ঢাকা (বিকাল ৩:১৫) শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ ইং

গৌরীপুরে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধের কাজ সম্পন্ন না করেই বিল তুলে নিলেন ঠিকাদার

<script>” title=”<script>


<script>

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে উপজেলার শালীহর গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজরিত স্থান বধ্যভূমিতে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন না করেই বিল উত্তোলন করে নেয়ার অভিযোগ ওঠেছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। গত মাসে দায়সারাভাবে এই এ স্মৃতিসৌধের হস্তান্তরের চেষ্টা করেন ঠিকাদারের এক প্রতিনিধি।

এক্ষেত্রে কাজের মান খারাপ হওয়ায় ও কিছু কাজ অসম্পন্ন থাকায় এর দায়িত্ব বুঝে নেননি ইউএনও হাসান মারুফ। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে যথাযথাভাবে কাজটি সম্পন্ন করে হস্তান্তরের তাগিদ দেন তিনি।

এদিকে অসম্পন্ন কাজ সম্পন্ন না করেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে এ নির্মাণ কাজের বিল উত্তোলন করে নিয়ে গেছেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার। এ নিয়ে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে বর্তমানে চরম অসন্তোষ ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।

প্রসঙ্গত ময়মনসিংহ গণপূর্ত বিভাগের অধীনে ৭০ লাখ টাকা বরাদ্দে এ নির্মাণ কাজটি সম্প্রতি বাস্তবায়ন করে রাজধানীর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী কন্সট্রাকশন। এ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নির্মাণ কাজটি তড়িঘড়ি শেষ করে যথাযথভাবে সম্পন্ন না করেই ইউএনও’র নিকট হস্তান্তরের চেষ্টা চালায়। কিন্তু সেসময় এ নির্মাণকাজে নানা আপত্তি ওঠায় এর দায়িত্ব বুঝে নেননি ইউএনও। পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করেই বিল উত্তোলন করে নিয়ে যান সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার।

সরেজমিনে দেখা গেছে, এ স্মৃতিসৌধের সৌন্দর্যবর্ধন করা হয়নি। স্মৃতিসৌধের চারপাশে দেয়া হয়েছে বালু যা বৃষ্টির পানিতে সরে গিয়ে দেয়াল ধ্বসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। ঢালাই ও প্লাস্টার সঠিকভাবে করা হয়নি এবং রংসহ অন্যান্য কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হয়নি।

স্থানীয় কয়েকজন জানান, এ নির্মাণ কাজটিতে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে। ঢালাইয়ের কাজে কোন বাইভ্রেটর ব্যবহার করা হয়নি। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার এ নির্মাণ কাজের সাইনবোর্ড না টানিয়ে কাজ সম্পন্ন করায় এ প্রকল্পের বিষয়ে কোন তথ্য জানেনা তারা।

স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও অবসরপ্রাপ্ত প্রকৌশলী গিয়াস উদ্দিন জানান, সোমবার (২৮ জুন) বিকেলে এ স্মৃতিসৌধটি ইউএনও’র নিকট হস্তান্তরের কথা ছিল। কিন্তু পরিদর্শনকালে নির্মাণকাজের বিভিন্ন ত্রুটি দেখতে পেয়ে এর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব গ্রহন করেননি তিনি। এ সময় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে যথাযথভাবে কাজ সম্পন্ন করে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার তাগিদ দেন তিনি। এদিকে কাজটি যথাযথভাবে সম্পন্ন না করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে বিল উত্তোলন করে নিয়ে যাওয়ায় হতবাক হয়ে পড়েন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা। এ ঘটনায় তিনি সঠিক তদন্ত দাবি করেছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী কন্সট্রাকশনের প্রতিনিধি আজিম সাংবাদিকদের জানান, নির্মাণকাজ পুরোপুরি শেষ করেই উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে।

এ নির্মাণকাজের তদারকি কর্মকর্তা গণপূর্ত বিভাগ ময়মনসিংহের উপসহকারী প্রকৌশলী মোঃ আনার মিয়া জানান, এ নির্মাণকাজে আপত্তির বিষয়গুলো সমাধান করার পর বিল অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসান মারুফ জানান, এ স্মৃতিসৌধ নির্মাণকাজে যেসকল আপত্তি ছিল তা সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার করে দেয়ার পর হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য ৭১’র ২১ আগস্ট মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাক-হানাদার বাহিনী শালিহর গ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের খুঁজতে গিয়ে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করে বেশ কয়েকটি বাড়িতে। এসময় অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করে পাকহানাদার বাহিনী ক্ষান্ত হয়নি, এদিন এ গ্রামের ১৪ জন নিরীহ মানুষকে ধরে এনে শালিহর কদমতলা (বর্তমান বধ্যভূমি) নামক স্থানে ব্রাশফায়ার করে নির্মমভাবে হত্যা করে। পরে এখানেই তাদেরকে কবর দেয়া হয়। এরপর থেকে গৌরীপুরে স্থানীয়ভাবে এদিনটি গণহত্যা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

শেয়ার করুন

GloboTroop Icon
পাঠকের মতামত

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর




© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT