ঢাকা (বিকাল ৫:৩৯) শুক্রবার, ১৭ই মে, ২০২৪ ইং

আফগানদের কাছে টাইগারদের হার



হতাশার ব্যাটিংয়ে ডুবিয়েছেন নাঈম-মুশফিকরা। বোলিংয়ে ছিল ভিন্ন চিত্র। অল্প পুঁজি নিয়েও বেশ লড়েছেন বোলাররা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দলকে উদ্ধার করতে পারেননি। এশিয়া কাপে নিজেদের প্রথম পরীক্ষায় আফগানিস্তানের কাছে ব্যর্থ হয়েছে সাকিব আল হাসানের দল।

এশিয়া কাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৭ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ। এর আগে প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও জিতেছিল আফগানিস্তান। এবার বাংলাদেশকে হারিয়ে প্রথম দল হিসেবে সুপার ফোর নিশ্চিত করল মোহাম্মদ নবির আফগানিস্তান।

মঙ্গলবার শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে স্কোরবোর্ডে ১২৭ রান তুলেছে বাংলাদেশ। জবাব দিতে নেমে ৯ বল হাতে রেখে জয় তুলে নেয় আফগানিস্তান।

বাংলাদেশের পুঁজি ছিল মাত্র ১২৮ রানের। এই পুঁজি নিয়েই বল হাতে দারুণ করলেন বোলাররা। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য এনে দেন সাকিব। বিদায় করেন আফগান ওপেনার রহমত উল্লাহ গুরবাজকে। ৬ রানে জীবন পাওয়া গুরবাজ করেন ১৮ বলে ১১ রান।

আফগান শিবিরে দ্বিতীয় আঘাত হানেন সৈকত। তিনি তুলে নেন জাজাইয়ের উইকেট। সৈকতের করা স্টাম্প সোজা বল সুইপ করার চেষ্টায় লাইন মিস করেন আফগান ওপেনার। বল গিয়ে লাগে তার প্যাডে। আবেদন তোলে বাংলাদেশ, আম্পায়ারও সাড়া দিতে দেরি করেননি। ২৬ বলে ২৩ করে আউট হলেন এই ওপেনার।

এরপর বোলিংয়ে এসেই নবিকে বিদায় করেন সাইফউদ্দিন। আফগান অধিনায়ক ফিরলেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ পেয়ে যায় বাংলাদেশ। কিন্তু শেষ দিকে ইব্রাহিম আর নাজিবউল্লাহ মিলে ফের বাংলাদেশকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেন। দুজনে মিলে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। নাজিবুল্লাহ করেন ১৭ বলে ৪৩ রান আর ইব্রাহিম করেন ৪১ বলে ৪২ রান।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশের দুই ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম কিংবা এনামুল হক বিজয় কেউই জ্বলে উঠতে পারেননি। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই বিদায় নেন নাঈম শেখ। মুজিব উর রহমানের বলে বোল্ড হন নাঈম। ৮ বলে ৬ রান করে বিদায় নেন ডানহাতি ওপেনার।

এর কিছুক্ষণ পরেই বিদায় নেন আরেক ওপেনার এনামুল। তিনিও কাটা পড়েন মুজিবের বলে। আফগান তারকার অফ স্টাম্পের বাইরে পিচ করা বল পুল করতে গিয়ে লাইন মিস করেন এনামুল। পরে রিভিউ নিয়ে তাকে সাজঘরের পথ দেখায় আফগানিস্তান। ১৪ বলে ৫ রান করে থামেন তিনি।

দুই ওপেনারকে হারানোর পর একটু আগ্রাসী শুরু করেন সাকিব। তাকেও থিতু হতে দিলেন না মুজিব। রাউন্ড দ্য উইকেটে বল করে সাকিবকে বিপদে ফেলে দেন তিনি। তার বল সাকিবকে ফাঁকি দিয়ে আঘাত হানে স্টাম্পে। ৯ বলে ১১ রানে আউট সাকিব।

পাওয়ার প্লেতে মোটেই পাওয়ার দেখা গেলো না এনামুল-সাকিবদের। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে বাংলাদেশ ৩ উইকেট হারিয়ে করে স্রেফ ২৮। চরম বিপর্যয়ে হাল ধরতে পারলেন না মুশফিকও। নিজের প্রথম ওভারে এসেই তাকে এলবির ফাঁদে ফেলেন রশিদ খান। আফগান তারকার বল মূলত ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন মুশফিক। তবে তার ডিফেন্সকে ফাঁকি দিয়ে বল ভেতরে ঢুকে স্পর্শ করে প্যাডে। ৪ বলে ১ রান করেই থেমে যান মুশফিক।

এরপর উইকেটে এসে থিতু হওয়ার আভাস দেন আফিফ হোসেন। কিন্তু পারলেন না ইনিংস বড় করতে। তিনিও পড়েন রশিদের এলবির ফাঁদে। ৫৩ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর শেষ দিকে সৈকতের ব্যাটে কোনো মতে ১২৭ রানের পুঁজি পায় বাংলাদেশ। সপ্তম উইকেটে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে ৩৬ রানের জুটি গড়েন তিনি। এরপর বাকিদের নিয়ে কোনো রকম মান বাঁচায় সাকিব আল হাসানের দল। ইনিংস শেষে ৩১ বলে ৪৮ রানে অপরাজিত ছিলেন সৈকত।

আফগানিস্তানের হয়ে বল হাতে ৪ ওভারে মাত্র ১৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন মুজিব উর রহমান। ২২রান খরচায় রশিদ খান নেন সমান তিনটি উইকেট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১২৭/৭ (নাঈম ৬, এনামুল ৫, সাকিব ১১, মুশফিক ১, আফিফ ১২, মাহমুদউল্লাহ ২৫, মোসাদ্দেক ৪৮*, মেহেদি ১৪, সাইফ ০*; ফারুকি ৪-০-২৫-০, মুজিব ৪-০-১৬-৩, নাভিন ৪-০-৩১-০, রশিদ ৪-০-২২-৩, নবি ৩-০-২৩-০, ওমরজাই ১-০-৭-০)।

আফগানিস্তান: ১৮.৩ ওভারে ১৩১/৩ (জাজাই ২৩, গুরবাজ ১১, ইব্রাহিম ৪২*, নবি ৮, নাজিবউল্লাহ ৪৩*; সাকিব ৪-০-১৩-১, মুস্তাফিজ ৩-০-৩০-০, মেহেদি ৪-০-২৬-০, তাসকিন ৩-০-২২-০, মোসাদ্দেক ২.৩-০-১২-১, সাইফ ২-০-২৭-১)।

ফল : ৭ উইকেটে জয়ী আফগানিস্তান।

শেয়ার করুন

GloboTroop Icon
পাঠকের মতামত

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর




© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT