ধর্মপাশায় হাওরে ফসলরক্ষা বাঁধের আটমাস পরও মিলছে না চতুর্থ কিস্তির টাকা,বিপাকে কৃষক
মোবারক হোসাইন,ধর্মপাশা(সুনামগঞ্জ) শনিবার সন্ধ্যা ০৬:১৪, ২৮ নভেম্বর, ২০২০
হাওরের বোরো ফসলরক্ষা বাঁধের প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ শেষ হওয়ার আট মাস পেরিয়ে গেলেও সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলায় ১৭৯টি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) সদস্যরা এখনো চতুর্থ কিস্তির (চূড়ান্ত বিল) টাকা পাচ্ছেন না। অথচ আসন্ন বোরো মৌসুমে হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও মেরামত কাজের জন্য সোমবার থেকে বাঁধের জরীপ কাজ শুরু করা হবে জানিয়েছে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড ।প্রকল্প কাজ যথারীতি শেষ করে চতুর্থ কিস্তির চূড়ান্ত বিলের টাকা পিআইসিরা না পাওয়ায় তাঁদেরকে মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড, উপজেলা প্রশাসন ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ধরমপাশা উপজেলার চন্দ্র সোনার থাল, কাইলানী, ঘোড়াডোবা, জয়ধনা, গুরমা, সোনামড়ল, ধানকুনিয়া ও গুরমার বর্ধিতাংশ এই আটটি হাওর সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে রয়েছে। এই আটটি হাওরপাড়ের কৃষকদের নিয়ে ১৭৯টি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠন করা হয়। প্রকল্প কাজের জন্য বরাদ্দ নির্ধারণ করা হয় ৩৪ কোটি ৫৮লাখ টাকা। এর মধ্যে তাঁদেরকে দেওয়া হয়েছে ২১কোটি ৭৮লাখ টাকা।
নীতিমালা অনুযায়ী, গত বছরের ১৫ডিসেম্বরের মধ্যে ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ শুরু করে তা চলতি বছরের ২৮ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু কাজ শেষ হয়েছে ১৫মার্চ। চূড়ান্ত বিল (চতুর্থ কিস্তির) টাকা পরিশোধ করার জন্য উপজেলা কাবিটা প্রকল্প বাস্তবায়ন ও পর্যবেক্ষণ কমিটি সভা করে সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির কাছে গত ২৫মে একটি প্রতিবেদন পাঠানো হয়। কিন্তু এই সমস্যার এখনো সমাধান হয়নি।
উপজেলার চন্দ্র সোনার থাল হাওরের একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি কৃষক মুখলেছুর রহমান বলেন, আমাদের প্রকল্প কাজে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২২লাখ টাকা। টাকা পেয়েছি মাত্র ১২লাখ। অবশিষ্ট ১০লাখ টাকা পাওনা রয়েছে। গরু বিক্রি করে ও জমি বন্ধক দিয়ে পাওনাদেরদের ঋণ পরিশোধ করেছি। যথাসময়ে টাকা না পাওয়ায় সীমাহীন কষ্টের মধ্যে আছি। তিনি আরও বলেন, চতুর্থ কিস্তির টাকা না পেয়ে অনেক পিআইসির সদস্যদের (কৃষকদের)কে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে।
হাওর বাঁচাও আন্দোলনের ধর্মপাশা উপজেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক কৃষক আলা উদ্দিন বলেন, বাঁধের কাজ শেষ হওয়ার আট মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো পিআইসিদের বকেয়া চতুর্থ কিস্তির টাকাই এখনো পরিশোধ করা হয়নি। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখ ও হতাশাজনক।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.মুনতাসির হাসান বলেন,বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.সবিবুর রহমান বলেন, পিআইসিদের বকেয়া চূড়ান্ত বিলের (চতুর্থ কিস্তির) টাকা চেকের মাধ্যমে আগামী তিন চারদিনের মধ্যেই তাঁদেরকে দেওয়া হবে।