ঢাকা (রাত ৮:২৫) বুধবার, ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং

সুনুই জলমহাল হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেফতার ৩

<script>” title=”<script>


<script>

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলায় শ্যামাচরণ বর্মণ (৬৫) নামের এক মৎস্যজীবীকে গলা কেটে হত্যা,জলমহালে অগ্নিসংযোগ ও হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে উপজেলার বেখইজোড়া গ্রামের জোয়াদ মিয়া (৫২), রনি খান (৩৮) ও  বীর দক্ষিণ পশ্চিমপাড়া গ্রামের তানিন চৌধুরী (২৪)কে করেছে সুনামগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সহায়তায় গ্রেপ্তার করেছে ধর্মপাশা থানা পুলিশ।

আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে বিকেল পাঁচটার মধ্যে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। গত বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে সুনই জলমহালে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ঘটনার দিন রাতেই ২৩জনকে আটক করে থানা পুলিশ। কিন্তু এদের মধ্যে অপ্রাপ্ত হওয়ায় দুজনকে  ছেড়ে দিয়ে ২১জনকে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

উপজেলা প্রশাসন, থানা পুলিশ ও এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়নের মনাই নদী প্রকাশিত সুনই জলমহালটি জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনাধীন। ১৪২২ বঙ্গাব্দ থেকে ১৪২৭ বঙ্গাব্দ পর্যন্ত ছয় বছরের জন্য এটি ইজারা পায় সুনই মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেড। সমিতির সভাপতি চন্দন বর্মণ যথারীতি জলমহালটির খাজনা পরিশোধ করেন। তিনি তাঁদের সমিতির সদস্যদের বসবাস ও অন্যান্য কাজের জন্য জলমহালের পাড়ে খলাঘরসহ চারটি ঘর নির্মাণ করেন। একই সমিতির সভাপতি দাবি করে স্থানীয় সাংসদ মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের ছোট ভাই ধর্মপাশা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান চেয়ারমান মোজাম্মেল হোসেন রোকনের অনুসারী সুবল বর্মন (৩০) নিজেকে সভাপতি দাবি করে ১৪২৭ বঙ্গাব্দের খাজনা সরকারি কোষাগারে জমা দেন। তিনমাস আগে তিনি তাঁর লোকজন নিয়ে জলমহালটির পাড়ে দুটি ঘর নির্মাণ করেন। জলমহালটি নিয়ে একই সমিতির দুটি পক্ষের উচ্চ আদালতে মামলা থাকায় আদালতের আদেশে এটিতে স্থিতিবস্থা রয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে উপজেলা পরিষদ  চেযারম্যানের অনুসারীরা সংঘব্ধভাবে জলমহালটিতে হামলা চালিয়ে একটি খলাঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় সেখানে থাকা ১৫-২০মণ জাল আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়াসহ চন্দনের সমিতির ১৫-২০ জনকে মারধর করা হয়। এতে বাধা দিলে সুনই মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সদস্য ও সমিতির সভাপতি চন্দন বর্মণের বাবা শ্যমাচরণ বর্মণ (৬৫)কে গলা কেটে হত্যা করা হয়।

এ ঘটনায় ওই রাতে ধরমপাশা থানা পুলিশ সন্দেহজনক ২৩ জনকে আটক করেন। পরদিন শুক্রবার সন্ধ্যায় তাদেরকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সুনই মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি চন্দন বর্মণের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে সমিতির সহসভাপতি নিহত শ্যামাচরণ বর্মণের ছোট ভাই মনীন্দ্র চন্দ্র বর্মণ (৫৫) বলেন, আমার ভাইকে হত্যা,খলায় অগ্নিসংযোগ,হামলা ও মারধরের ঘটনায় গত শনিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে এমপি (সাংসদ) রতন ও তাঁর ছোট ভাই রোকনসহ ৬৩জনকে আসামি করে থানায় একটি এজহার দেওয়া হয়েছিল।কিন্তু ওসি আমাদেরকে বলেছিলেন, এমপির নাম বাদ দেন, মামলা নেব। পরে আমরা অভিযোগটি নিয়ে চলে এসেছি। আমাদের এজহারটি মামলা হিসেবে না নিয়ে রোববার রাতে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটিকে অন্যদিকে প্রবাহিত করার জন্য মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে থানা পুলিশ বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেছে। আমরা থানায় মামলা করতে ব্যর্থ হয়ে পুলিশ সুপারের কাছে সমিতির পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে।

স্থানীয় সাংসদ মোয়াজ্জেম হোসেন ওরফে রতন বলেছেন, আমি ঘটনার দিন ধর্মপাশায় ছিলাম না। এটি এলাকাবাসী ছাড়াও  সুনামগঞ্জের অনেকেই জানেন। রাজনৈতিক প্রতিহিংসাবশত একটি পক্ষ ফায়দা নেওয়ার জন্য এতে আমাকে জড়ানোর অপচেষ্টা করছে। আমি শুধু একজন সাংসদ হিসেবে নয়,সাধারণ জনগণ হিসেবে আমারও দাবি এই ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের খোঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হোক। যারা এই ঘটনায় জড়িত ছিল না তাঁরা যেন কোনো অবস্থাতেই কোনোরকম হয়রানির শিকার না হয় সেই বিষয়টিকেও বিশেষ ভাবে গুরুত্ব দিতে হবে।

ধর্মপাশা থানার ওসি মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, এ ঘটনায় রোববার রাতে থানার এসআই আরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে ৬০-৬৫জনকে অজ্ঞাত আসামি করে থানায় একটি মামলা করেছেন। এই মামলায় বুধবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে করেছে ডিবির সহায়তায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশের করা মামলায় ওই তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখানে হয়েছে। এ ছাড়া শুক্রবার রাতে যে ২১ জনকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে তাঁদের মধ্যে চারজনকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

গত শনিবার চন্দন বর্মন যে অভিযোগটি আমার কাছে দিয়েছিলেন তাতে বেশ কিছু ভুল রয়েছে বলে সেটি আমার কাছ থেকে  চন্দন বর্মন  ও তার লোকজন নিয়ে গিয়েছিলেন। এখন আমার নামে মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। গ্রেপ্তার হওয়া তিনজনকে বৃহস্পতিবার সকালে আদালতে পাঠানো হবে।

শেয়ার করুন

GloboTroop Icon
পাঠকের মতামত

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর




© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT