আলু বিক্রির আড়াই কোটি টাকা নিয়ে উধাও কোল্ড স্টোরেজের ম্যানেজার
হোসাইন মোহাম্মদ দিদার (দাউদকান্দি) কুমিল্লা বৃহস্পতিবার দুপুর ০১:২৬, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
দাম বৃদ্দি পাওয়ায় কৃষক ও ব্যবসায়ীদের সংরক্ষিত আলু বিক্রি করে আড়াই কোটি টাকার নিয়ে উধাও খোদ কোল্ড স্টোরেজের হিসাবরক্ষক।
এমন অভিযোগ উঠেছে হিমাগার মালিক ও ম্যানেজারের নামে। পুলিশ সুপারের বরাবর লিখিত অভিযোগ করেও কোন সুরাহা না পেয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে অভিযোগ তুলেন ক্ষতিগ্রস্ত শতশত কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। দাউদকান্দির গৌরীপুর আইস এন্ড কোল্ড স্টোরেজের নামে গড়ে উঠা এমন অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে গিয়ে ওই কোল্ড স্টোরেজের লেবার সরদার ছাড়া আর কাউকে পাওয়া যায়নি।
আজ (২১ সেপ্টেম্বর) বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার আমিরাবাদে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও কৃষকরা সংবাদ এসব অভিযোগের আদ্যোপান্ত তুলে ধরেন। গৌরীপুর ইউনিয়নের আমিরাবাদ এলাকার মেসার্স ইকরা বানিজ্যালয়ের মালিক অলি উল্লাহ ফকির বলেন, “আমি দীর্ঘদিন যাবৎ এই হিমাগারে আলুসহ বিভিন্ন কাঁচামাল সংরক্ষণ করি। পরবর্তীতে চাহিদা অনুযায়ী তা বাজারে সরবরাহ করি। এবছর মার্চ মাসে গৌরীপুর স্টোরেজে প্রতি বস্তায় ৬৫ কেজি করে ৪ হাজার ৬১৭ বস্তা আলু সংরক্ষণ করি। তিন মাস পর হিমাগারের ভাড়া পরিশোধ করে একহাজার ৬৫৮ বস্তা আলু উত্তোলন করি। বাকি ২হাজার ৯৫৯ বস্তা আলু আজ দিবে, কাল দিবে বলে টালবাহানা করে। এনিয়ে হিমাগার কর্তৃপক্ষের সাথে একাধিক দেন দরবারও হয়েছে। উপায় না পেয়ে পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছি। পরে হিমাগরের ম্যানেজার শাহিন সরকার আমার সংরক্ষিত আলুর ক্ষতিপূরণ বাবদ ৪৩লাখ টাকা নির্ধারন করে আগষ্টের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে পরিশোধ করবে বলে তিন’শ টাকার ননজ্যুডিশিয়াল স্টাম্পে অঙ্গিকারনামা করেন। এরপর আজ না কাল এভাবে আমার সাথে কালক্ষেপণ শুরু করে। গত ৩০আগষ্ট সাক্ষীদের নিয়ে গৌরীপুর আইস এন্ড কোল্ড ষ্টোরেজে গেলে তারা আমার সাথে খারাপ আচরণসহ বিভিন্ন ভয়ভাতি প্রদর্শন করে যে, ভবিষ্যতে তাদের নিকট টাকা পয়সা চাহিলে কিংবা তাদের হিমাগারে গেলে আমাকে মিথ্যা মামলা দিয়া হয়রানীসহ প্রাণনাশের হুমকি দেয়। আমি ছাড়াও আরও অনেক ব্যবসায়ী ও কৃষকদের সাথে প্রতারণা করে ৮/৯ হাজার বস্তা আলু বিক্রি করে এখন কোল্ড ষ্টোরেজ তালাবদ্ধ করে রেখেছে।”
বারপাড়া ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামের কৃষক খোকন মিয়া ও জহির মিয়া বলেন,” আমরা বীজ আলুসহ চার’শ বস্তা আলু গৌরীপুর কোল্ড স্টোরেজে রাখছি। কয়েকদিন আগে আলু বের করতে গিয়ে দেখি কোনো আলু নেই। পরে ম্যানেজার বলে ভাই আমরা আলু বিক্রী করে ফেলেছি। এখন বাজারমূল্য হিসেবে আপনাদের টাকা পরিশোধ করে দিব। কিন্তু এখন ম্যানেজার বা মালিক কাউকেই খুজে পাচ্ছি না। এখন রক্ষকই ভক্ষক হয়ে গেছে।”
গৌরীপুর আইস এন্ড কোল্ড স্টোরেজের ম্যানেজার শাহীন সরদারের মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তাঁর সাথে কথা বলা যায়নি।
সরেজমিনে গৌরীপুর আইস কোল্ড স্টোরেজে গিয়ে লেবার সরদার মাসুদকে পাওয়া যায়। তিনি বলেন,” এখানকার সব আলু বিক্রি হয়ে গেছে। কে বিক্রি করেছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ম্যানেজার বিক্রি করে দিয়েছে। আজ ১০-১২দিন ম্যানেজার আসে না। মালিকপক্ষ জানে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে লেবার সরদার বলেন, আমি জিজ্ঞেস করেছি, মালিক বলছে জানে না।”