ভারত যেনো এক বিরান ভূমি!
এইচএম দিদার,দাউদকান্দি,কুমিল্লা রবিবার বিকেল ০৫:৩২, ২ মে, ২০২১
বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশ ভারত। পরাশক্তি দেশ হিসেবেও ভারত বিশ্বে সমাদৃত। আধুনিক মারণাস্ত্র থেকে শুরু করে সবধরনের সমরসজ্জিত এই দেশ। করোনার ভয়াল থাবায় নাস্তানাবুদ ভারত। ভারত আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানেও অনেক অগ্রগতি লাভ করছে। কম খরচে ভালো মানের চিকিৎসা পাওয়া যায় ভারতে। অবশ্য এ কারণে ভারতে দক্ষিণ এশিয়া,মধ্য প্রাচ্যসহ অসংখ্য দেশের নাগরিকরা ভারতে ছুটে আসেন।
ইতিমধ্যে ভারতের চিকিৎসকরা বহিঃবিশ্বে রোগীদের মনে ভরসার বাতিঘর রুপে জায়গা করে নিয়েছেন। অথচ সেই ভারত আজ করোনার থাবায় নিস্তেজ। গোটা বিশ্বের মধ্য ভারত এখন এক অসহায় রাষ্ট্র। বৈশ্বির মহামারি করোনার তাণ্ডবলীলায় গোটা দুনিয়া স্থবির হয়ে গেছে। তবে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের আঘাতে ভারত এখন যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশের কাতারে দাঁড়িয়েছে।আজ সুনসান নিরব বিশাল জনগোষ্ঠীর দেশ ভারত। ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর একটি ভাইরাসের কাছে আজ ভারত অসহায় নিস্তব্ধ ও নিস্তেজ।
করোনার আঘাতে ভারতের রাজধানী দিল্লিসহ বিভিন্ন রাজ্যের অবস্থা খুবই ভয়াবহ। আতঙ্ক আর মৃত্যুপুরীর নগরী এখন একসময়কার জনাকীর্ণ ব্যস্ততম নগরী দিল্লি। চারোদিকে শুধু মৃত্যুর মিছিল। করোনা আক্রান্ত রোগীর গোঙানি আর এম্বুলেন্স এর সাইরেন,মৃতদের স্বজনের আহাজারিতে ভারতের আকাশ–বাতাস আজ ভারি হয়ে আছে। কী এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা চলছে দেশটিতে!
শুধু গতকাল(শনিবার) করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিলো সাড়ে চার লাখ। আর মৃতের সংখ্যাও সাড়ে তিন হাজারের মতো।
হাসপাতালের করিডোরে স্বজনরা কাঁদছে প্রিয়জনকে একটু অক্সিজেন দেওয়ার প্রচেষ্টায়। কোনো হাসপাতালে সিট খালি নাই। প্রচুর ঘাটতি অক্সিজেনের।
করোনা আক্রান্ত রোগীদের সেবা দিতে ভারত হিমশিম খাচ্ছে। গণামাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের কল্যাণে জানা যায়, ভারতের হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত সিট না থাকায় মসজিদগুলোকে অস্থায়ী হাসপাতাল করা হয়েছে। মন্দিরগুলোকে আইসোলেশন সেন্টার করা হয়েছে।
সব চেয়ে দু:খজনক বিষয় হলো– দেশটিতে যারা করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে বেশির ভাগই হিন্দু। হিন্দুরা মারা গেলে তাদের ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী দাহ করা হয়। চিতাও খালি নেই। আশপাশের খেলার মাঠঘাট এখন চিতায় পরিণত হয়েছে।
মৃত্য দেহটিকে দাহ করার জন্য প্রথমে মুখাগ্নি দিতে হয়। করোনার ভয়ে এই মুখাগ্নি দিতে কাছে আসছে না স্বজন বা কাছের কেউ। কিছু কিছু রাজ্যে মুসলিমরা মুখাগ্নি থেকে শুরু করে মৃত দেহটি দাহ করার মতো কাজটিও সম্পাদন করছে বলে জানা যায়।
সব শেষে যে উদ্বেগজনক বিষয়টি হৃদয়ে আঘাত করলো তা হলো এখন করোনা আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা গেলে লাড়কির অভাবে দাহ করতে পারছে না স্বয়ং সম্পূর্ণ বিশাল দেশটির মানুষ।
এই যদি হয় ভারতের অবস্থা? আমাদের কী উপায় হবে? তাই ইংরেজিতে একটি কথা আছে,prevention is better than cure”অর্থাৎ রোগে চিকিৎসার আগে প্রতিরোধ ভালো।
যে কোনো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আগে যদি শতর্ক থাকা যায়।সাবধানতা অবলম্বন করে চলা যায় তা হলে রোগ থেকে বাঁচা যায়।
ভারতের বর্তমান এই অবস্থা আমাদের দেশের জন্য পূর্বাভাস। যদি আমাদের করোনা মোকাবেলা করতে হয় তাহলে ভারত থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়া জরুরি। ভারতে যে ভুল করেছে,আমরা সেই ভুল বা সেই পথে হাটা যাবে না।
আসুন শতর্ক হই।সাবধানে থাকি। শপিংমল আপাদত বয়কট করি। আপনি বেঁচে থাকলে অনেক শপিং করতে পারবেন। আর যদি শপিং করেই যদি মারা যান তাহলে সেই শপিং এর মূল্য কী?