ঢাকা (বিকাল ৫:০৪) সোমবার, ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
শিরোনাম

Join Bangladesh Navy


ক্রেতা কম রাজধানীর ঈদ মার্কেটে

ঢাকা জেলা ২২৭২ বার পঠিত

ডেক্স রিপোর্ট ডেক্স রিপোর্ট Clock শুক্রবার রাত ১১:০৯, ৩০ এপ্রিল, ২০২১

বিক্রি কেমন হচ্ছে? প্রশ্ন শুনেই বেশ হতাশ হলেন আসিফ আহমেদ। ক্রেতাকে দেখানো শেষে পোশাক ভাঁজ করতে করতে বলেন, ‘মানুষ আসে, দেখে, চলে যায়।’ কিন্তু মার্কেট এলাকায় তো প্রচুর ভিড়। তাহলে বিক্রির এই হাল কেন? আসিফ বললেন, ‘ঈদের কেনাকাটার ভিড় যদি হতো, তাহলে এই ফুটওভারব্রিজে উঠতে আপনার ১০ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকা লাগত। এর চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি ভিড় হয়।’

রাজধানীর চাঁদনী চকের পাশের নূর ম্যানশনে এ আর কালেকশনের দোকানি আসিফ আহমেদের মতো সব বিক্রেতাই হতাশা প্রকাশ করলেন। তারা বলছেন, মানুষ আছে কিন্তু ক্রেতা কম। এবার ন্যূনতম ব্যবসা না হলে দোকান গুটিয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা হবে বলে জানান আসিফ আহমেদ। তিনি বলেন, ‘দোকানভাড়া তো বন্ধ হয় নাই। ঋণ করে চলছি। ঈদ সামনে রেখে মার্চ মাসে আবারও ঋণ নিছি মালামাল তোলার জন্য। কিন্তু লকডাউনের চক্করে সব শেষ।’

করোনা সংক্রমণের কারণে সরকারি নানা বিধিনিষেধের মধ্যে গত ২৫ এপ্রিল থেকে শপিং মল, দোকানপাট খুলে দেওয়া হয়। রোজার মধ্যে দোকানিদের জন্য আজ ছিল প্রথম শুক্রবার। অন্যান্য দিনের চেয়ে ভিড় তাই বেশি ছিল। নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী মো. হাসান আলী বলেন, প্রথম দুদিন দোকান খুলে বসে থাকতে হয়েছে। ক্রেতা খুব কম ছিল। আজ ছুটির দিনে কিছুটা ক্রেতার দেখা পেয়েছেন। হাসান আলী আরও বলেন, নিউমার্কেটের আসল যে ক্রেতা, তারা নিজেরাই আর্থিক টানাপোড়েনে আছেন। সেই ক্রেতা কমে গেছে। ১৭ রোজা পার হয়ে গেলেও জমছে না মার্কেট।

বিক্রেতারা বলছেন, ক্রেতা কম। কিন্তু নিউমার্কেট, চাঁদনী চক, গাউছিয়া এলাকায় মানুষের সমাগম দেখে মনে হবে, ঈদের বাজার জমে উঠেছে। যারা এসেছেন, তাদের কয়েকজনের সঙ্গে কথা হলো। মার্কেটের কী অবস্থা, কী ধরনের পণ্য এসেছে, তা দেখতে নতুবা খুচরা কিছু জিনিস কিনতে এসেছেন বেশির ভাগ মানুষ। আবার ঈদবাজারের ক্রেতাও আছেন।

মাহিনুর আক্তার বোনকে নিয়ে মোহাম্মদপুর থেকে এসেছেন শাড়ি কিনতে। গাউছিয়া, হকার্স মার্কেট, নিউমার্কেট ঘুরেছেন, কিন্তু মনঃপূত হচ্ছে না কিছু। এবার পছন্দ না হলে তিনি পরে আবারও আসবেন। মার্কেটে বারবার আসার বিষয়ে করোনা, স্বাস্থ্যবিধির কথা তুলতেই মাহিনুর বলেন, ‘জীবন তো আর থেমে থাকে না। এর মধ্যেই যতটুকু সাবধান হয়ে চলা যায়।’

গাউছিয়ার সামনের ফুটপাতের বিক্রেতা মো. শামীমের পণ্যের সামনে কয়েকজন ক্রেতা দরদাম করছেন। বাচ্চাদের পোশাক বিক্রেতা শামীম বলেন, ‘১০ জন দরদাম করলে কিনে ৩ জন। ভিড় দেইখা মনে করে, অনেক বেচাকেনা হয়। কিন্তু মানুষ কিনে কম।’

ফাতেমা বেগম ফুটপাতে কিছু জিনিস দেখছিলেন। তিনি বলেন, ‘ঈদে তো বসে থাকা যায় না। বাচ্চাকাচ্চা, আত্মীয়স্বজনের কাপড়চোপড় কিনতেই হয়। এর সাথে সংসারেরও টুকটাক জিনিস, যা এই ঈদেই কেনা হয়।’ ফাতেমা জানান, তিনি এক দিনেই সব কেনার চেষ্টা করবেন।

নানা বিধিনিষেধের মধ্যে অনেক কিছু চালু থাকলেও গণপরিবহন এখনো চালু হয়নি। বিপণিবিতানের বিক্রেতারা বলছেন, গণপরিবহন চালু না হওয়ায় ঈদবাজারে প্রভাব পড়েছে। বসুন্ধরা সিটি শপিং মলের ফ্যাশন জোনের বিক্রেতা সুশান্ত হালদার বলেন, ‘ঢাকার বাইরের অনেক ক্রেতা ঈদের কেনাকাটার জন্য ঢাকায় আসেন। গণপরিবহন চালু না থাকায় সেই ক্রেতাদের পাচ্ছি না। এ ছাড়া ঢাকারও দূরের কিছু ফিক্সড ক্রেতা এখানে আসেন, তাঁরাও আসতে পারছেন না।’

শুক্রবার বসুন্ধরা সিটিতেও বেশ ভিড় দেখা গেল। তবে এখানেও ক্রেতারা বিক্রি নিয়ে আশার কথা বললেন না। ইফতার করে অনেক ক্রেতা বিপণিবিতানে যান। সেই ক্রেতারা আসছেন না। বিক্রেতারা জানান, ইফতার, নামাজ শেষ করতে করতে সাতটা থেকে সোয়া সাতটা বেজে যায়। এদিকে আটটার সময় মার্কেট বন্ধ করে দিতে হয়। এই অল্প সময়ের জন্য ক্রেতারা এসে শান্তিতে কেনাকাটা করতে পারেন না। সবারই তোড়জোড় থাকে। মো. জসিম নামের একজন বিক্রেতা বললেন, ‘রোজার সময়ে অর্ধেক বেচাকেনা হয় ইফতারের পর। এবার তো তা–ও হচ্ছে না।’




শেয়ার করুন


পাঠকের মতামত

মেঘনা নিউজ-এ যোগ দিন

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর



© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT