ছয় বীর মুক্তিযোদ্ধার ভাতা বন্ধ,অর্থকষ্টের মধ্যে দিনযাপন
মোবারক হোসাইন,ধর্মপাশা(সুনামগঞ্জ) বুধবার বিকেল ০৫:৪৪, ৬ জানুয়ারী, ২০২১
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলায় গত বছরের অক্টোবর মাস থেকে শুরু করে এখানকার ছয়জন বীর মুক্তিযোদ্ধার সম্মানী ভাতা ও গত ডিসেম্বরের বিজয় ভাতা প্রদান বন্ধ রয়েছে।
সম্মানী ভাতা ও বিজয় ভাতার টাকা না পেয়ে এই ছয়টি পরিবারের সদস্যদের চরম অর্থকষ্টের মধ্যে দিন যাপন করতে হচ্ছে। আকস্মিকভাবে ভাতা প্রদান বন্ধ থাকা বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমে (এমআইএস) বীর মুক্তিযোদ্ধা সমির চন্দ্র দাস ও অ্যাডভোকেট ইউনুস আলীর ডাটা এন্ট্রি না নেওয়ায় ওই দুজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সম্মানী ভাতা ও গত ডিসেম্বর মাসের বিজয় ভাতা বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া ২০১৬সালে বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিজ উদ্দিন,আকিকুর রেজা ভূঞা, মৃত ধনগাজী ও তমিজ উদ্দিন এই চারজনকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সন্দেহ পোষন করে এবং এই চারজনসহ সকল মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি। ২০১৯ সালের মাঝামাঝি সময়ে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে কারা কারা মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পাওয়া যোগ্য ও কারা অযোগ্য এবং কাদের ভাতা বন্ধ রাখতে হবে এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা উপজেলা যাচাই বাছাই কমিটির কাছে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো হয়। এরই নির্দেশনার আলোকে ওই চারজন মুক্তিযোদ্ধার সম্মানী ভাতা ও বিজয় ভাতার টাকা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আকিকুর রেজা ভূঞা বলেন, আমি ২০০৫সাল থেকে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা উত্তোলন করে আসছি। আমি ১১নম্বর সেক্টরের অধীনে তৎকালীন মহিষখলা ইয়থক্যাম্পের চেয়ারম্যান আব্দুল হেকিম চৌধুরীর অধীনে আমি মুক্তিযোদ্ধের সংগঠক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। উপজেলার দুগনই সংগ্রাম পরিষদ ও মধ্যনগর বাজার সংগ্রাম পরিষদ গঠন করেছি।
মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় আমার বেসরকারি গেজেট নম্বন ১৪৭০। দেশকে শত্রু মুক্ত করতে গিয়ে জীবন বাজি রেখে দায়িত্ব পালন করেছি। আমাকে কোনোরকম নোটিশ না দিয়ে আমার মুক্তিযোদ্ধা ভাতা বন্ধ রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ও রাষ্ট্রপতির কাছে লিখিত অভিযোগ পাঠিয়েছি। যারা বেআইনি ভাবে আমার মুক্তিযোদ্ধা ভাতা বন্ধ করেছে আমি তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করবো।
উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা গিয়াস উদ্দিন বলেন, বিধি অনুযায়ী ওই চারজন মুক্তিযোদ্ধার সম্মানী ভাতা ও বিজয় ভাতার টাকা প্রদান সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমে দুজন বীর মুক্তিযোদ্ধার ডাটা এন্ট্র্রি না নেওয়ায় অপর দুজন মুক্তিযোদ্ধারাও ভাতা পাচ্ছেন না। ওই দুজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সমস্যা সমাধানের সবরকম চেষ্টা চলছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও)মো.মুনতাসির হাসান বলেন, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী ওই চারজন মুক্তিযোদ্ধার সম্মানীভাতা ও বিজয় ভাতার টাকা প্রদান বন্ধ রাখা হয়েছে। আর এমআইএস সিস্টেমে ডাটা এন্ট্রি না নেওয়ায় অপর দুজন মুক্তিযোদ্ধাকেও ভাতা প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে এই দুজনের সমস্যা সমাধানের সর্বরকম চেষ্ঠা চলছে।