সুনামগঞ্জের বিএডিসির উপসহকারী প্রকৌশলীর অনিয়মের বিরুদ্ধে এক সেচ গ্রাহকের সংবাদ সম্মেলন
মোবারক হোসাইন,ধর্মপাশা,সুনামগঞ্জ রবিবার রাত ১০:৫৫, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২২
বিএডিসির সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী (সেচ) ও ধর্মপাশা উপজেলা সেচ কমিটির সদস্য সচিব মো.হাসান মাহমুদের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে রবিবার বিকাল তিনটার দিকে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ধর্মপাশা উপজেলা প্রেস ক্লাবের অস্থায়ী কার্যালয়ে উপজেলার ভাটাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ও অগভীর নলকূপের (সেচ) গ্রাহক কৃষক তারা মিয়া (৬০) এই সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
ভুক্তভোগী ওই গ্রাহকের লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন, ২০/৩০বছর ধরে উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের ভাটাপাড়া গ্রামের উত্তর পাশে কৃষক তারা মিয়া বোরো জমিতে অগভীর নলকূপ বসিয়ে ডিজেল মেশিন দিয়ে কাজ চালিয়ে আসছিলেন। সেচের লাইসেন্সের জন্য ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে তিনি আবেদন করেন। ওই বছরের ৬ নভেম্বর লাইসেন্সটি অনুমোদন দেওয়া হয়। লাইসেন্স খবরচ বাবদ উপসহকারী প্রকৌশলী (সেচ) হাসান মাহমুদ তার কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়েছেন।
নীতিমালা অনুযায়ী, একটি অগভীর নলকূপ (সেচ) থেকে আরেকটি অগভীর নলকূপের ৮২০ ফুট ও একটি অগভীর নলকূপ থেকে আরেকটি গভীর নলকূপ ১৮২০ ফুট দূরত্বে বসাতে হবে। কিন্ত আইন কানুনের কোনোরকম তোয়াক্কা না করে উপসহকারী প্রকৌশলী (সেচ) হাসান মাহমুদ আর্থিক সুবিধা নিয়ে ২০২০ সালের ৭ ডিসেম্বর তার অগভীর নলকূপ থেকে ৪০০ ফুট পশ্চিমে একই গ্রামের আবদুল খালেককে গভীর নলকূপ ও মাত্র ৩৫০ দক্ষিণ পূর্ব কোনে একই গ্রামের শাহ আলমকে সেচের লাইসেন্স দিয়েছেন।
গত বছরের ১০ ডিসেম্বর লাইসেন্স নবায়ন করতে তিনি সুনামগঞ্জ জেলা কার্যালয়ে যান। এ সময় হাসান মাহমুদ তার কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। নিরুপায় হয়ে তিনি তাকে ৩০হাজার টাকা দেন। অবশিষ্ট ২০ হাজার টাকা বোরো ফসল কাটার পর দেবেন বলে তিনি সময় নিয়ে আসেন।
লাইসেন্স নবায়ন ফি মাত্র এক হাজার টাকা জানার পর অবশিষ্ট ২০ হাজার টাকা তাকে আর দেননি কৃষক তারা মিয়া। এতে ওই উপসহকারী প্রকৌশলী ক্ষুব্ধ হয়ে গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর বিধি বহির্ভূতভাবে তার লাইসেন্সটি স্থগিত ও সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য ইউএনর কাছে একটি লিখিত প্রতিবেদন দেন।
এ অবস্থায় সরোজমিনে তদন্ত করে উপসহকারী প্রকৌশলী হাসান মাহমুদের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিনি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
উপসহকারী প্রকৌশলী (সেচ) মো.হাসান মাহমুদ বলেন, বিধি মোতাবেক লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছে। কোনোরকম অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হচ্ছে না। গ্রাহক তারা মিয়া অগভীর নলকূপটি নির্ধারিত স্থান খেকে সরিয়ে নিয়ে শর্ত ভঙ্গ করায় তার লাইসেন্সটি স্থগিত ও সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য ইউএনও স্যারের কাছে প্রতিবেদন দিয়েছি।
ধর্মপাশার ইউনও মো.মুনতাসির হাসান বলেন, এ নিয়ে আদালতে মামলা চলমান থাকায় এ নিয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
বিএডিসির সুনামগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী (সেচ) হোসাইন মো.খালেদুজ্জামান বলেন, এ নিয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।