ঢাকা (সন্ধ্যা ৭:১৪) বৃহস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং

লাহাগড়ায় ইউপি চেয়ারম্যান পলাশ হত্যার তিনদিনেও মামলা হয়নি

নড়াইলের লোহাগড়ার দিঘলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা শেখ লতিফুর রহমান পলাশের হত্যাস্থল। বামপার্শ্বে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বাসার সীমানা দেওয়াল এবং ডান পার্শ্বে পরিসংখ্যান অফিসের দেওয়াল।



নড়াইলের লোহাগড়ার দিঘলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা শেখ লতিফুর রহমান পলাশের হত্যাস্থল। বামপার্শ্বে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বাসার সীমানা দেওয়াল এবং ডান পার্শ্বে পরিসংখ্যান অফিসের দেওয়াল।

এসকে,এমডি ইকবাল হাসান,নড়াইল প্রতিনিধি:
নড়াইলের লোহাগড়ার দিঘলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা শেখ লতিফুর রহমান পলাশ(৫২) কে প্রকাশ্য দিবালোকে উপজেলা পরিষদ চত্বরে হত্যার পর তিনদিন অতিবাহিত হলেও শনিবার রাত ৮টা পর্যন্ত মামলা দায়ের করা হয়নি। হত্যাকান্ডের ঘটনায় সন্দেহভাজন চারজনকে শনিবার দুপুরে ৫৪ ধারায় আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। শুক্রবার জানাজা শেষে নিহতের লাশ কুমড়ি গ্রামে দাফন করা হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ৪০ এর দিকে উপজেলা পরিষদের পরিসংখ্যান অফিসের পাশে রাস্তার মোড়ে শেখ লতিফুর রহমান পলাশ কে গুলি করে এবং কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ঘটনার পর লোহাগড়া থানা পুলিশ সন্দেহভাজন চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। আটককৃতরা হলেন দিঘলিয়া ইউপি মেম্বর বাটিকা বাড়ি গ্রামের মহিউদ্দিন কাজীর ছেলে (হত্যাকান্ডের সময় চেয়ারম্যানের সাথে থাকা মোটরসাইকেল আরোহী) ফরিদ আহম্মেদ বুলু কাজী(৪৭), কুমড়ি গ্রামের মৃত ছালাম শরীফের ছেলে বাকি বিল্লাহ(৩৭), কুমড়ি গ্রামের সোহেল খানের স্ত্রী রিজিয়া সুলতানা, লোহাগড়া পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের রাজুপুর গ্রামের সাত্তার শেখের ছেলে মিরান শেখ(২৫)। আটককৃতদের শনিবার দুপুরে ৫৪ ধারায় আদালতে প্রেরণ করেছে লোহাগড়া থানা পুলিশ। আদালত ওই চারজনকে কারাগারে প্রেরণ করেছে।
বিভিন্ন সূত্র জানায়, কুমড়ি গ্রামে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দুটি পক্ষের মধ্য বিরোধ চলছিল। এর আগেও দুর্বৃত্তরা চেয়ারম্যানকে কয়েকদফায় হত্যার পরিকল্পনা করে ব্যর্থ হয়। গত ৩/৪ মাস আগে লক্ষীপাশাস্থ একটি আবাসিক হোটেল থেকে ৩/৪জন অজ্ঞাতদের গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আটক করে পুলিশ। ওই অজ্ঞাতরা চেয়ারম্যান শেখ লতিফুর রহমান পলাশ কে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল বলে তখন চেয়ারম্যান নিজেই লোহাগড়া থানা পুলিশ ও স্থানীয়দের অবহিত করেছিলেন। চেয়ারম্যানের লাইসেন্সকৃত অস্ত্র শর্টগান থাকলেও সে অস্ত্র দীর্ঘদিন ধরে পুলিশ হেফাজতে থাকায় খুনিরা নিশ্চিন্ত সুযোগ পায়। কুমড়ি গ্রামের দ্বন্ধই এ হত্যাকান্ডের বড় কারণ হতে পারে বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা ও নিহতের পরিবার।
নিহত চেয়ারম্যানের ভাই সাইফুর রহমান হিলু অভিযোগ করেন, কুমড়ি গ্রামের প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসী ও এলাকার চিহ্নিত চাঁদাবাজ,সন্ত্রাসীদের অপকর্মের প্রতিবাদ করায় সন্ত্রাসীরা আগেই শেখ লতিফুর রহমান পলাশকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিল। তারাই পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। নিহত লতিফুর রহমান পলাশ কুমড়ি গ্রামের মৃত গোলাম রসুল শেখের ছেলে।
সূত্র জানায়, প্রকাশ্য দিবালোকে এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় লোহাগড়া শহরে এখনো আতংক কাটেনি। সন্ধ্যার পর বাজার এলাকায় লোকজনের উপস্থিতি কমেছে। রাস্তাঘাট ফাঁকা ফাঁকা। যুবক বয়সী এবং সচারাচর অপরিচিত ভাড়াটে কিলাররা পরিকল্পিকভাবে এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে এমনটিই ভাবছেন স্থানীয়রা। গ্রামের আধিপত্যের দ্বন্ধেই এ হত্যাকান্ড ঘটেছে বলেই ধারণা করছেন এলাকার মানুষজন। হত্যাকান্ডের সময় চেয়ারম্যানের সাথে থাকা সহযোগি ইউপি মেম্বর ফরিদ আহম্মেদ বুলু কাজী হত্যাকান্ডে অংশ নেয়া কিলারদের চিনতে পেরেছেন কিনা তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে, তিনি বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
বাজার এলাকার কয়েকটি সূত্র জানায়, হত্যাকান্ডের বেশ আগে চায়ের দোকানগুলিতে ও উপজেলা পরিষদ গেটের আশপাশে কুমড়ি এলাকার বেশ কয়েকজন অপরিচিতি যুবকদের উপস্থিতি ছিল। তবে, মূল হত্যাকান্ড পেশাদার সচারাচার অপরিচিত কিলারদের দিয়েই করা হয়েছে এমনটিই ধারণা সকলের। তবে, স্থানীয়রা ধারণা করছে ঘটনাস্থলের আশপাশে কিলারদের পর্যাপ্ত সহযোগি ও সোর্সরা ছিল। হত্যাকান্ডের পর সম্ভাব্য দুর্বৃত্তরা বা সন্দেহভাজন অনেকেই এলাকা ত্যাগ করেছে। মামলায় আসামি কাদের দেয়া হচ্ছে তা স্পষ্ট নয় তবে, হত্যাকান্ডের বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে কিনা তা নিয়েও ভাবছেন এলাকার লোকজন। লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচর্জা মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, মামলার প্রস্তুতি চলছে। সন্দেহভাজনদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

শেয়ার করুন

GloboTroop Icon
পাঠকের মতামত

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর




© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT