৫ কোটির টাকার দরপত্র নিয়ে মারামারি;লটারি কার্যক্রম স্থগিত
নিজস্ব প্রতিনিধি সোমবার রাত ১০:৫১, ১৭ জানুয়ারী, ২০২২
নাগরপুরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়ের অধীনে গ্রামীণ রাস্তায় সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের প্রায় সাড়ে সাত কোটির টাকার দরপত্রের লটারি নিয়ে মারামারি ঘটনা ঘটেছে।
এছাড়াও গতকাল ১৬ জানুয়ারী রবিবার ১ কোটি ২১ লাখ টাকার হেয়ারিং বন্ডের কাজের সিডিউল বিক্রি না করার অভিযোগ উঠেছে পিআইও অফিসের বিরুদ্ধে।
হেয়ারিং বন্ডের দরপত্র ক্রয় করতে আসা ঠিকাদার মজিবর ও আজিজুল বলেন, গতকাল আমরা দরপত্র ক্রয় করতে পিআইও অফিসে গেলে অফিস তালাবদ্ধ দেখে প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার মো. আবু বকরকে ফোন দিয়ে সিডিউলের প্রসঙ্গে কথা শুরু করলে তিনি ফোন কেটে দেন। এ বিষয়ে অফিস থেকে কেউ কোন কথা বলতে অনীহা প্রকাশ করেন।
এ ঠিকাদারা অভিযোগ করে বলেন, পিআইও টাকা খেয়ে কাজ হয়তো কাউকে দিয়ে দিয়েছে।
অপর দিকে, লটারির এ ঘটনায় ৩ জন আহত হয়। পরে লটারির কার্যক্রম স্থগিত করে দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত-ই-জাহান।
১৭ জানুয়ারী সোমবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ হলরুমে এ ঘটনা ঘটে।
সংশ্লিষ্ট্য সূত্রে জানা যায়, ২০২১-২২ অর্থ বছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধিনে গ্রামীণ রাস্তায় ১৫ মিটার দৈর্ঘ্য সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পের অধীনে গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর নাগরপুরে ১০টি সেতুর জন্য সাত কোটি ২৩ লাখ ৭৫ হাজার ১২৬ টাকার দরপত্র আহবান করা হয়। দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল ২০২২ সালের ৫ জানুয়ারি। সে অনুয়ায়ী সোমবার ছিল লটারীর নির্ধারিত দিন। দুপুর ১টার দিকে লটারি শুরু করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। লটারির শেষ মুহুর্তে এসে দুটি কাজের লটারি বাকি থাকতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কুদরত আলী কাশাদহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে খালের উপর প্রায় ৭২ লাখ টাকার সেতু নির্মাণের কাজটি লটারি না করতে ইউএনও ও অংশ গ্রহনকারী সকল ঠিকাদারকে অনুরোধ করেন। তার অনুরোধে সকলে সম্মতি জানায়।
পরে, উপজেলা ছাত্রলীগও অপর একটি কাজের দাবি জানায়। এ ঘটনায় ঠিকাদাররা আপত্তি জানলে শুরু হয় উত্তেজনা। হলরুমের ভেতর ব্যপক হট্রগোলের সৃষ্টি হয়। শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি।
মেসার্স তাবিয়া এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী পারভেজ হাসান অভিযোগ করে বলেন, ওনাদের হাতাহাতির ঘটনায় এসময় আমি সহ আহত হন আমিন টেডার্সের কাজি জহির সুমন, নজরুল টেডার্সের নজরুল ইসলাম। এ ঘটনায় ঠিকাদারদের বিক্ষোভের মুখে ইউএনও লটারী স্থগিত করেন।
এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে ও হামলাকারীদের বিচার চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর চিঠি দিয়েছেন জেলার ঠিকাদার নেতৃবৃন্দ।
এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কুদরত আলী বলেন, কোন মারামারির ঘটনা ঘটেনি। লটারির শেষ মুহুর্তে একটি সেতুর কাজ চেয়েছিলো ছাত্রলীগ। ভিডিও করা ও ঠিকাদারদের বসা নিয়ে একটু ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটেছে।
দরপত্র না বিক্রি করা এবং মারামারির বিষয়ে কথা বলতে উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার মো. আবু বকরকে একাধিক বার মুঠোফোনে কল করেও তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। এছাড়াও কথা বলতে তার অফিসে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
নাগরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত-ই-জাহানের মুঠো ফোনে একাধিকবার কল দেয়া হলেও তিনি তা ধরেননি। তবে তার স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, লটারির শেষ সময়ে এসে ঠিকাদারদের মধ্যে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। বিশৃংখলা পরিস্থিতির কারণে লটারীর সকল কার্যক্রম বাতিল করা হয়েছে।