মশার কয়েলের আগুন কেড়ে নিলো শারীরিক প্রতিবন্ধির জীবন
ইকবাল হাসান,নড়াইল শুক্রবার বেলা ১২:৩১, ১৯ মার্চ, ২০২১
নড়াইলের লোহাগড়ায় মশার কয়েলের আগুন কেড়ে নিয়েছে শারীরিক প্রতিবন্ধি মোঃ বাবর আলীর(৪০) জীবন। শোবার ঘরেই আগুনে দগ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে তাকে। জন্মগতভাবেই মোঃ বাবর আলী ছিলেন শারীরিক প্রতিবন্ধি। বাবরের ডান পা ও ডান হাত ছিল অচল। কোন রকমে কথা বলতে পারতেন। শুক্রবার(১৯ মার্চ) ভোর ৪টার দিকে লোহাগড়া পৌর এলাকার রামপুর গ্রামে এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় হতবাক ও বাকরুদ্ধ তার পরিবারের সদস্যসহ এলাকার সকলেই।
পারিবারিক সূত্র জানায়, লোহাগড়া পৌরসভার ০৮ নং ওয়ার্ডের রামপুর গ্রামের মৃত ফকির নায়েব আলীর ৩ ছেলে ও ২ মেয়ে। রয়েছেন স্ত্রীও। প্রতিবন্ধি মোঃ বাবর আলী সবার বড়। পিতার মৃত্যুর পর ভাইয়েরাই সংসার দেখভাল করেন। একা টিনসেড ঘরে বসবাস করতেন প্রতিবন্ধি মোঃ বাবর আলী।
গত বৃহস্পতিবার(১৮ মার্চ) রাত ১০ টার দিকে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন বাবর আলী। সে ঘুমই ছিল যেন চিরকালের ঘুম। শুক্রবার(১৯ মার্চ) ভোর ৪টার দিকে ঘরে মশা তাড়াতে জ্বালানো মশার কয়েল থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। খুব দ্রুতই ঘরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। পরিবারের সদস্যরাসহ গ্রামের লোকজন আগুনের বিষয়টি টের পাবার সাথে সাথে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। এরই মধ্যে লোহাগড়া উপজেলার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরী হয়ে গেছে। শারীরিক প্রতিবন্ধি মোঃ বাবর আলীর বাঁচার আকুতি থাকলেও চলাচলে অক্ষম হওয়ায় ঘর থেকে বের হতে পারেননি। শরীরের ৯০ ভাগই আগুনে পুড়ে তার মৃত্যু হয়েছে।
মা- দোলেনা বেগমসহ পরিবারের সদস্যরা শোকে মূর্ছা যাচ্ছেন। নিহত মোঃ বাবর আলীর ভাই মোঃ বাদলসহ অন্যরা জানান অগ্নিকান্ডে ভাইয়ের জীবন গেছে। ঘরসহ আসবাবপত্র পুড়ে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৪/৫ লাখ টাকার।
লোহাগড়া উপজেলার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার মোঃ মাসুদ রানা বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়েছি। কিন্তু ততক্ষণে মোঃ বাবর আলীর মৃত্যু হয়েছে। মশার কয়েল থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে তিনি জানান।
লোহাগড়া থানার এস,আই মোঃ মাহফুজ জানান, অগ্নিকান্ডের ঘটনা শুনে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। তার মৃত্যুটা মর্মান্তিক। পারিবারিক সূত্র জানায়, রামপুর দরগাহ এ শুক্রবার সকাল ১০টায় নামাজে জানাজা শেষে লক্ষীপাশাস্থ কেন্দ্রীয় গোরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়।